Holy kitchen of Puri Jagannath Temple: জগন্নাথদেবের মহাপ্রসাদে ৫৬ ভোগ, পুরীর সেই অলৌকিক রান্নাঘর কেমন?

।।প্রথম কলকাতা।।

Holy kitchen of Puri Jagannath Temple: রোজ ১০ হাজার লোক জগন্নাথদেবের প্রসাদ পান জগন্নাথধাম পুরীতে ( Puri Jagannath Temple) ‘মহাপ্রসাদ’ কীভাবে তৈরি হয়দেখলে অবাক হবেন। ৫৬ ভোগের মধ্যে একটি লঙ্কার লাড্ডু! আর থাকে কী কী? সে এক বিশাল কর্মযজ্ঞ! প্রভুর জন্যে রান্নার জলও যে সে জায়গার নয়! দশ হাজার মানুষের জন্য কজন রান্না করেন?পুরীর( Puri) জগন্নাথ মন্দিরের সেই অলৌকিক রান্নাঘর দেখলে ভিরমি খাবেন।রহস্য যার কোণায় কোণায়।

পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রান্নাঘরকে( Puri Jagannath Temple) বলা হয় পৃথিবীর অদ্ভুত ও সবচেয়ে বড় রান্নাঘর। জগন্নাথ দেবের রান্নাঘরকে বলে রোষা ঘর( rosha ghara)।৩০০-রও বেশি রাঁধুনি সকাল থেকে রান্না করে চলেছেন।প্রতিদিন সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ রোষা হোম হয়।এই হোমের আগুন থেকে রোষা ঘরের সমস্ত উনুনে আগুন দেওয়া হয়। পুরীর মহাপ্রসাদ রান্না হয় কাঠের আগুনের ওপর আর তা হয় অনেকগুলি তেলের ল্যাম্প ঝুলিয়ে রান্নার জন্য রয়েছে ৭৫২ টি উনুন। একটির উপর একটি পাত্র বসিয়ে রান্না হয় সবচেয়ে উপরে যে পাত্রটি রয়েছে তাতে রান্না সবার আগে পাক হয়।

শোনা যায়, জগন্নাথদেবের মহাপ্রসাদ কোনও দিনও শেষও হয়না বা বাড়তি পড়েও থাকে না। জগন্নাথদেবের জন্য বিশেষ ৫৬ ভোগ রান্না হয়।কী কী থাকে সেই ভোগে? তা নিয়ে কৌতুহল বহু মানুষের ।দুটি ভাগে আলাদা করা হয় ভোগকে।পাক্কা ভোগ বলা হয় সে খাবারগুলো ।যেগুলো সিদ্ধ করা যেমন ডাল, চাল, খিচুরী ও সমস্ত রকমের সবজি।সুক্কা বলা হয় বিস্কিট, মিষ্টান্ন আর বিভিন্ন ধরনের পিঠা।মুড়ি থেকে নারকেল নাড়ু, খোয়া ক্ষীর, দই আবার লঙ্কার লাড্ডু,থাকে নানা বাহাড়ি কেক।শুকনো খিঁচুড়ি থেকে ভাত দিয়ে তৈরি মিষ্টি কী নেই সেই ভোগে! তবে মশলা বলতে শুধুমাত্র নুন এবং হলুদের ব্যবহার
৫৬ ভোগ ছাড়াও ১০০টির উপর পদ রান্না হয় রোজ।

যে সে পুকুরের জল নয়! জগন্নাথদেবের রান্নায় ব্যবহার হয় বিশেষ জল। পুরীতে( Puri) জগন্নাথদেবের মহাপ্রসাদ তৈরি হয় এক বিশেষ কুয়োর জল থেকে।মন্দিরের রান্নাঘরের পাশে রয়েছে ২ টি কুয়ো এগুলিকে গঙ্গা যমুনা বলা হয়।ভোগ তৈরির রান্নাঘরও কম রহস্যে ঘেরা নয়। এই ঘরে কী হয় তা সকলে দেখতে পারেন না!দেওয়ালের ছোট ছোট ফাঁক দিয়ে বাইরে থেকে সেই বিশাল কর্মকান্ড কিছুটা দেখা যায়।

রাঁধুনীদের এঁদের বলা হয় সূপকার।মানুষের বিশ্বাস লক্ষ্মীদেবী স্বয়ং এঁদের মাধ্যমে জগন্নাথদেবের ভোগ রান্না করেন রান্নার সময় তাই এঁরা সারাক্ষণ নাকে মুখে গামছা জড়িয়ে থাকেন।বলা হয় জগন্নাথদেব আর লক্ষ্মী দেবীর কৃপায় ধন্য এই রান্নাঘর।জগন্নাথদেব নিজে যেমন খেতে ভালোবাসেন। তেমনি ভালোবাসেন ভক্তদের খাওয়াতেতাই প্রতিদিন এত মানুষ প্রসাদ পান।সন্ধেবেলা জগন্নাথদেবকে দেওয়া হয় সুভাস পাখাল।লেবু, দই দিয়ে মাখা পান্তাভাতকেই বলা হয় সুভাস পাখাল। সঙ্গে থাকে নানা ধরনের মিষ্টি।রাত এগারোটা নাগাদ মহাপ্রভুর বড় শৃঙ্গার হয়। এই সময় তাঁকে বিভিন্ন ধরনের ভাজা ও ক্ষীর নিবেদন করা হয়।সবশেষে মধ্যরাতে ডাবের জল খেয়ে জগন্নাথ দেব শয়ন করেন। এই ভাবে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত জগন্নাথদেবের ৫৬ প্রকার ভোগ চলতে থাকে।

পুরানের কাহিনী অনুযায়ী শ্রী কৃষ্ণ গোবর্ধন পর্বত তুলে ধরে মহাপ্রলয় থেকে প্রাণীজগতকে রক্ষা করেছিলেন। এই ভাবে সাত দিন কনিষ্ঠ আঙ্গুলে পাহাড় তুলে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। শ্রীকৃষ্ণ প্রতিদিন আট বার খেতেন। তবে এই সাত দিন তিনি কিছুই খাননি। সাতদিন পর প্রলয় বন্ধ হলে তিনি পাহাড় নামিয়ে রাখেন। তখন তাঁকে সাতদিনের আট রকমের মোট ছাপ্পান্ন রকমের রান্না করে ভোগ নিবেদন করেন। সেই থেকেই নারায়ণের ছাপ্পান্ন ভোগ চলে আসছে।

 

 

 

Exit mobile version