মা কালীর সন্তান! পুজোয় অদ্ভুত নিয়ম, এই দেবতাকে দেখেছেন ?

।। প্রথম কলকাতা ।।

মা কালীর সন্তান মাসান ঠাকুর! এই দেবতার কথা জানেন না অনেকেই। তিনি রুষ্ট হলে ভয়াবহ ক্ষতি হতে পারে। মায়ের মতোই সেই সন্তানও পুজো পান অমাবস্যায়। আপনিও বাড়িতে সামান্য আয়োজনে সন্তুষ্ট করতে পারেন মাসান দেবতাকে। মা কালীর সন্তানকে কীভাবে অমাবস্যায় পুজো করবেন ? মাষান একটি ভয়ংকর দেবতা। এই দেবতাকে ঘিরে মানুষের মধ্যে নানা ভয় কাজ করে। লোক মুখে প্রচলিত রয়েছে, এই দেবতাকে অমান্য করলে নাকি বিপদ আসবেই। কিন্তু জানেন এই দেবতা মা কালীর সন্তান। কীভাবে পুজো হয় মাসান ঠাকুরের?

এই দেবতা কখনও কখনও ঘোড়ায় চড়ে আসেন আবার কখনও তার বাহন হয় মাছ। কালচে বা নীল রঙের মূর্তি পদ্মাসনে বসে আছেন। মাথা ভর্তি ঝাঁকড়া ঝাঁকড়া চুল, বিশাল এক জাদরেল গোঁফ বড় বড় চোখ, ভারী শরীরে এক পেট ভুঁড়ি এক হাতে গদা ধরে আছেন। পূজার উপকরণ বলতে কলাপাতার ওপর রাখা উনুনের পোড়ামাটি, মাটির তৈরি প্রদীপ, আর অবশ্যই শোল মাছ আপনি বাড়িতেও পুজো করতে চাইলে এই আয়োজন করলেই হবে। এই দেবতার নৈবেদ্যেতে দেওয়া হয় দই-চিঁড়ে, চালভাজা। আবার কখনও পোড়া চ্যাং মাছেও পেয়েও খুশি হন এই দেবতা। এছাড়া এই দেবতার রূপও হয় নানা রকম জলপাইগুড়ি এবং দার্জিলিংয়ে মাষান তৈরি হয় শোলা দিয়ে। কোচবিহারে তৈরি হয় মাটির মূর্তি দিয়ে। বিশ্বাস করা হয় মা কালীর আঠেরো সন্তানের মধ্যে জ্যেষ্ঠ সন্তান মাসান।

কোথাও বুকেই চোখ, মুখ। কেউ অপরাধ বা অন্যায় করলে বা তাদেরকে একা বাগে পেলে মাসান তাদের ধরেন বা তাদের উপর ভর করেন। দিন বা রাত, নিঝুম দুপুর বা ভর সন্ধ্যাবেলা নজরে পড়ে গেলেই হল। তিনি হলেন প্রেত দেবতা। মোটামুটিভাবে ২৪ রকমের মাসান ঠাকুর দেখতে পাওয়া যায়। মুড়িয়া মাসান, জলুয়া মাসান, শুকান মাসান। মাসানের সঙ্গে দেবাদিদেব শিবের মিল রয়েছে। কোনও কোনও গবেষক মাসানকে শিবের আরেক রূপই হিসেবেই উল্লেখ করেছেন। বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন রূপে পূজিত হন।

মাসান ঠাকুর কোচবিহার জলপাইগুড়ি অঞ্চলেয় মূলত অপদেবতা হিসেবে পূজা পেয়ে আসছেন।পাড়াগাঁয়ে কারও ওপর মাসান ঠাকুর আক্রমণ করলেই মহাবিপদ। মাসান ঠাকুর কোথাও কোথাও আবার কাঁচা খাওয়া ঠাকুর নামে পরিচিত। কারণ অনেক ক্ষেত্রেই মাসান ঠাকুরের পূজায় কাঁচা দই, কাঁচা কলা এ সব কাঁচা কাঁচা উপকরণ ব্যবহার করা হয়। সেই থেকেই এ রকম নাম। যে কালীপুজো এক সময়ে বাড়িতে ছিল নিষিদ্ধ হাত ধরে সেই দেবী প্রবেশ করলেন গৃহস্থের ঠাকুর ঘরে। এছাড়া আঠারো শতকের শেষের দিকে কালীপুজো হয়েছিল নদিয়ার কৃষ্ণনগরে। নবদ্বীপের রাজা কৃষ্ণচন্দ্র উৎসবের আকারে পুজো করেছিলেন। মায়ের পুজো এখন ঘরে ঘরে হলেও দেবী কালীর সন্তানদের চেনেন না অনেকেই।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version