।। প্রথম কলকাতা ।।
Bangladesh: বাংলাদেশের মাটিতে আবারও মুখোমুখি রাশিয়া আর যুক্তরাষ্ট্র। সামনেই দেশটার জাতীয় নির্বাচন। যাকে ঘিরে এমনি থেকেই বাংলাদেশের আবহাওয়া বেশ গরম। তার উপর বিশ্বের দুই শক্তিধর রাষ্ট্রের এই বিপরীত অবস্থান বাংলাদেশকে কি কোন সংকটে ফেলতে চলেছে? সমালোচক মহলে জোর গুঞ্জন, দুই দেশই বাংলাদেশকে হাতছাড়া করতে চাইছে না। ভূরাজনৈতিক কৌশলের কারণে দেশটাকে হাতে রাখতে চাইছে। তাই যখনই বাংলাদেশের মানবাধিকার ইস্যুতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গ ওঠে, তখনই রাশিয়া পাশে দাঁড়ায় বাংলাদেশের। এবার সরাসরি বলেই দিল, বাংলাদেশে মার্কিন যেকোনো নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে রাশিয়ার সবকিছু করতে প্রস্তুত। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের ‘টক উইথ রাশিয়ান অ্যাম্বাসডর অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমনটাই বলেছেন ঢাকায় নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মন্টিটসকি।
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যদি পশ্চিমা বিশ্ব কিংবা যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নিষেধাজ্ঞা দেয় তাহলে কি সেই ১৯৭১ সালের মতোই রাশিয়া বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াবে? বাংলাদেশের হয়ে কথা বলবে? এই প্রশ্নে রুশ রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পশ্চিমা বিশ্ব কোন বেআইনি পদক্ষেপ নিলে রাশিয়া সবকিছু করতে পারে। কথা প্রসঙ্গে তোলেন জাতিসংঘের কথা। বলেন, বাংলাদেশের বিষয়গুলোতে জাতিসংঘের নিরপেক্ষ হওয়া উচিত। রাশিয়ার দাবি, পশ্চিমা বিশ্ব যা বলে সেই ভাবেই কাজ করতে থাকে জাতিসংঘ। নিরপেক্ষ হয়ে কাজ করে না। বাংলাদেশ আর রাশিয়ায় বন্ধুত্বের ভিত্তি স্থাপন হয়েছিল সেই বহুদিন আগে মুক্তিযুদ্ধের সময়। রাশিয়া বাংলাদেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা বন্ধু রাষ্ট্র। সম্প্রতি বাংলাদেশের মাটিতে থাকার রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রে কাজ করছে দেশটা। পরিকল্পনা রয়েছে, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট টু নিয়ে কাজ করার। এই বিষয়ে আলোচনাও চলছে।
কিন্তু বাংলাদেশের মাটিতে পরাশক্তির গুলোর এত দ্বন্দ্ব কেন? বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক শক্তি এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংযোগস্থলে কৌশলগত অবস্থান দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে চীন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়া সহ বহু দেশের। ২০২২ সালে বাংলাদেশ ছিল ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতি। কিন্তু গত এক দশকে দেশটার প্রবৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৫ থেকে ৭ শতাংশ। ২০৫০ সালের মধ্যে দেশটা পরিণত হবে ২৩তম বৃহত্তম অর্থনীতিতে। বাংলাদেশ সামাজিক এবং অর্থনৈতিক সূচকে ছাপিয়ে গিয়েছে বহু প্রতিবেশী দেশকে। বাংলাদেশ এখন সম্ভাবনামায় সোনার হাঁসের মতো। এমনটাই বলছে ফেয়ার অবজারভারের প্রতিবেদন। বাংলাদেশ এখন বিশ্ব বাণিজ্যের আঞ্চলিক কেন্দ্র। হয়ে উঠছে অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত বিনিয়োগের আকর্ষণীয় জায়গা। ঢাকার উপর লক্ষ্য রয়েছে শক্তিধর বহু রাষ্ট্রের। চীন ইতিমধ্যেই সফলভাবে বাংলাদেশকে যুক্ত করেছে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে। বাংলাদেশ কিন্তু চীনকে দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রভাব বিস্তার করতে আর মালাক্কা প্রণালীতে বিকল্পের রুট তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে। তাই দেশটাকে চীনের প্রভাব মুক্ত রাখতে উঠে পড়ে লেগেছে বহু রাষ্ট্র।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম