Economic Corridor: মধ্যপ্রাচ্যে জ্যাকপট! হীরের খনি ? যুদ্ধ নয়, অঙ্ক বদলে দিচ্ছে সোনার পাথড়বাটি

।। প্রথম কলকাতা ।।

Economic Corridor: তেল-গ্যাসের উপর থরেথরে সাজানো হীরে? মধ্যপ্রাচ্যের মাটির নীচে ঠাসা চোখধাঁধানো সম্পদ। উড়ছে টাকা, আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ সৌদি -ইরানের হাতে? ইন্টারনেট স্মার্টফোন ঘিরে তৈরি হচ্ছে রহস্যময় গোলকধাঁধা। আকাশ ছোঁয়া স্বপ্নের শুরু, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে জ্যাকপটের হদিস? যুদ্ধ নয়, কিভাবে সমীকরণ বদলে দিচ্ছে এই “সোনার পাথড়বাটি”। তেল আর গ্যাস’ই মধ্যপ্রাচ্যের অ্যাসেট। কিন্তু সেই চেনা হিসাব কি তলে তলে বদলে যাচ্ছে? বিশ্বের মোট তেলের ৫২ শতাংশ, আর প্রাকৃতিক গ্যাসের ৪৩ শতাংশ রয়েছে ওই অঞ্চলে। যে গুপ্তধনে ভর করে মধ্যপ্রাচ্যের ইকোনমিতে এসেছে সোনার দিন। সেই তেল বাণিজ্যের মূল পাওয়ার সৌদি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতারের মতো দেশ জ্বালানি তেল, গ্যাস ছেড়ে অন্যান্য খাতে অর্থনৈতিক উন্নয়নের চেষ্টা চালাচ্ছে। পর্যটন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, প্রযুক্তিতে মন দিয়েছে। মনে করিয়ে দিই ইন্টারনেট ও স্মার্টফোন ব্যবহারের দিক থেকে এখন বিশ্বের অন্যতম অ্যাক্টিভ অঞ্চল মধ্যপ্রাচ্য।

একটা সময় ছিল যখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে সবচেয়ে বেশি তেল রপ্তানি করত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। কিন্তু সেই দিন এখন আর নেই। অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে এশিয়ার উত্থান সেই হিসাব-নিকাশ বদলে দিয়েছে। ২০২২ সালে সৌদি আরব সবচেয়ে বেশি তেল রপ্তানি করেছে চীনের কাছে, মোট রপ্তানির ২৭ শতাংশ। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে রপ্তানি ছিল ২৫ শতাংশ। স্বাভাবিকভাবে মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক সমীকরণও বদলে যাচ্ছে। সৌদি আরব এখন সরাসরি মার্কিন প্রেসিডেন্টের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করছে। চীনের সঙ্গে তার সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটছে। যে চীনা টেলি যোগাযোগ প্রযুক্তি কোম্পানিকে যুক্তরাষ্ট্র নিষিদ্ধ করেছে, সেই হুয়াওয়ে সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি উপসাগরীয় দেশে ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক বসিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে তরুণ জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বেশি, সেই জন্য এখন অনেক স্টার্টআপ গড়ে উঠছে। এসব দেশের মানুষের চাহিদাও পাল্টেছে।

বলা হয়, অর্থনীতি-রাজনীতিতে পরিবর্তন আনতে গেলে সবার আগে মানুষের মনোভাবে পরিবর্তন আনতে হয়।বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, মধ্যপ্রাচ্যের মানুষেরা এখন অর্থনীতিকেই ভাবনার মূলে স্থান দিয়েছেন। অনেকেই মনে করেন, যে শুধু তেল আর গ্যাসের উচ্চ মূল্যের কারণে মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতি রীতিমতো দৌড়চ্ছে, বিষয়টি তেমন নয়। আসলে মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতি উন্মুক্ত হচ্ছে, ব্যবসা-বাণিজ্য প্রতিযোগিতামূলক হচ্ছে, সে জন্য কর্মসংস্থান হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যে অর্থনৈতিক বহুমুখীকরণের নেতৃত্বে আছে সৌদি আরব। যে সৌদি তার ভিশন ২০৩০ পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে উদ্যোক্তাদের বিকশিত করার চেষ্টা করছে। এর মধ্য দিয়ে তারা গতিশীল সমাজ, সমৃদ্ধ অর্থনীতি ও উচ্চাভিলাষী জাতি গড়তে চায়। সেই লক্ষ্য অর্জনে তারা পর্যটন, বিনোদন ও প্রযুক্তি খাতের বিকাশে ঘটাচ্ছে। মোদ্দা কথা, মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতি দ্রতগতিতে তেল গ্যাস এর বাইরে অন্য খাতে বইতে শুরু করেছে।

এই পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন শঙ্কার কারণ হয়ে উঠেছে হামাস ইসরায়েল যুদ্ধ। মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতি ও রাজনীতিতে এই যুদ্ধের কী প্রভাব পড়বে, কতটা আঁচ লাগবে তা এখনো পরিষ্কার নয়। তার চেয়েও বড় বিষয় হলো, স্থিতিশীলতা। মধ্যপ্রাচ্যে যে পরিবর্তনের ঢেউ লেগেছে, তার পেছনে আছে একধরনের স্থিতিশীলতা। এখন হামাস–ইসরায়েল যুদ্ধের কারণে সেই স্থিতিশীলতা নষ্ট হলে মধ্যপ্রাচ্য যে পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছে, তার গতি আবার কমতে পারে। তাই আগামী দিনে মধ্যপ্রাচ্যের ইকোনমি কোন খাতে বইবে, সেটা এখন থেকেই প্রেডিক্ট করা কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version