চীনা যুদ্ধবিমানেই বড় ভরসা ইরানের ! ইসরাইলকে ধরাশায়ী করার মাস্টারপ্ল্যান, কী দোষ করলো রাশিয়া ?

।। প্রথম কলকাতা ।।

রাশিয়া থেকে মুখ ফেরাচ্ছে ইরান? চীনের যুদ্ধবিমানেই বড় ভরসা, ইসরাইলকে মুতোড় জবাব দেবে ইরান। ঘুঁটি সাজাচ্ছে তেহরান। কেন ইরানের নজরে চেংডু জে ১০ ভিগোরাস ড্রাগন ফাইটার জেট? রুশ যুদ্ধবিমানকে টেক্কা দেওয়া কি এতোই সোজা চীনের জন্য? মস্কোকে নিয়ে খিল্লি করছে চীন। কিভাবে জবাব দেবেন পুতিন? শোনা যাচ্ছিল, রাশিয়ার অত্যাধুনিক ফাইটার জেট এসইউ ৩৫ কিনতে যাচ্ছে ইরান। এই নিয়ে চারিদিকে লেখালেখি বলাবলি হচ্ছিল। কিন্তু সম্প্রতি ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক নিশ্চিত করেছেন তারা ওই যুদ্ধবিমান না কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এদিকে রাশিয়া যা দিতে পারবে না তা খোলা হাতে দেবে চীন। অতএব ইরানের সামনে চীনের তৈরি চেংডু জে ১০ ভিগোরাস ড্রাগন ফাইটার জেট কেনার রাস্তা খুলে গেল। ইরান যখন রাশিয়া থেকে এসইউ ৩৫ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তখন দেশটি প্রধানত যুদ্ধবিমানটির অ্যামিউনেসন লোডিং এর ক্ষমতা এবং লং রেঞ্জের বিষয়টা বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু চীনের জে ১০সি, এস ইউ৩৫ ফাইটারের মতো ভারী যুদ্ধবিমান নয়। এতে প্রচুর পরিমাণে গোলাবারুদ লোড করার সুযোগ এবং লং রেঞ্জ নেই। তাহলে কী জে ১০সি এর যুদ্ধ করার ক্ষমতা রুশ যুদ্ধবিমানের চেয়ে কম? না, এর ক্ষমতা কিন্তু তুখোড়। বিমানটির কমব্যাট রেঞ্জ ১২৪০ কিলোমিটার। বলা যায়, ইরানের জন্য জে ১০ সি হবে ্দা মে কম, মানে ভালো যুদ্ধবিমান। জে ১০ সি ফাইটার জেট পাকিস্তানের কাছেও আছে। পাকিস্থানে যুদ্ধবিমানটির একটি সম্পূর্ণ লজিস্টিক সাপোর্ট সিস্টেমও তৈরি করা হয়েছে। বিমানটি ইরানকেও রিজিওনাল লজিস্টিক সাপোর্ট দিতে সম্পূর্ণভাবে সক্ষম। ইরানের বিমান বাহিনী এর সম্পূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণ সাপোর্ট, অস্ত্র এবং ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশের সাপোর্ট পাবে। ইরান যদি এর পাইলট সিমুলেটর এমনকি উচ্চশিক্ষিত প্রশিক্ষকও চায়। চীন এগুলোর সবই দিতে পারবে।

তাছাড়া চেংডু জে ১০সি ফাইটার জেটটিতে চীনের তৈরি ডব্লিউ এস ১০বি ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে এতেই চীনের অস্ত্র এবং অ্যামিউনেশন মানে গোলাবারুদও রয়েছে। বিশেষ করে চীনের তৈরি থান্ডারবোল্ট টেন ই এবং থান্ডারবোল্ট ফিফটিন-ই এয়ার টু এয়ার মিসাইল এই বিমানের সঙ্গেই আছে। বর্তমান পৃথিবীতে সবচেয়ে উন্নত ইনফ্রারেড কমব্যাট মিসাইল এবং মিড রেঞ্জ এয়ার টু এয়ার মিসাইল। ইলেকট্রনিক্স সিস্টেমের দিক থেকেও চীনের এই যুদ্ধবিমান রাশিয়া এসইউ ৩৫ এর চেয়ে বেশ ভালো। এরমধ্যে চীন তো রাশিয়াকে নিয়ে মজা করছে। বেইজিং বলছে তাঁদের অভ্যন্তরীণ বিমানবাহিনীর মহড়ায় এসইউ ৩৫ যুদ্ধবিমানগুলো চীনের জে ১০বি ফাইটার জেটের কাছে হেরে গেছে। সেক্ষেত্রে ইরানের জন্য জে ১০সি ফাইটার প্লেন কেনার সিদ্ধান্ত যে কতখানি সঠিক সেটা বুঝতে বাকি থাকার কথা নয়। এখন প্রশ্ন হল ইরান রাশিয়া থেকে মুখ ফেরালো কেন? কারণ রাশিয়া জানিয়েছিল। তারা ইরানের বিমান বাহিনীকে এসইউ ৩৫ ফাইটার জেটটির সম্পূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণ সাপোর্ট, অস্ত্র এবং খুচরো যন্ত্রাংশ সহায়তা দিতে পারবে না। দেশটি যুদ্ধবিমানটির পাইলট সিমুলেটরও দিতে পারবে না। দেশটির কাছে এই সংক্রান্ত উচ্চশিক্ষিত প্রশিক্ষক নাকি নেই।

কিন্তু ইরান তো বসে থাকতে পারবেনা। জরুরী ভিত্তিতে ইরানের বিমানবাহিনীর যোদ্ধাদের আপডেট করতেই হবে। বুঝতে হবে, ইরানের জন্য সবচেয়ে বড় রিস্ক ফ্যাক্টর ইসরাইল। যা দেশটা থেকে প্রায় এক হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলো পারস্য উপসাগর এর কাছাকাছি। তাই ইরানের প্রয়োজন ১০০০ কিলোমিটারের বেশি কমব্যাট রেডিয়াসের যুদ্ধবিমান। এসব বিবেচনা থেকেই রাশিয়া সুখোই সিরিজের যুদ্ধবিমানটি বেছে নিয়েছিল ইরান। কারণ ওই ফাইটার জেটটির কমব্যাট রেঞ্জ ১৬০০ কিলোমিটার। কিন্তু, বাধ্য হয়ে রাশিয়ান যুদ্ধবিমান কেনার ওই চুক্তি বাতিল করতে হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। যা, ইরানের সঙ্গে চীনের সম্পর্ককে হয়তো আরও বেশি মজবুত করলো।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version