বাংলাদেশের এমপি হওয়া কি মুখের কথা ? এই পদে লাভ বেশি নাকি দায়িত্ব

।। প্রথম কলকাতা ।।

বেজে গিয়েছে নির্বাচনের দামামা, ৭ই জানুয়ারি বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচন। ভোটের ময়দান বলে কথা, বুঝতেই তো পারছেন, সেখানে কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলবে না। এমপি হতে চায় অনেকেই। এই পদ পাওয়া মানেই জনগণের সেবা করা। প্লাস মিলবে প্রচুর সুযোগ সুবিধা। আয়েশে কাটবে জীবন। বাংলাদেশের এমপি হওয়া কি মুখের কথা? নাকি দিতে হয় কঠিন পরীক্ষা? আপনার নিশ্চয়ই এই বিষয়ে কৌতূহল রয়েছে। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের মনোনয়নপত্র নেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। সেখানে প্রার্থীদের ঠিক কোন কোন তথ্য দিতে হয়? একটু ভুল হলেই বাতিল হয়ে যেতে পারে মনোনয়নপত্র। মুহূর্তে ভেঙে যেতে পারে এমপি হওয়ার স্বপ্ন। বাংলাদেশের একটা নিয়ম রয়েছে, বাইচান্স মনোনয়নপত্র বাতিল হলেও চিন্তা নেই, নির্বাচনের সুযোগ রয়েছে।

যে সমস্ত প্রার্থীরা ভোটে দাঁড়াতে চান, তাদের মনোনয়নপত্রে সাধারণ কিছু তথ্য যেমন নাম ঠিকানা জন্ম তারিখ ভোটার নম্বর উপজেলা জেলার মতো কিছু তথ্য দিতে হয়। প্রার্থীর যে প্রস্তাবক রয়েছেন, তারও ভোটার নম্বর দরকার। এছাড়াও শিক্ষাগত যোগ্যতা থেকে শুরু করে তিনি অতীতে কোন মামলায় সংযুক্ত ছিলেন কিনা, বছর থেকে শুরু করে মাসিক আয় ব্যয়ের হিসাব, তিনি কর ঠিকঠাক ভাবে পরিশোধ করছেন কিনা, ঠিক কতগুলো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে, সেই সমস্ত খুঁটিনাটি তথ্য দেওয়ার দরকার। যদি এর আগে জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে বিস্তারিত তথ্য দিতে হয়। যেমন তিনি কোন নির্বাচনী এলাকা থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন সেই এলাকার নাম, নম্বর প্রভৃতি।

এত খুঁটিনাটি নিয়ম মানার পরেও আশা ভঙ্গের জায়গাও রয়েছে। মনোনয়নপত্র বাতিল হতে কয়েক সেকেন্ডও লাগবে না। ১৯৭২ সালে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ১৪ নম্বর বিধান অনুযায়ী, রিটার্নিং অফিসাররা তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র বাতিল করতে পারেন। যদি প্রার্থী ফৌজদারী মামলা সংক্রান্ত কোনো তথ্য গোপন করে থাকেন কিংবা অভিযুক্ত আসামি হন তাহলে তার মনোনয়ন কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হবে না। প্রার্থীর বিরুদ্ধে ঋণ খেলাপির অভিযোগ থাকলে তিনি বাংলাদেশের সংসদ পদে বসার যোগ্য নন। এগুলো তো গেল বড় বড় ভুল। যদি ভুলেও মনোনয়নপত্রে নিজের স্বাক্ষর না করেন কিংবা আয়কর রিটার্নের কপি না দেন তাহলেও মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যেতে পারে। তবে বাংলাদেশের নিয়মে, মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার পরেও নির্বাচনের একটা সুযোগ রয়েছে। তখন প্রার্থীকে দ্রুত আপিল করতে হবে নির্বাচন কমিশনের কাছে। যদি নির্বাচন কমিশন তা বাতিল করে দেয়, তখন আবেদন করতে হবে হাইকোর্টে। হাইকোর্ট যদি আবেদন মঞ্জুর করে, তবেই অংশগ্রহণ করতে পারবেন নির্বাচনে।

তবে যে কেউ চাইলেই কিন্তু মনোনয়নপত্র নিতে পারেন না। তার জন্য বাংলাদেশের নাগরিকদের মানতে হয় বেশ কিছু নিয়ম। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী, প্রার্থীর বয়স হবে অন্তত ২৫ বছর। বাংলাদেশের ভোটার তালিকায় অবশ্যই নাম থাকতে হবে। তিনি অন্য কোন দেশের নাগরিক হলে বা আনুগত্য স্বীকার করলে প্রার্থী হতে পারবেন না। আদালত যদি অপ্রকৃতিস্থ বলে ঘোষণা করে, কিংবা ফৌজদারি অপরাধের দায়ে দুই বছরের কারাদণ্ডের মুক্তির পর পাঁচ বছর অতিবাহিত না হয়, তাহলে কিন্তু ওই ব্যক্তি সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য। প্রার্থী সরকারের কোন লাভজনক পদে থাকতে পারবেন না। ইতিমধ্যেই মনোনয়নপত্র নিতে শুরু করে দিয়েছে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দল থেকে শুরু করে অন্যান্য বিরোধী দলগুলোর প্রার্থীরা। বিএনপি যদিও এখনো অবরোধ কর্মসূচিতেই অনড়। আপনার কি মনে হয়, বাংলাদেশের এমপি পদটা কি বিরাট লাভজনক? নাকি লাভের থেকেও দায়িত্ব অনেক বেশি?

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version