China: পৃথিবীর সব জল শুষে নেবে চীন ? স্পঞ্জ সিটি আসলে কি? ভয়ঙ্কর টেকনোলজি

।। প্রথম কলকাতা ।।

China: পৃথিবীর সব জল শুষে নিতে এটা কি নামাচ্ছে চীন? সমুদ্রের নীচের স্পঞ্জ শুষে নেবে বন্যার জল? চীনের ভয়ংকর টেকনোলজি, বাংলাদেশও কি এই পথেই হাঁটছে? দেখেছেন তো এই প্রাণীগুলোকে? এগুলো দিয়েই তৈরি হচ্ছে মাটির নিচের “স্পঞ্জ সিটি”? সুড়ঙ্গই ভরসা? এক লহমায় বদলে যাবে চীনের জীবন, দেশ নয়, নদীর গতিপথ ও বদলে দেবেন শি জিং পিং। টাকার খেল দেখবে গোটা পৃথিবী। জলের সঙ্গে লড়াই নয়। এবার কাঁটা দিয়েই কাঁটা তুলবে চীন। রেকর্ড বৃষ্টি, বন্যার ভয়ঙ্কর রুপ, ভূমিধস, চীন থেকে মুছে যাবে প্রকৃতির অভিশাপ। এবার বন্যা কন্ট্রোলে মাস্টারপ্ল্যান নামাচ্ছে চীন। সমাধানের নাম “স্পঞ্জ সিটি”। স্পঞ্জ সিটি হলো এমন এক ব্যবস্থা যেখানে শহরগুলো বন্যার জলকে স্পঞ্জের মতো শুষে নিতে পারে।বন্যার জলের স্রোতের গতি কমিয়ে আনতে পারে।

আজকাল বন্যা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয় পাইপ বসিয়ে, ড্রেন তৈরি করে বন্যার জলকে যত দ্রুত সম্ভব পার করে দেওয়ার। অথবা নদীর দুই কূলে কংক্রিট দিয়ে বাঁধাই করা হয়, যাতে বন্যার জল উপচে না পড়ে। কিন্তু স্পঞ্জ সিটিতে এর উল্টো কাজ করা হয়। কাজটা হয় মূলত তিন ভাগে। প্রথমত, স্পঞ্জের মধ্যে যেমন অনেক ছোট ছোট গর্ত দিয়ে জল শুষে নেওয়া হয়, এক্ষেত্রে তেমনভাবেই শহরের মধ্যে অনেক জলাশয় তৈরি করে বন্যার জল ধারণ করা হয়।bদ্বিতীয় কাজটি হলো জলের ধারা নিয়ন্ত্রণ। বন্যার জলকে লম্বালম্বি লাইন ধরে সরিয়ে না নিয়ে আঁকাবাঁকা পথ দিয়ে জলকে প্রবাহিত হতে দেওয়া এবং গাছপালা, লতাগুল্ম দিয়ে জলের গতি কমিয়ে আনা। এর বাড়তি সুবিধে হলো, শহরের মধ্যে অনেক খোলা জায়গা তৈরি হবে, তৈরি হবে পার্ক, বন্য প্রাণীর বসবাসের জায়গা। জলজ লতাগুল্ম বন্যার জলের দূষণ কাটাতেও সাহায্য করবে। আর তৃতীয়টি হলো বন্যার জলের প্রস্থানের জায়গা, যেন জল নদী, লেক কিংবা সমুদ্রে গিয়ে পড়ে। মোদ্দা কথা, আমরা প্রকৃতির অংশ। আর সেই প্রকৃতির কাছাকাছি ফিরে যাওয়ার পথ খুঁজে পেতে হবে আমাদের।

চীনের বন্যা পরিস্থিতির কথা কে না জানে? চীনা গবেষকদের তথ্য অনুযায়ী দেশটিতে বন্যায় বার্ষিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়েই চলেছে। দেশের প্রায় ৭০ শতাংশ শহর প্লাবনভূমিতে অবস্থিত যার ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ মোকাবিলা করার জন্য কোনো না কোনো সমাধান দরকার ছিলই যে সমাধান সূত্র সামনে আনেন চীনের সবচেয়ে খ্যাতনামা নগর পরিকল্পনাবিদদের একজন ইউ কংজিয়ান। চীনের মেগাপ্রজেক্ট স্পঞ্জ সিটির জনক ২০১৫ সালের দিকে স্পঞ্জ সিটির ধারণাটি আমলে নিয়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ হয় চীন সরকার। যেখানে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয় ২০৩০ সালের মধ্যে চীনের সব মিউনিসপ্যাল এলাকার শতকরা ৮০ ভাগে স্পঞ্জ সিটি ধারণা অ্যাপ্লাই করতে হবে। বৃষ্টির জলের ৭০ শতাংশ পূনর্ব্যবহার করতে হবে। স্পঞ্জ সিটি যে কাজে দিচ্ছে তার প্রমাণ দেশটার অন্যান্য জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে। চীনের একটি বন্যাপ্রবণ শহর উহান। এটি ইয়াংসি নদী-তীরবর্তী শহর। স্পঞ্জ সিটির পাইলট প্রকল্পের অংশ হিসেবে ২০১৫ সালে শহরটিকে বেছে নেওয়া হয়। গত বছরের ৫ থেকে ৬ জুলাই উহানে রেকর্ড বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টি থেকে সৃষ্ট বন্যার জল কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সরে যেতে শুরু হয়।

এখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন খুব স্বাভাবিকভাবেই উঠে আসে ঝড়-বন্যা যেসব দেশে বেশি সেখানে কি স্পঞ্জ সিটি বিশেষ কোন কাজে লাগবে? কোন কোন বিশেষজ্ঞের মতামত তেমন কাজে আসে না যেসব জায়গায় হালকা বৃষ্টিপাত বা বন্যা হয় সেখানে স্পঞ্জসিটির ধারণা কার্যকর বেশি হয়। আরেকটা বড় প্রশ্ন হলো, অন্য কোনো দেশে কি স্পঞ্জ সিটি তৈরি করা যাবে? বিবিসির রিপোর্ট অনুযায়ী স্পঞ্জ সিটির জনক ইউ কংজিয়ান বলছেন, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ার মতো বন্য-প্রবণ দেশে এটা সম্ভব। যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর এবং রাশিয়ায় একই ধরনের প্রকল্পের বাস্তবায়ন ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে তবে স্পঞ্জ সিটির সাফল্য বেশি দেখা যাচ্ছে চীনে। কারণ চীন সরকারের ভাণ্ডারে অঢেল অর্থ। ফলে চীনের পথে হেঁটে স্পঞ্জসিটি বানিয়ে মারাত্মক সব বন্যা থেকে রক্ষা পাওয়াই যায়। যে স্পঞ্জসিটির মূল মন্ত্র বন্যার জলে কেউ প্রাণ হারাবে না। এমনকি বর্ষার মৌসুমেও। এজন্য শুধু আমাদের শিখতে হবে কীভাবে জলের সাথে সন্ধি করে বেঁচে থাকতে হয়। বন্যা এলে তার সাথে খাপ খাওয়ানো শিখতে হবে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version