Shipping industry of Bangladesh: ভারতকেও দিচ্ছে সাপ্লাই, বাংলাদেশের দুর্ধর্ষ জলযান, তাক লেগে যাচ্ছে

।। প্রথম কলকাতা ।।

Shipping industry of Bangladesh: জাহাজে ভর করেই বিশ্বের বুকে তাক লাগাচ্ছে বাংলাদেশ। বিশ্বজুড়ে জলের তলায় ছুটে বেড়াচ্ছে ওপার বাংলার দুর্ধর্ষ সব জলযান। শূণ্য থেকে শুরু করে কোটি কোটি টাকা মুনাফা, জাহাজ নির্মাণ শিল্পে সোনার দিন দেখছে ওপার বাংলা। কিন্তু কিভাবে ধরা দিল এই সাকসেস? কোন ফর্মুলায় বাংলাদেশী শিপইয়ার্ড কোম্পানিগুলো জাহাজ রফতানিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে? লাগে না চালক, জলে নয়, বরফ ভেঙে এগিয়ে যায় যেসব জলযান। বাংলাদেশের রহস্যময় আবিষ্কার আপনার মাথা ঘুরিয়ে দেবে। বাংলাদেশে তৈরি জাহাজ, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছে এক অমোঘ আকর্ষণ। একসময় বিদেশ থেকে জাহাজ আমদানি করতে হতো। অথচ গত কয়েক দশকে জাহাজ নির্মাণে অভাবনীয় সাফল্যে দেশের চাহিদা মিটিয়ে এখন বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশে জাহাজ রপ্তানি করছে বাংলাদেশ।

ইউরোপ, আফ্রিকা, এশিয়ার বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি ভারতেও জাহাজ রফতানি করে ওপার বাংলা। বিশ্ব বাণিজ্যের শতকরা ৮০ ভাগ বাণিজ্য চলে সমুদ্র পথে। আর এই ফর্মুলাটাই বাংলাদেশের ট্রাম্পকার্ড। শিপইয়ার্ড ও শিপবিল্ডিং খাতের প্রতিবন্ধকতা, চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা নিয়ে গবেষণা ও সমীক্ষা চালিয়েছে বাংলাদেশ। প্রতিবন্ধকতা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে, শিপবিল্ডিং সেক্টর হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের অন্যতম রপ্তানি খাত। বাংলাদেশ ভুলে যায়নি জাহাজ নির্মাণ শিল্প ব্লু-ইকোনমির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শিপইয়ার্ড ও শিপবিল্ডিং সেক্টরের উন্নয়ন ছাড়া ব্লু-ইকোনমির যথার্থ সুফল কোনোভাবেই পাওয়া সম্ভব নয়। তাই জাহাজ নির্মাণে একের পর এক চমক দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দেখাচ্ছে একের পর এক উদ্ভাবনী সব আবিষ্কার। তথ্য বলছে, ২০১৮ সাল থেকেই বৈশ্বিক বাজারে আবারো অবস্থান ফেরাতে শুরু করেছে বাংলাদেশের জাহাজ শিল্প। বর্তমানে জাহাজ নির্মাণ শিল্প থেকে বাংলাদেশ প্রতি বছর প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা আয় করে।

এই পর্যন্ত প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের জাহাজ রপ্তানি হয়েছে, যা ২০২৬ সালে দাঁড়াবে ৬৫০ মিলিয়ন ডলারে। এরপরে বাংলাদেশ যদি বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা দূর করে সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারে তাহলে নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে ২০৪০ সালে এই শিল্প থেকে ৯০ বিলিয়ন ডলার আয় করা সম্ভব। অত্যাধুনিক জাহাজ নির্মাণে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করেছে বাংলাদেশ।কখনও বাল্টিক সমুদ্রে চার ফুট বরফ আচ্ছাদিত পথে চলতে পারবে এমন জাহাজ, কখনও অত্যাধুনিক কন্টেইনার জাহাজ ‘স্টেলা মেরিস’, আবার কখনও চালকবিহীন জাহাজ, অথবা বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমুদ্রগামী জাহাজ। একের পর এক চমক দিয়ে যাচ্ছে ওপার বাংলা। তাছাড়া ইউরোপের বাজারে পরিবেশবান্ধব জাহাজের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় জাহাজ রপ্তানিতে নতুন নতুন অর্ডার পাচ্ছে বাংলাদেশ। দেশটা পরিবেশবান্ধব জাহাজ নির্মাণ করায় মনোযোগ দিয়েছে।

এখন, জাহাজ শিল্পে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন বাংলাদেশের অন্য উদ্যোক্তারাও। জাহাজ নির্মাণে অনুকূল পরিবেশ থাকায় এই খাতে নতুন বিনিয়োগ বৃদ্ধিরও পরিকল্পনা রয়েছে উদ্যোক্তাদের। বাংলাদেশের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের আমদানিকারকরা আগ্রহী হয়ে উঠছে। বাংলাদেশে ছোট-বড় মিলে প্রায় তিনশোর বেশি শিপইয়ার্ড রয়েছে। এর মধ্যে ১০টি রপ্তানিযোগ্য জাহাজ তৈরি করে, এই খাতে প্রায় ৩ লাখ মানুষ জড়িত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ববাজারে ছোট ও মাঝারি নৌযানের জন্য বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্প দিনে দিনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। কিভাবে? বুঝতে হবে বর্তমানে বিশ্বের উপকূলীয় দেশগুলো সমুদ্রকেন্দ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে জোর দিচ্ছে। সমুদ্র থেকে মাছ ও খনিজ সম্পদ আহরণ, সামুদ্রিক নবায়নযোগ্য শক্তি, সামুদ্রিক পর্যটন, সমুদ্র নিরাপত্তা ও গবেষণা ঘিরে কর্মযজ্ঞ বাড়ছে।

সেইজন্য উচ্চ প্রযুক্তির ছোট-বড় জাহাজ সমুদ্র অর্থনীতির ওই সব কর্মকাণ্ডের জন্য প্রয়োজন। ইতোমধ্যে জাহাজ ভাড়া ২৫-৩০ শতাংশ বেড়ে গেছে। আর বিশ্ববাজারেও ব্যাপক হারে বেড়েছে জাহাজের চাহিদা। বাংলাদেশে রপ্তানিকারকরা তারই সুফল পাঁচ্ছে। প্রতিদিনই অর্ডার মিলছে। পাশাপাশি সরকারও এই খাতের রপ্তানি বাড়াতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে।
বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ এবং রপ্তানি খাত নিয়ে শিপইয়ার্ড কোম্পানিগুলো এতটাই আশাবাদী যে তারা বলছে। ভবিষ্যতে এই শিল্প‌, তৈরি পোশাক শিল্পের কাছাকাছি রপ্তা‌নি আয় অর্জন কর‌তে পারবেএই খাত থেকে তৈরি পোশাক খাতের মতো বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব। আর এই প্ল্যানিংই ওপার বাংলাকে আগামী দিনে এক নতুন দিশা দেখাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version