Argentine Foreign Minister in Bangladesh: বাংলাদেশ সফরে আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ৪৫ বছর পর ঢাকায় চালু হল দূতাবাস

।। প্রথম কলকাতা ।।

Argentine Foreign Minister in Bangladesh: তিন দিনের সফরে ঢাকায় (Dhaka) গিয়েছেন আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সান্তিয়াগো ক্যাফিয়েরো (Santiago Cafiero)। গতকাল তাঁকে সকাল ৮টার সময় বাংলাদেশের (Bangladesh) রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (Hazrat Shahjalal International Airport) স্বাগত জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন (Foreign Minister Dr. A K Abdul Momen)। বাংলাদেশে এই প্রথম আর্জেন্টিনার কোন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সফরে গিয়েছেন। দীর্ঘ ৪৫ বছর পর বাংলাদেশের বাণিজ্য ও নাগরিকদের যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ঢাকায় চালু হচ্ছে আর্জেন্টিনার দূতাবাস। এর আগে ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ এবং আর্জেন্টিনার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তৈরি হলেও ১৯৭৮ সালে ঢাকায় থাকা আর্জেন্টিনার দূতাবাসটি বন্ধ হয়ে যায়।

ব্র্যাক ফাউন্ডেশনে (Brac Foundation) একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন সফররত মন্ত্রী। উদ্দেশ্য ছিল নারীর ক্ষমতায়ন এবং গ্রামীণ নারীদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে ব্র্যাকের উন্নয়ন কর্মসূচি এবং সাফল্যের গল্প থেকে শিক্ষা নেওয়া। আর্জেন্টিনার গ্রামীণ ও শহুরে এলাকার লক্ষাধিক দুর্বল নারীকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনতে কীভাবে দায়িত্বশীলভাবে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি আনা যায় সে বিষয়ে জ্ঞান ভাগ করে নিতে উভয় পক্ষই সম্মত হয়েছে। সান্তিয়াগো সোমবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সাথে বৈঠক করেন। ঢাকায় কূটনৈতিক মিশন পুনরায় চালু করার জন্য ড. মোমেন আর্জেন্টিনা সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী কৃষি, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, গবাদি পশু ও পোল্ট্রি শিল্প, বায়োটেকনোলজি, ফার্মাসিউটিক্যালস, আইসিটি খাত, ভারী ও হালকা যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রপাতি খাতে বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনার মধ্যে ব্যাপক সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা বাড়ানোর গুরুত্বের ওপর জোর দেন। ড. মোমেন আর্জেন্টিনার বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীদের দেওয়া প্রণোদনার সুযোগ নিয়ে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন যা বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে সাহায্য করবে। আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এফটিএর পরিবর্তে প্রেফারেনশিয়াল ট্রেডিং অ্যারেঞ্জমেন্ট (পিটিএ) অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি আরএমজি পণ্যের উপর আর্জেন্টিনা কর্তৃক আরোপিত বিদ্যমান ৩৫% শুল্ক কমানোর এবং বৃহত্তর বাজারে প্রবেশাধিকারের জন্য বাংলাদেশী পাটের ব্যাগ এবং বস্তার উপর প্রতি কেজিতে ০.১৬ ডলার অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক প্রত্যাহার করার অনুরোধও করেছিলেন। বৈঠকের আগে, কূটনৈতিক এবং অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা মওকুফ চুক্তি, ফুটবল সহযোগিতার চুক্তি, প্রশিক্ষণ সহযোগিতার বিষয়ে বিদেশী পরিষেবা অ্যাকাডেমিগুলির মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। উভয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজ নিজ সরকারের পক্ষে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন। এসব চুক্তি স্বাক্ষর হলে তা জনগণের মধ্যে যোগাযোগসহ দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে ভূমিকা রাখবে।

এর আগে বিকেলে ঢাকায় দূতাবাসের উদ্বোধন করেন আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহরিয়ার আলম। শাহরিয়ার আলম তাঁর বক্তব্যে জানান, বাংলাদেশে আর্জেন্টিনা মিশন পুনরায় চালু করা কেবল একটি কূটনৈতিক অংশ নয়, এটি একটি আবেগপূর্ণ দিকও। এটি দুই দেশের জাতি এবং জনগণের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বের দৃঢ় বন্ধনের প্রতিফলন। এটি পারস্পরিক স্বার্থের সম্ভাব্য সকল ক্ষেত্রে সহযোগিতার নতুন সম্ভাবনা উন্মোচন করবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে সফররত আর্জেন্টিনার প্রতিনিধি দলের সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করেছিলেন।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version