Remittance: প্রবাসী আয়ে শীর্ষে ভারত, পিছিয়ে পড়েছে পাকিস্তান! নেপথ্যের কারণটা কী?

।। প্রথম কলকাতা ।।

Remittance: মাত্র ১১ মাসেই বিরাট অর্জন, এর আগে কোন দেশ এমনটা করতে পারেনি। সমস্ত প্রতিবেশী দেশকে পিছনে ফেলে দিল ভারত, তৈরি করল বিশ্ব রেকর্ড। প্রবাসী রেমিট্যান্স আয়ে সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে দেশটি। পিছিয়ে পড়েছে বিশ্বের তাবড়-তাবড় দেশ। এখনো ২০২২ সাল শেষ হয়নি। তার আগেই প্রবাসী ভারতীয়রা নিজেদের দেশে পাঠিয়েছে ১০০ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স। বিশ্ব ব্যাংক এই ঘটনাকে বিশ্ব রেকর্ড বলে উল্লেখ করেছে, কারণ মাত্র ১১ মাসে নিজের দেশে এত পরিমানে রেমিট্যান্স পাঠানো মুখের কথা নয়। বিশ্ব ব্যাংক জানিয়েছে, এই প্রথম কোন দেশ বছর শেষ হওয়ার আগেই ১০০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স সংগ্রহ করেছে। একই স্ট্র্যাটেজি থাকলেও ফেল করল পাকিস্তান, পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ।

বিশ্ব ব্যাংক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অনুন্নত এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলির ক্ষেত্রে প্রবাসীদের পাঠানো এই অর্থ অর্থাৎ রেমিট্যান্স অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই অর্থ দিয়ে দেশের অবকাঠামগত উন্নয়ন প্রকল্পগুলিতে কাজ করা যায়। ২০২২ এ ভারতে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে তা ভারতের বার্ষিক মোট উপাদান অর্থাৎ জিডিপির ৩ শতাংশ। তবে ভারতের প্রবাসী আয় বাড়লেও প্রতিবেশী দেশগুলির হাল খুব খারাপ। সেক্ষেত্রে প্রবাসী আয়ের ধারা নিম্নমুখী। ইকোনমিক পয়েন্ট অফ ভিউতে দেখলে, আগামী দিনে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের বড় পার্টনার হতে চলেছে। সাম্প্রতিক সময় দাঁড়িয়ে ভারতের প্রচুর মানুষ যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে তিন থেকে অন্তত চার বছর পড়াশোনা বা চাকরির জন্য থাকেন। সেখান থেকে তারা প্রচুর পরিমাণে বিদেশী মুদ্রা পাঠান ভারতে। গত পাঁচ বছরে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর থেকে ভারতে আসা রেমিট্যান্সের পরিমাণ ২৬ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৩৬ শতাংশ। অপরদিকে রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে আরব দেশগুলির উপর ভারতের নির্ভরতা কমছে। বর্তমানে আরব দেশগুলি থেকে আসা ভারতের রেমিট্যান্সের পরিমাণ মাত্র ২৩ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উন্নত দেশগুলিতে শ্রমিকের বেতন বৃদ্ধি এবং চাহিদা বাড়ায় ভারত খুব সহজেই ছুঁয়েছে মাইলফলক। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয়রা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং সিঙ্গাপুরের মতো দেশে মোটা অঙ্কের বেতনে চাকরি করছেন। ভারতের রেমিট্যান্স এক ধাক্কায় অনেকটা বাড়ায় এশিয়ার অন্যান্য দেশের প্রবাসী আয় প্রায় ১০ শতাংশের বেশি হ্রাস পেয়েছে।

রিপোর্ট

ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলি তাদের রেমিট্যান্সের হার ধরে রাখতে পারছে না। বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই মুহূর্তে রেমিট্যান্সের দিক থেকে সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে ভারত। দেশটির রেমিট্যান্সের পরিমাণ ১০০ বিলিয়ন ডলার। দ্বিতীয় স্থানে মেক্সিকো( ৬০ বিলিয়ন ডলার), তৃতীয় চীন( ৫১ বিলিয়ন ডলার), চতুর্থ ফিলিপাইন( ৩৮ বিলিয়ন ডলার) , পঞ্চম মিশর( ৩৩ বিলিয়ন ডলার) , ষষ্ঠ পাকিস্তান( ২৯ বিলিয়ন ডলার), এবং সপ্তম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ ( ২১ বিলিয়ন ডলার)।

পাকিস্তান পিছিয়ে পড়ার কারণ

গত বছর বাংলাদেশে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ছিল ২২ বিলিয়ন ডলার। এবছর কমে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ২১ বিলিয়ন ডলার। পাকিস্তানের গত বছর রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ৩১বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ২৯ বিলিয়ন ডলারে। অপরদিকে শ্রীলঙ্কার হাল খুব খারাপ। গত বছর শ্রীলঙ্কার রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ৫.৫ মিলিয়ন ডলার, যা সাম্প্রতিক সময় দাঁড়িয়েছে ৩.৬ বিলিয়ন ডলারে। তবে এখানেই রয়েছে টুইস্ট। কারণ ভারতে যে ১০০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আয় করেছে, তার একটি কারণ হলো টাকার মূল্যের পতন। এই একই বৈশিষ্ট্য কিন্তু পাকিস্তানেও দেখা গেছে। ভারতে যতটা টাকার মূল্যের পতন ঘটেছে, তার থেকে বেশি পরিমাণে পতন ঘটেছে পাকিস্তানি টাকায়। কিন্তু রেজাল্ট বলছে উল্টো কথা। আসলে টাকার ভ্যালু কমলে বিদেশ থেকে বহু মানুষ ডলার দেশে পাঠিয়ে দেয়। ধরুন যদি আপনার কাছে ডলার স্ট্রং থাকে তাহলে সেই ডলার আপনি দেশে পাঠিয়ে প্রচুর টাকা ইনকাম করতে পারেন। যখনই কোন দেশে টাকার মূল্য কমে যাবে তখন এই ডলার পাঠানোর পারফেক্ট সময়। ভারতে সাম্প্রতিক সময় টাকার মূল্য কমতেই বহু প্রবাসী মানুষ ভারতে টাকা পাঠিয়েছে। উল্লেখযোগ্য ভাবে ভারতের থেকে পাকিস্তানে বেশি পরিমাণে টাকার মূল্য কমেছে, কিন্তু রেমিট্যান্স আয় হয়নি। এর অন্যতম কারণ হল, পাকিস্তানের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড। ৩১ থেকে ২৯ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসার মানে এই নয় যে পাকিস্তানের মানুষ দেশের বাইরে কাজে যাচ্ছে না। আসলে টাকা ইনকাম হলেও সরকারি পদ্ধতিতে নিজেদের দেশে টাকা পাঠাতে কোথাও গিয়ে ভয় পাচ্ছে। এমনি থেকেই পাকিস্তানের গদি নিয়ে অশান্তির শেষ নেই। আসলে পাকিস্তানের সরকারের প্রতি মানুষের বিশ্বাস হয়তো কমেছে। তাই মানুষ সরকারি পদ্ধতিতে না গিয়ে ঘুর পথে টাকা পাঠাচ্ছে দেশে।

বাংলাদেশে কমেছে রেমিট্যান্স, স্থান সপ্তম

বাংলাদেশেও বিগত কয়েক মাস প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স এর পরিমাণ নিম্নমুখী ছিল। অবশেষে সেই নির্মমুখী ধারা থেকে বের হতে পেরেছে দেশটি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, রেমিট্যান্স প্রবাহ আগের থেকে নভেম্বর মাসে একটু হলেও বেড়েছে। দেশটির রেমিট্যান্স বাড়াতে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক নানান উদ্যোগ নিয়েছে। যাতে বৈধ পথে প্রবাসী মানুষরা রেমিট্যান্স পাঠাতে পারে, তাই বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version