Bangladesh: ইংরেজিতে ভ্লগ বানানোর মাঝেই করছেন কৃষিকাজ! দয়াল চন্দ্র লক্ষ লক্ষ যুবকের অনুপ্রেরণা

।। প্রথম কলকাতা ।।

Bangladesh: সবুজে ঘেরা গ্রাম। তার মাঝে কৃষি জমিতে এক যুবক কখনো বা পাওয়ার টিলার চালাচ্ছেন, আবার কখনো বা ফসল কেটে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। কাজের ব্যস্ততার মাঝেই অনর্গল কথা বলছেন ইংরেজিতে। তার সেই ভিডিও দেখে অনুপ্রাণিত বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ যুবক। সাম্প্রতিক সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলাদেশের এই যুবকের ভিডিও বেশ জনপ্রিয়। তিনি অনায়াসে কৃষিকাজ করতে করতে ইংরেজিতে ভ্লগ বানিয়ে ফেলেন। ফেসবুকে এই যুবকের ফলোয়ার সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষের বেশি। ইনি হলেন পঞ্চগড় (Panchagarh) জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের মধ্যবিত্ত কৃষকের ছেলে দয়াল চন্দ্র বর্মন।

দয়াল চন্দ্রের (Dayal Chandra) মুখে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ইংরেজি শুনলে আপনি চমকে যাবেন। তিনি কিন্তু কোন নামি স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা করেননি। উপরন্তু কলেজের প্রথম বর্ষেই ড্রপ আউট হয়ে যান। তারপর কেটে যায় প্রায় দুই বছর। ডুবে গিয়েছিলেন ডিপ্রেশনে। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০২২ সালে এইচএসসিতে অংশগ্রহণ করেন। বাবা পুলিন চন্দ্র বর্মনের ইচ্ছে ছিল ছেলে ইংরেজিতে খুব সুন্দর করে কথা বলতে পারবে। ছেলে বড় চিকিৎসক বা বড় চাকরিজীবী হোক এমন স্বপ্ন দেখেননি, তার প্রত্যাশা ছিল অত্যন্ত সহজ সরল। মাঠে ফসল বোনার পাশাপাশি কৃষক বাবা তার ছেলের মনে নিখাদ স্বপ্নের জাল বুনে দিয়েছেন।

দয়ালের বানানো অধিকাংশ ভিডিও অনুপ্রেরণামূলক। তিনি মূলত বর্তমান প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করতে চান, যাতে তারা অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ায়। তিনি মজার ছলে ইংরেজি শেখান। যাত্রা শুরু করেছিলেন একেবারে শূন্য থেকে। তখন সামনে ছিল অনিশ্চয়তা, ভয়াবহতা। সেইসব কাটিয়ে উন্মুক্ত আকাশে তিনি মেলে দিয়েছেন স্বপ্নের ডানা। দয়াল চন্দ্রের ইংরেজি দক্ষতা, সঠিক উচ্চারণ শুনে মুগ্ধ হয়ে যাবেন। এই ভাবে ভ্লগ বানানোর কাজ তিনি নিজে নিজেই শুরু করেছিলেন। শুরুটা তাকে কেউ বলে দেয়নি। করোনা কালে প্রায় দুই বছর হতাশায় কাটানোর পর, তিনি নতুন ভাবে ভাবতে শুরু করেছেন। তারপর নিজেই ঘুরে দাঁড়ান, চ্যালেঞ্জ জানান খারাপ পরিস্থিতিকে।

ঘরবন্দি থেকেও কিভাবে আত্মবিশ্বাস বাড়ানো যায় সেই সংক্রান্ত নানান ভিডিও তিনি ইউটিউবে আপলোড করতে থাকেন। তার বানানো বেশিরভাগ ভিডিওর মাধ্যম ইংরেজি ভাষা। একদিকে বাবার ইচ্ছা পূরণের তাগিদ, অপরদিকে নিজের আগ্রহ। এই দুইয়ের মিলেমিশে তিনি ভিডিও দেখে দেখে নিজেই ইংরেজি বলার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি নিজেই নিজের ভুলগুলি শুধরে নিতেন। উচ্চারণ আর বলার ধরনের পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বেশি বেশি করে ইংরেজি ভিডিও দেখতেন এবং শুনতেন। তার বানানো একের পর এক ভিডিও জনপ্রিয় হতে থাকে। পুরস্কার হিসেবে পান অনুপ্রেরণা। বাংলাদেশের স্পোকেন ইংলিশ চ্যালেঞ্জের একটি প্রতিযোগিতায় প্রায় হাজারো প্রতিযোগীর মধ্যেই তিনি প্রথম হন। দয়ালের মতে “আমি যদি করতে পারি, আপনারাও অবশ্যই করতে পারবেন”। তিনি যে ইংরেজিতে কথা বলেন এটি বড় বিষয় না, তিনি যে করতে পেরেছেন এটিই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ইংরেজি শিক্ষাটা খুব একটা কঠিন বিষয় নয়। আসলে অনেকে আগ্রহ আর আত্মবিশ্বাসের অভাবে ইংরেজির সঙ্গে ভাব জমাতে পারেন না। আর তাদের অনুপ্রেরণা হয়েছেন দয়াল চন্দ্র বর্মন।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version