China: চীনের অদ্ভুত আচরণ, জলের দরে সবকিছু ? বিশ্ব থেকে ছিটকে গেল বেজিং, ঘনাচ্ছে সর্বনাশ

।। প্রথম কলকাতা ।।

China: চীনের মানুষগুলো কেমন অন্যরকম আচরণ করছে। চাহিদা কমে যাচ্ছে, হু হু জীনিসের দাম কমে যাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে যখন মূল্যস্ফীতি, চীনে কেন উল্টোটা ঘটছে? ডিফ্লেশন বা মূল্য-সংকোচন কী? শি জিং পিং সরকার চাপে পড়ে গেল। এবার চীনের আঁচে পুড়বে গোটা বিশ্ব? আসল সত্যিটা লুকিয়ে যাচ্ছে বেজিং। সর্বনাশের চান্স কতটা? বিশেষজ্ঞদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। হঠাৎ করে কী এমন ঘটলো? যে বিশ্বজুড়ে যখন মূল্যস্ফীতি, জিনিসপত্রের দাম আকাশ ছোঁয়া, তখন চীনে যা ঘটছে তা অস্বাভাবিক। চীনের মানুষ বেশি খরচ করতেই চাইছে না, তাদের চাহিদা কমে যাচ্ছে। নিত্য প্রয়োজনীয় জীনিসের দাম লাফিয়ে কমছে।

দেশটার পরিস্থিতি ভালো নাকি খারাপ? শুনুন তাহলে মজুরি বা পেনশনের দিক দিয়ে চীনের মানুষ তেমন উন্নতি দেখছে না। চাকরির বাজারে প্রবল অনিশ্চয়তা, মানুষ খরচের ব্যাপারে আগ্রহ হারাচ্ছে। ধীরগতিতে বাড়তে থাকা অর্থনীতির উপর থেকে মানুষের আস্থা কমে যাচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতির হার কমতে কমতে একেবারে ঋণাত্মক পর্যায়ে চলে গেছে। ডিসফিলেশন ঘটছে ডিফ্লিমেশন বা মূল্য সংকোচন কি? যখন চাহিদা কমার কারণে পণ্যের দাম আগের চেয়ে পড়ে যায় তখন সেটাকে বলা হয় ডিফ্লেশন বা মূল্য-সংকোচন। মূল্যস্ফীতি হলে কোনও কিছু কিনতে বেশি দাম লাগে, চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের তুলনায় দাম বেশি হয়ে যায়। আর মূল্যসংকোচন তার উল্টো। এতে দ্রব্যের দাম কমে যায়, অর্থের মূল্য বাড়ে। মানে একই দামে আগের চেয়ে বেশি জিনিসপত্র কেনা যায়।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে চীনের ক্ষেত্রে এমনটা হল কেন? তাহলে কী করোনার কঠোর বিধিনিষেধ থেকে বের হয়ে আসার পরও অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সরকারের প্ল্যানিং এর অভাব রয়েছে? বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, বিভিন্ন উন্নত দেশে মহামারীর সময় সরকার জনগণকে নানা সুযোগ সুবিধা দিয়েছে, কিন্তু চীনে মানুষকে নিজের ভরসাতেই চলতে হয়েছে। দেশটির সরকারের বরাদ্দ সুযোগ-সুবিধা মূলত উৎপাদন খাতের জন্য ছিল। ফলে বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার পরও অর্থনীতিবিদেরা যেমন আশা করেছিলেন, মানুষ সেভাবে খরচ করেনি। এই মূল্য-সংকোচন ভালো ইঙ্গিত দিচ্ছে না। এটা চীনকে সাহায্য করবে না। এতে ঋণের বোঝা আরও ভারী হয়ে উঠবে, বলছে বিবিসির রিপোর্ট। চীন একা শুধু বিপদে পড়বে না, গোটা বিশ্বের জন্য এটা দু’রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে। হিসেবটা বুঝতে হবে বিশ্বজুড়ে যেসব পণ্য বিক্রি হয় তার একটা বড় অংশ আসে চীন থেকে। সেক্ষেত্রে যদি চীনে মূল্য-সংকোচন চলতেই থাকে তাহলে সেটা অন্যান্য দেশের জন্য সুফল এবং কুফল দুটাই বয়ে আনতে পারে।

এক্ষেত্রে ভালো খবরটা হচ্ছে, চিনি ডিফ্লামেশন বা মূল্য সংকোচন চলতে থাকলে অন্যান্য দেশ তুলনামূলক কম দামে চীনের জীনিস কিনতে পারবে, যেটা সেসব দেশের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে। আর খারাপ দিক হতে পারে, সেসব দেশের উৎপাদকদের এটা রিস্কে ফেলে দেবে বাজারে কম দামে চীনা পণ্য বিক্রি হলে স্থানীয় পণ্য বা ব্যবসার জন্য সেটা মোটেই ভালো হবেনা, তাতে ব্যবসায় বিনিয়োগ কমবে, কর্মসংস্থানের জায়গাও কমবে। বেকারত্ব বাড়বে। তিছাড়া চীনের বাজারে চাহিদা কমলে বিশ্বের রপ্তানি খাতেও এর আঁচ লাগবে। চীনে দু বছরের মধ্যে প্রথম এমন পরিস্থিতি হয়েছে যখন আগের বছরের তুলনায় কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স ০.৩ শতাংশ কমে গেছে। দেশটির আমদানি-রপ্তানির ছবিটাও খুব খুব একটা ভালো নয়। বিশ্লেষকরা মনে করছেন চীনের সামনে বিপদ। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ভোক্তার চাহিদা বাড়াতে চীন সরকার বেশ চাপে পড়বে।

অর্থনীতিবিদরা কি বলছেন?

তাঁরা চাইছেন চীন সরকার এমন পদক্ষেপ করুক যাতে মানুষের আয় হয়, পকেটে টাকা আসে, যাতে মানুষ বাইরে গিয়ে খরচ করতে পারে মোদ্দা কথা এখন চীনে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের প্রয়োজন। বিভিন্ন পদক্ষেপের মধ্যে ট্যাক্স কমিয়ে আনা দরকার। যদিও তেমন কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না, তেমন কোন পদক্ষেপ সরকার করছে না বলেও বিবিসির রিপোর্টে দাবি করেছেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ। ফলে, চীনের জন্য মূল্যসংকোচনই যে একমাত্র সমস্যা তেমনটা আর থাকবে না। চীনের অর্থনীতির গভীর সংকটে পড়ে যাবে। সাময়িকভাবে মূল্য-সংকোচন মানুষের জন্য দাম কমার ইতিবাচক প্রভাব রাখলেও দীর্ঘমেয়াদে বেকারত্বের সমস্যা তৈরি করতে পারে। ঋণগ্রহীতারা চাপে পড়ে যেতে পারে। করদাতা ও কৃষক শ্রেণী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে! অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও ক্ষতির মুখে পড়তে পারে এক কথায় পুরো টালমাটাল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version