Japan – Bangladesh: আমুল পরিবর্তন জাপানের! গুরুত্ব বাড়ছে বাংলাদেশের, চীনের জন্যই মাতারবাড়ি মাস্টারপ্ল্যান

।। প্রথম কলকাতা ।।

Japan – Bangladesh: ভোলবদল জাপানের। নতুন করে খতরনাক সব অস্ত্রে সজ্জিত হচ্ছে জাপান। প্রথমবার জাপান অস্ত্র দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল বাংলাদেশকেও। কিন্তু কেন প্রতিরক্ষা নিয়ে হঠাৎ করেই এতটা তৎপর জাপান? জাপানের শান্তিপ্রেমী ইমেজ ঝেড়ে ফেলার নেপথ্যে চীনা ভীতিই কি একমাত্র কারণ? বাংলাদেশে চীনা আধিপত্য ঠেকাতে পারবে কি জাপানের অর্থায়নে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ এর মাতারবাড়ী প্রজেক্ট? কেন বাংলাদেশকে এতো গুরুত্ব দিচ্ছে জাপান কিংবা আমেরিকা? বাংলাদেশ কি সত্যিই ম্যাজিক জানে? জাপানের মানুষ বুঝতে পারছে চারপাশটা বিপজ্জনক হয়ে উঠছে বিবিসির রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের সিংহভাগ মানুষ প্রতিরক্ষা জোরদার করার পক্ষে সায় দিচ্ছে দিনের পর দিন জাপানকে বিভিন্ন অস্ত্রে সজ্জিত করা হচ্ছে।

দেশটার প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। জাপানে প্রচুর অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান কিনেছে, কিনছে। বিমানবাহী একাধিক জাহাজ সংস্কার করছে। শত শত মার্কিন টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র কেনার অর্ডার দিয়েছে। ২০২৭ সালের মধ্যে ৩১১ বিলিয়ন ডলার প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কিশিদা, যা ওই দেশের জিডিপির ২ শতাংশ, এবং আগের পাঁচ বছরের থেকে ৫০ শতাংশ বেশি। এমনকি, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের অংশ হিসাবে বাংলাদেশেও চীনের প্রভাব কমাতে উদ্যোগী জাপান। বাংলাদেশের সাথে সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাইছে তারা। এই প্রথমবার জাপান বাংলাদেশকে সমরাস্ত্র দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, কক্সবাজারে মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্রে বন্দর নির্মাণ প্রকল্পে জাপানের অর্থায়নের পেছনে আসলে জাপানের ভূ-রাজনৈতিক লক্ষ্যই কাজ করছে। কাগজে-কলমে মাতারবাড়ি প্রকল্পকে জাপান এখনও তাদের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের অংশ হিসাবে দেখায়নি ঠিকই, কিন্তু সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট। আসলে, মাতারবাড়িকে কেন্দ্র করে জাপান ওই অঞ্চলে, বিশেষ করে বাংলাদেশ সংলগ্ন ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে, অর্থনৈতিক জোন গড়ে তুলবে। বিভিন্ন পণ্যের একটা সাপ্লাই চেইন প্রতিষ্ঠা করবে। মোদ্দা কথা, চীনের ওপর বাংলাদেশের আমদানি নির্ভরতা কমানোই জাপানের মেইন টার্গেট। কিন্তু নজরে কেন বাংলাদেশ বাংলাদেশকে কেন এত গুরুত্ব দিচ্ছে জাপান বা আমেরিকা?

এর কারণ বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান। কিন্তু জাপান বা আমেরিকার মতো শক্তিধর ধনী দেশের কাছ থেকে এই বিশেষ নজর কি বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে যাবে? পর্যবেক্ষকরা বলছেন, কৌশলগত ভারসাম্য রক্ষার যে নীতি বাংলাদেশ বহুদিন ধরে অনুসরণ করছে তা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। সবদিক থেকেই এমন সব প্রস্তাব পাচ্ছে বাংলাদেশ যেগুলোর সাথে যুক্ত হলে যে কোনও একপক্ষে চলে যেতে হবে বাংলাদেশ কে। কিন্তু বাংলাদেশ যাবে কোন দিকে? কোন পক্ষে? না, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে এগুলোকে একদিকে রেখে, যদি এটা নিয়ে আলোচনা করা হয়, যে জাপান কেন চীনা ভীতি নিয়ে এতটা উদ্বেগে বা উৎকণ্ঠায়? সেক্ষেত্রে বলতে হচ্ছে, যুদ্ধ বিরোধী জাপান চীনের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক শক্তি নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন।

আর ইউক্রেনে রুশ হামলা জাপানের সেই প্যালপিটিশনকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বিবিসির রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্লেষকদের মতে, জাপান ভাবছে রাশিয়া যদি এমন করতে পারে তাহলে চীনও তাইওয়ান আক্রমণ করতেই পারে। তাদের ভয় যদি তাইওয়ান চীনের নিয়ন্ত্রণে চলে যায় তাহলে দেখতে হচ্ছে না। চীনের নৌ-বাহিনীর শক্তিকে আটকানোর আর কোনও উপায়ই থাকবেনা। সঙ্গত কারণেই জাপান ভয় পাচ্ছে। তাইওয়ান নিয়ে যুদ্ধ বাঁধলে সেই যুদ্ধে আমেরিকা জড়িয়ে পড়বে, জাপানেরও কিন্তু জড়িয়ে পড়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। সেক্ষেত্রে, তাইওয়ানের খুব কাছেই জাপানের কিছু দ্বীপ রয়েছে, সেগুলোতে কি হাত দেওয়ার চান্স থাকছে চীনের? ওকিনাওয়া দ্বীপে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি কি চীনের টার্গেট হতে পারে? এসব প্রশ্ন নিয়ে জাপানে বেশ কয়েক বছর ধরেই কথাবার্তা হচ্ছে তাই, আগেভাগেই প্রিকশন নিচ্ছে জাপান।

এমনিতেই ঐতিহাসিক কারণে চীনের প্রতি জাপানের ভয়ভীতি ছিল। সেই, ১৮৯৪ সাল থেকে চীন ও জাপান একে অপরের পরম শত্রু। ২০০৭ সালে শিনজো আবে ক্ষমতায় আসার পর থেকে সেই শত্রুতা ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। শুধু চীন নয়।‌ উত্তর কোরিয়ার পারমানবিক এবং ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়েও জাপান গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ফলে, শান্তিকামী ইমেজ ঝেড়ে ফেলে, নতুন করে অস্ত্রে সজ্জিত হচ্ছে দেশটা। সময় এলেই জবাব দেবে জাপান।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version