Shankha-Pola: হিন্দু মহিলাদের হাতে শাঁখা পলা মঙ্গলের প্রতীক, নেপথ্যে অসাধারণ পৌরাণিক কাহিনী

।। প্রথম কলকাতা ।।

Shankha-Pola: হিন্দু সংস্কৃতিতে বৈবাহিক রীতির সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে শাঁখা পলা। অনেকে বাহ্যিক আধুনিকতার মোড়কে তুলে ধরতে শাঁখা পলাকে ফ্যাশনের মধ্যে জায়গা দিয়েছেন। সেই প্রাচীন যুগ থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত, হিন্দু বিবাহিত মহিলারা বিশ্বাস সহকারে শাঁখা পলা ব্যবহার করে আসছেন। একটির রং সাদা, অপরটির রং লাল। এই দুটি জিনিস সম্পর্কের চিরবন্ধন এবং পবিত্রতার প্রতীক। এর যদি ব্যাখ্যা চাওয়া হয় তাহলে ব্যক্তি ভেদে নানান ব্যাখ্যা পাওয়া যাবে। তবে শাঁখা পলাকে সবাই অত্যন্ত সম্মান করেন। বহু মহিলা স্নান সেরে সিঁদুর পরার পর শাঁখা পলাকে প্রণাম করেন। হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী শাঁখা পলা ছাড়া বিয়ে অসম্পূর্ণ। এই দুটি জিনিসের চল কবে শুরু হল? কিভাবে ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েছে শাঁখা আর পলা? অনেকের মনে আবার প্রশ্ন জাগে, অবিবাহিত মেয়েরা কেন পলা ব্যবহার করতে পারেন না? সমস্ত প্রশ্নের উত্তর রয়েছে এই প্রতিবেদনে।

হিন্দু সংস্কৃতিতে শাঁখা এবং পলার সমান গুরুত্ব রয়েছে। পলা মূলত লাল রঙের একটি প্রবাল। বলা হয়, এই প্রবালের মধ্যে এমন কিছু গুণ রয়েছে যা মানুষের শরীরের উপর প্রভাব ফেলে। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে কিংবা রক্তাল্পতার সমস্যা দূর করতে এটি বেশ কার্যকর। এই বিশ্বাসে বশবর্তী হয়ে অনেকে পলা ধারণ করেন, আবার কেউ বা পলা ভেজানো জল পান করেন।

এই শাঁখা পালার ব্যবহার নিয়ে ব্রহ্মবৈবর্ত পুরণে এক কাহিনী রয়েছে। প্রায় ৫ হাজার বছর আগে থেকে শাঁখার ব্যবহারে চল রয়েছে। কথিত আছে শঙ্খাসুর নামক নিষ্ঠুর অসুরের তাণ্ডবে ত্রিভুবন অতিষ্ট হয়ে পড়ে। দেবতারা অসহায় হয়ে ছুটে যান বিষ্ণুদেবের কাছে। তখন বিষ্ণু শঙ্খাসুরকে বধ করে ত্রিলোককে রক্ষা করেছিলেন। কাহিনী এখানেই শেষ হয়নি। শঙ্খাসুরের স্ত্রী তুলসী ছিলেন অত্যন্ত ধর্মপরায়ণ নারী। তিনি নিজের স্বামীকে ফিরে পেতে নারায়ণের ধ্যানে বসেন। তুলসীর প্রার্থনায় সাড়া দেন নারায়ণ, তবে তিনি শঙ্খাসুরকে ফিরিয়ে দিতে পারেননি। তার প্রতীক হিসেবে তারই হাড় দিয়ে তৈরি করে দিয়েছিলেন শাঁখা, সেটাই তিনি তুলসীকে প্রদান করেন।

মাঝিদের জীবনযাত্রার সঙ্গে জুড়ে রয়েছে শাঁখা পলার ব্যবহারের একটি রীতি। মৎস্যজীবীদের জীবিকা বহু প্রাচীন। সেই সময় মাঝিদের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না। তাই বিবাহের পর স্ত্রীকে সেভাবে সোনা রুপোর গয়না দিতে পারতেন না। স্ত্রীকে খুশি করতে শঙ্খ আর পলার চুড়ি বানিয়ে উপহার দিতেন। সেই প্রচলন আজ বাঙালি সংস্কৃতিতে বহমান।

শাঁখা পলার ব্যবহার নিয়ে কি বলছে জ্যোতিষ শাস্ত্র?

লাল প্রবাল ব্যক্তিকে অশুভ কর্মকাণ্ডের হাত থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও লাল রঙের যে কোন পোশাক কিংবা বস্তু মঙ্গলের প্রতীক। মানসিক শান্তি এবং সুস্বাস্থ্যের জন্য শাঁখা পলা পরলে উপকার পাওয়া যায়। এমনকি যিনি ব্যবহার করেন তার কর্মদক্ষতার উন্নতি ঘটে। শরীর ঠান্ডা রাখতেও শাঁখা পলা বেশ কাজের।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version