Bangladesh: মোকার জেরে গ্যাস- বিদ্যুৎ সঙ্কট! বাংলাদেশ কবে রেহাই পাবে সমস্যার থেকে?

।। প্রথম কলকাতা ।।

Bangladesh: মোকার জেরে বাংলাদেশে তীব্র বিদ্যুৎ-গ্যাসসংকট। আশঙ্কা সত্যি হবে জানা ছিল। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেই কেন এলএনজি আর বিদ্যুৎ নিয়ে হাহাকার পড়ে যায় দেশটায়? ১টা সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার টাকায়। এলএনজি নিয়ে বড় প্রজেক্ট আসছে বাংলাদেশে তখন কি মিটবে সঙ্কট? যতটা আশঙ্কা করা হয়েছিল ক্ষয়ক্ষতি তার থেকে অনেক কম৷ কিন্তু চট্টগ্রাম-কুমিল্লায় তীব্র গ্যাস সংকটে ভুগছে মানুষ আর এটাই হল গ্রাউন্ড ফ্যাক্ট। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমদানি করা এলএনজি যাচ্ছে কোথায়? মহেশখালীর ভাসমান দুই প্রাকৃতিক গ্যাস টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ। কিন্তু গ্যাস সংকটের কি শুধু এটাই কারণ? সরকারের আগাম কি পরিকল্পনা রয়েছে?

ঢাকার মিরপুর, ধনিয়া, যাত্রাবাড়ী, কাজলাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সংকটের কথাও জানিয়ে মাইকিং করা হয়েছে। সবথেকে বড় প্রশ্ন এমন করে আর কতদিন চলবে? বিকল্প কোনও উপায় কি নেই সরকারের কাছে?
বাংলাদেশ এলএনজি আমদানি করে কোথা থেকে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন ২০১৮ সালের শেষে দিকে সরকার যখন এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় তখন দেশের জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা এর প্রতিবাদ করেছিলেন। কারণ এলএনজির দাম প্রায়ই আন্তর্জাতিক বাজারে ওঠানামা করে। বর্তমান অবস্থা চট্টগ্রামে সিলিন্ডারপ্রতি ১৫০০ থেকে ২০০০ বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। সংকট থাকবে খবর ছড়িয়ে পড়তেই। একটি ১২ কেজি ওজনের গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার টাকায়। এমনটাই বলছে বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে। ঘূর্ণিঝড় সিডর হোক বা সিত্রাং আর এবার মরার ওপর খাঁড়ার ঘা মোকা। বারবার মাথাচারা দিয়ে ওঠে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক গ্যাসের সংকট। আর গ্যাসের জন্য হাহাকার মানে তার এফেক্ট বিদ্যুতের ওপর তো পড়বেই। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের মে মাসের হিসাব মতে এখন দেশে দৈনিক ১১,৭০০ মেগাওয়াট থেকে ১৩,৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। এসব বিদ্যুতের প্রায় ৪৯ শতাংশই আসে বিভিন্ন গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে। গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়ায় শিল্প কারখানার পাশাপাশি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপাদনেও চাপ। তবে গ্যাস সরবরাহ বাড়াতে ইতিমধ্যে পেট্রোবাংলার সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাজার থেকে এলএনজি আমদানি করে ২৫ শতাংশেরও বেশি চাহিদা পূরণ করে। স্পট মার্কেট হতে ৩০ এপ্রিল ২০২৩ পর্যন্ত সর্বমোট ৩৪ টি কার্গো এলএনজি আমদানি করা হয়েছে। আমদানি করা এসব এলএনজি মূল ভূখণ্ডে নিয়ে আসার জন্য মহেশখালীর অদূরে দুটি ভাসমান টার্মিনাল স্থাপন করা আছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের আসার আগে পূর্বাভাস বুঝে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির দাবি এলএনজির সরবরাহ বন্ধ হওয়ার কারণে জাতীয় গ্রিডে দৈনিক প্রায় সাড়ে ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস কমে গেছে। এলএনজি থেকে তিতাস ৩৫০ থেকে ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পেত যা এখন কমে গেছে। এটাই বর্তমান গ্যাস সংকটের কারণ। ২৩ মার্চ প্রথম আলোর রিপোর্ট বলছে বাংলাদেশ সরকার তিনটি নতুন এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করবে এর মধ্যে একটা হবে পায়রার। এছাড়াও এলএনজি আমদানির উৎস বাড়াতে কাজ করছে সরকার। কিন্তু তার সুফল কবে বাংলাদেশবাসী হাতেনাতে পাবে তা কারোর জানা নেই।

চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা অঞ্চলের গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। ফলে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে বিদ্যুতের উৎপাদন কমতে থাকে। মোট কথা, গ্যাসের চাপ স্বাভাবিক না হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়বে না। পিডিবির সদস্য এস এম ওয়াজেদ আলী সরদার জানান তাই উৎপাদন বাড়াতে আরও একটু সময় লাগবে। অনেক বিশেষজ্ঞই বিশ্বাস করেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ব-দ্বীপ বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ অনাবিষ্কৃত গ্যাসসম্পদ আছে। তবে দেশের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ গ্যাসসম্পদ এখনো অনুসন্ধান করা হয়নি। অনুসন্ধানের থেকে বেশি আমদানির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন মহলের মতে হয়ত তাই গ্যাস- বিদ্যুত নিয়ে আজও স্ট্রাগল করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। তবে সুদিন যে একদিন আসবে সেই বিশ্বাস রাখেন অনেকেই৷

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version