International Mother Language Day: সাইকেল চড়ে চন্দননগর থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা, গন্তব্য ঢাকার ভাষা শহীদ মঞ্চ

।। প্রথম কলকাতা ।।

International Mother Language Day: “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি …” এই দিনটি বাঙালি কোন দিনের জন্য ভুলতে পারবে না। এই দিনের সাথে সন্তান হারা মায়ের চোখের জল আর বেদনাদায়ক স্মৃতি জড়িত। ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস (International Mother Language Day)। এই দিবসে বাংলাদেশ (Bangladesh) আর ভারতের (India) সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করতে চন্দননগর থেকে সাইকেল নিয়ে রওনা দিয়েছেন ৮ জন। গন্তব্য ঢাকা (Dhaka) শহরের ভাষা শহীদ মঞ্চ। তারা বাংলাদেশে মাতৃভাষা দিবসে অংশ নেবেন। ফ্ল্যাগ অফ করে এই যাত্রার সূচনা করেছেন বিশিষ্ট পর্বত আরোহী পিয়ালী বসাক। এবিপি আনন্দে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ৮ জনের দলে রয়েছেন সিঙ্গুর মহামায়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীকান্ত মন্ডল, প্রণব মাইতি, রমজান আলী এবং ওই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র সত্যব্রত ভান্ডারী। পাশাপাশি রয়েছেন শিক্ষক প্রসেনজিৎ সরকার, অজ্ঞন কুমার দাস এবং আরোহী মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রথম নয়, এই নিয়ে চার বার ২১শে ফেব্রুয়ারি সাইকেল নিয়ে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন বিজ্ঞানের শিক্ষক শৈবাল বন্দোপাধ্যায়। তাদের উদ্দেশ্য, এই যাত্রার মাধ্যমে সমাজের সামনে নতুন দিশা তুলে ধরা। এর ফলে সুদৃঢ় হবে শিক্ষক-ছাত্র ঐক্য। তারা চান মানুষে মানুষে ঐক্য গড়ে উঠুক। মানুষ আবদ্ধ হোক ভালোবাসার বন্ধনে। পৃথিবী হয়ে উঠুক দূষণমুক্ত। তাই সবাই সাইকেলেই চেপে রওনা দিয়েছেন প্রতিবেশী দেশের উদ্দেশ্যে। প্রথমে চন্দননগর স্ট্যান্ডে যে ভাষা শহীদ স্মারক রয়েছে সেখানে তারা শ্রদ্ধা জানিয়ে যাত্রা শুরু করেন। পাঁচ দিন টানা সাইকেল চালিয়ে ১৯শে ফেব্রুয়ারি পৌঁছাবেন বাংলাদেশের ঢাকায়। ৫ দিনের পথে পড়বে রানাঘাট, গেঁদে, চুয়াডাঙা, কুষ্টিয়া, পাবনা, কাশীনাথপুর এবং মানিকগঞ্জ।

ভারতে স্বাধীনতা পাওয়া গিয়েছিল ঠিক, কিন্তু তার পরবর্তী যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তা অত্যন্ত ভয়ানক। চারিদিকে দাঙ্গা, রক্তাক্ত মারামারি আর উদ্বাস্তু সমস্যা। রাস্তা থেকে শুরু করে রেলস্টেশনে শুয়ে থাকত কর্পদশূন্য কঙ্কালসার মানুষ। দেশভাগের যন্ত্রণায় বয়ে বেড়াতে হচ্ছিল কিন্তু পূর্ববঙ্গের ক্ষেত্রে দেখা দিল নতুন আর এক সমস্যা। অবাঙালি শাসকরা বাঙালিদের মাতৃভাষাকে গলা টিপে হত্যা করতে চাইল। তখন থেমে থাকেনি বাংলার সন্তানরা। আসলে দ্বিজাতিতত্ত্ব আর স্বাধীনতা প্রাপ্তির মধ্যেই ২১শে ফেব্রুয়ারির বীজ লুকিয়ে ছিল।

২১শে ফেব্রুয়ারি দিনটিকে স্মরণ করে ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর ইউনেস্কো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এই ভাষা আন্দোলন শুধু বাংলাভাষাকে ঘিরে হলেও বিশ্বের প্রায় ১৮৮টি দেশে এই দিবস পালন করা হয়। এই দিবসের সাথেই জড়িয়ে রয়েছে বাঙালিদের নিজের ভাষা, মায়ের ভাষা সর্বোপরি অন্তরের আবেগ। এই ভাষার স্বাধীনতার জন্যই শহীদ হতে হয়েছিল ছাত্রদের। সেদিন রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে যারা শহীদ হয়েছিলেন তাঁরা হলেন আবুল বরকত, রফিকউদ্দিন আহমদ, আব্দুল জব্বার, শফিউর রহমান, আব্দুল আউয়াল, আব্দুস সালাম প্রমুখ ছাত্ররা। বাংলা ভাষা বাংলাদেশ ছাড়া শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গে নয় ঝাড়খন্ড, উড়িষ্যা ,ত্রিপুরা, বিহার, মনিপুর প্রভৃতি জায়গাতেও কমবেশি মানুষ বাংলা ভাষা ব্যবহার করেন। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন রাষ্ট্রে বাংলা ভাষা দ্বিতীয় ভাষার স্বীকৃতি পেয়েছে। সারা বিশ্বজুড়ে কর্মসূত্রে বাঙালিদের বাস। বাংলা ভাষা সবথেকে মিষ্টি ভাষা।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version