Bangladesh: বাংলাদেশীদের জীবনে মধ্যপ্রাচ্যের বিভীষিকা! কী ঘটছে ওখানে ? জানলে আঁতকে উঠবেন

।। প্রথম কলকাতা ।।

Bangladesh: বাংলাদেশীদের জীবনে দিনে দিনে মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে উঠছে ‘মধ্যপ্রাচ্য’? লাইফ রিস্ক বাড়ছে, প্রবাসী বাংলাদেশীদের সঙ্গে কী ঘটছে ওখানে? কোন খতরনাক সিস্টেমের চক্রে পড়ে ফেঁসে যায় বাংলাদেশীরা? শুনলে-জানলে আঁতকে উঠবেন মধ্যপ্রাচ্যে প্রবাসী কর্মীদের মৃত্যুর কারণ ঘিরে ঘনাচ্ছে রহস্য। রীতিমতো বিভীষিকাময় পরিস্থিতি। জলটুকু জোটে কি? প্রকৃতি ও ছেড়ে কথা বলে না। জানেন তারপরও কীসের টানে বাংলাদেশিরা মধ্যপ্রাচ্যে ছুটে যায়? বাংলাদেশ টু মধ্যপ্রাচ্য, কোন মোহে বাড়ছে কানেকশন? বিপন্ন হচ্ছে এতো এতো জীবন?বাংলাদেশীদের সাধের মধ্যপ্রাচ্য। যে মধ্যপ্রাচ্যের ছটা দেশে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে বছরে ১০ হাজার প্রবাসীর মৃত্যু হয়। অথচ তাঁদের প্রতি দুজনের মধ্যে একজনের মৃত্যুর কারণ ব্যাখ্যা করা হয় না।

তারপরেও মধ্যপ্রাচ্য যেন বাংলাদেশীদের কাছে এক বিরাট মোহ, আকর্ষণ কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়ার পরের অভিজ্ঞতাটা শুনলে গায়ে কাঁটা দেবে। অধিকাংশ জন বিদেশে যায় দালালের মাধ্যমে। কিন্তু, যাওয়ার পর তাঁরা আর কোনো সাহায্য পায়না। তখন বাধ্য হয়েই মধ্যপ্রাচ্যের ওই অসহ্য গরমে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে প্রবাসীরা জীবন কাটাতে বাধ্য হয়। মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশি শ্রমিকদের বড় অংশ কাজ করে অবকাঠামো নির্মাণ খাতে। দিনের বেলায় প্রচণ্ড তাপের মধ্যে তাঁদের কাজ করতে হয়! ফলে শুধু কিডনি নয়, মস্তিষ্ক থেকে শুরু করে শরীরের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আজীবন চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। তখনই অকালমৃত্যু ঘটে, অক্ষমতা তৈরি হয়। শ্বাসতন্ত্র, হৃদরোগ, বহুমূত্র রোগ, কিডনি সংক্রান্ত রোগের প্রভাব বাড়ে। এটা স্পষ্ট যে এসব দেশে জলবায়ু পরিবর্তনের এফেক্ট পড়ে সাঙ্ঘাতিক। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে প্রবাসীদের মৃত্যুঝুঁকি ও বেড়েই চলেছে। তাছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে প্রবাসী কর্মীদের চিকিৎসা সুবিধা পাওয়ার অধিকারটাই নিশ্চিত হয়নি।

শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত হয়নি অনেকেই বলেন, মারা যাওয়ার পর লেখা থাকে হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু হচ্ছে। এটা কিন্তু মৃত্যুর কারণ নয়। এর পেছনে নানা কারণ থাকতে পারে। কিন্তু সেই কারণ মধ্যপ্রাচ্যে বলা হচ্ছে না। তারপরেও কাজ আর অর্থ উপার্জন, এর তাগিদে মধ্যপ্রাচ্যে প্রতি বছর ছুটে যাচ্ছে এত এত বাংলাদেশী। যেখানে কিনা জীবনের নিরাপত্তাটুকু নেই।মধ্যপ্রাচ্যে তো জলের দামটাও বেশি। তাই কর্মীরা জল কম খান! আবার কাজের চাপে হয়তো সময়ও পান না, কিন্তু রোদে তাপে প্রচুর ঘাম হয়। এতে শরীরে জলের ঘাটতি তৈরি হয়, কিডনিতে পাথর হওয়ার প্রবণতা বাড়ে।আবার নিয়মিত প্রস্রাব না করায় ইনফেকশন হয়। জানা যায়, উপসাগরীয় অঞ্চল দীর্ঘ সময় ধরে উত্তপ্ত থাকে। আর তার ফলেই এতো কাণ্ড। না এখানেই শেষ নয়।জানেন নারী কর্মীদের সঙ্গে কি ঘটে? তাঁরা মানসিক চাপ নিয়েই যান। তাঁদের কর্মস্থলে থাকার জায়গা ভালো নয়, পুষ্টিকর খাবার পান না।

এই কর্মীদের আবাসন, পুষ্টিকর খাবার, স্বাস্থ্যবিমার সুবিধা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। অভিবাসন খাতের বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠার রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট মানে রামরুর প্রতিবেদনে। যেখানে বলা হয়েছে, লাখো প্রবাসী কর্মী মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে, তাই তাদের সুরক্ষায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রবাসী শ্রমিকদের মৃত্যুর তদন্ত প্রক্রিয়া উন্নত করতে হবে। মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করা দরকার। তাপ থেকে সুরক্ষার জন্য আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানাতে হবে। সিস্টেম বদলাবে কিনা ভবিষ্যতে, কেউ জানে না। কিন্তু তারপরেও মধ্যপ্রাচ্যে পাড়ি দেওয়ার ট্রেন্ড থেকে বেরোতে পারছে না বাংলাদেশ। যেহেতু বাংলাদেশ থেকে পাড়ি দেওয়া অভিবাসী কর্মীদের বড় অংশই মধ্যপ্রাচ্য কেন্দ্রিক, তাই সৌদি আরব সহ মধ্যপ্রাচ্যের রুটগুলোতেও ফ্লাইট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস।

অব্যাহত যাত্রী চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি রুটে ফ্লাইট সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। ১৯৭৬ সালে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ওমান, কাতার, বাহরাইন, অলিভিয়ায় ৬০৮৭ জনকে পাঠানোর মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রবাসী কর্মসংস্থানের জার্নিটা শুরু হয়েছিল। ওই সময় থেকেই ওপার বাংলার প্রবাসী আয়ের প্রধান অঞ্চল হিসেবে ধরা হয় মধ্যপ্রাচ্য কে দীর্ঘ সময় পরেও পুরো ছবিটা বদলায় নি এতটুকু। যা সময়ের সাথে সাথে বাংলাদেশীদের জন্য লাইফ রিস্ক হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version