।। প্রথম কলকাতা ।।
BBC BANGLA: সকাল সাড়ে সাতটা বাজলেই বহু মানুষ নেশার মতো গিয়ে রেডিওর নব ঘোরোতেন। কেউ বা স্মার্টফোনে রেডিওতে ক্লিক করে শুনে নিতেন দেশ বিদেশের খবর। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা আর নির্ভুল তথ্য পরিবেশনের জন্য বিবিসি বাংলা (BBC BANGLA) বেতার বাঙালির কাছে অত্যন্ত ভালোবাসার একটি জায়গা। শেষ হল দীর্ঘ ৮১ বছরের যাত্রা পথ। এই এতগুলো বছরের প্রবাহ পরিক্রমায় চেনা আওয়াজ হিসেবে বারংবার মন জয় করেছে করেছেন মাসুদ হোসেন, মানসী বড়ুয়া, মোয়াজ্জেম হোসেন, আকবর হোসেন সহ অনেকে। বিশেষ করে যাদের স্মার্টফোন নেই তারা এই সংবাদে বেশ শোকাহত। বিবিসি বাংলাকে এবার পাওয়া যাবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে (Digital platform)।
১৯৪১ সালের ১১ই অক্টোবর তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (Second World War) আবহ। সেই সময় শুরু হয়েছিল বিবিসি বাংলা (BBC BANGLA) বেতারের পথ চলা। প্রথম দিকে বাংলায় নিউসলেটার অনুবাদ করে বিশ্বের খবর পরিবেশন করা হত। পাশাপাশি বিভিন্ন ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের প্রচার চলত। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে জনপ্রিয়তা। ঢাকা কলকাতা কিংবা লন্ডনের সেই পরিচিত কণ্ঠস্বরের ঘোর কোটি কোটি বাঙালির মানুষের কাছে নেশার মত। ২০২২ সালে ৩১শে ডিসেম্বর রাত ১০টা ৫৯ মিনিটে শেষবারের মতো পরিক্রমার সমাপ্তি টানেন মানসী বড়ুয়া।
• কেন বন্ধ হল?
ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন বিবিসি বাংলাসহ ১০ টি ভাষার বেতার সম্প্রসারণ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মূলত আধুনিক এবং ডিজিটাল করে তোলার উদ্দেশ্যে এই সিদ্ধান্ত। এর ফলে ভবিষ্যতে আধুনিকতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে খুব সহজে জনসাধারণের মধ্যে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হবে। এছাড়াও কারণ হিসেবে রয়েছে, অত্যাধিক মূল্যস্ফীতি আর দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি। বাংলার পাশাপাশি বিবিসি তামিল, হিন্দি, উর্দু, পার্সি, চীনা, আরবি, কিরগিজ, উজবেক এবং ইন্দোনেশিয়ান ভাষাতে বেতার সম্প্রচার বন্ধ করেছে। তবে গোটা বিশ্বজুড়ে বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস যে সংবাদ পরিবেশন করে সেখানে কোনো খামতি নেই। শুধু পরিষেবার পদ্ধতিতে বদল আনা হবে। সবকিছু হয়ে যাচ্ছে ডিজিটাল ঘেঁষা। যেহেতু বর্তমানে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম গুলি সংবাদ পরিবেশনের সহজলভ্য এবং জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠেছে, তাই বিবিসি সেই পথেই হাঁটতে চায়।
• মন খারাপ শ্রোতাদের
বিবিসি বাংলা বেতার সম্প্রচারণ বন্ধ হওয়ায় মন খারাপ বহু শ্রোতার। বিবিসি বাংলার বর্তমান সম্পাদক সাবির মুস্তাফার মতে, বিবিসি বাংলা শুধু সাংবাদিকতার মান ধরে রাখেনি, বরং বছরের পর বছর আরো উন্নত হয়েছে। ১৯৪১ সালে যখন বিবিসি বাংলার পথ চলা শুরু হয় তখন সপ্তাহে ১৫ মিনিটের সম্প্রচার হত। ১৯৬৫ সাল থেকে শুরু হয় নিয়মিত সম্প্রচার। বিশ্বের কোনায় কোনায় থাকা বহু বাঙালির কাছে বিবিসি বাংলা সংবাদ পৌঁছে দিয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন, বিবিসি বাংলা যে অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল এখন তা সম্পূর্ণ ডিজিটাল হতে চলেছে। হাত বাড়ালেই অনলাইন সাইট , ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেলে পেয়ে যাবেন বিবিসি বাংলাকে। অডিও, ভিডিও, শিক্ষণীয় প্রতিবেদন, বিভিন্ন রকমের খবর, টেক্সট ফরম্যাটে বিবিসি বাংলাতে পাবেন সারা দুনিয়ার খবর। তবে বিবিসি বাংলার বেতারকে মিস করবেন অনেকেই। কারণ এটি ছিল বহু মানুষের নিত্য সঙ্গী।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম