Bangladesh Earthquake Reason: ভূকম্পে বারবার কাঁপছে বাংলাদেশ, ভয়াবহ ভূমিকম্পের রিস্কে দেশটা! কারণটা কী?

।। প্রথম কলকাতা ।।

Bangladesh Earthquake Reason: ভয়াবহ ভূমিকম্পে কাঁপল বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। শনিবার সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের দিকে অনুভূত হয় ভূকম্প । রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ২। এছাড়াও রাজশাহী, সিলেট, রংপুর, চুয়াডাঙ্গা, নোয়াখালী, কুষ্টিয়া থেকেও ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। তাৎক্ষণিক ভাবে কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশে চলতি বছরে বেশ কয়েকবার ভূমিকম্প হয়েছে। যদি ঘন ঘন দেশটা কেঁপে ওঠে তাহলে তো একটু ভয়ের ব্যাপার। বাংলাদেশে ভূমিকম্প একেবারেই অস্বাভাবিক নয়। এর আগেও বহুবার এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্নটা অন্য জায়গায়। বাংলাদেশ তো সমতল ভূমি, তাহলে বারবার ভূমিকম্প হওয়ার কারণটা কি? বাংলাদেশের অবস্থান টাই কি এই এর মূল কারণ? ভবিষ্যতে কি বাংলাদেশে বড়সড় ভূমিকম্প হতে পারে ? ইতিমধ্যেই দেশটার বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়ে গবেষণাও করছেন।

•দুই প্লেটের সংযোগস্থলে বাংলাদেশ

হিসাব করলে, গত মে মাস থেকে শুরু করে চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত ছোট থেকে মাঝারি ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে বাংলাদেশ। যার প্রত্যেকটার কেন্দ্রস্থল বা উৎপত্তিস্থল রয়েছে দেশটার মধ্যে। বাংলাদেশে বড়সড় ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আসলে বার্মিজ প্লেট আর ইন্ডিয়ান প্লেটের সংযোগস্থলে রয়েছে বাংলাদেশ। এই সংযোগ স্থলেই রয়েছে অধিকাংশ পার্বত্য এলাকাসহ দেশটার বেশিরভাগ অঞ্চল। এই দুই প্লেটের মধ্যে পশ্চিম দিকে সরে যাচ্ছে বার্মিজ প্লেট আর উত্তর-পূর্ব দিকে সরে যাচ্ছে ইন্ডিয়ান প্লেট। প্লেটের সংযোগস্থলে জমা রয়েছে প্রচুর শক্তি। দুই প্লেটের পরস্পরের গতির কারণে এই শক্তি যখনই বেরিয়ে আসার পথ খোঁজে তখনই কেঁপে উঠছে বাংলাদেশ। আর এই শক্তি কিন্তু একদিন না একদিন ঠিক বেরিয়ে আসবে। দুদিন আগে, নয় দুদিন পরে।

• কতটা ঝুঁকিতে?

বাংলাদেশের শক্তিশালী ভূমিকম্পের মূল উৎস সিলেট থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত যে পার্বত্য এলাকা রয়েছে সেটি। শুধু বাংলাদেশ নয়, একইভাবে ঝুঁকিতে রয়েছে ভারতের মনিপুর মিজোরাম আর মিয়ানমারের পার্বত্য এলাকা। বাংলাদেশের যেভাবে ভূমিকম্প হচ্ছে তা কিন্তু মৃদু থেকে মাঝারি। রয়েছে বড় ভূমিকম্পের প্রবণতা, সেটা যে কোন সময়ই হতে পারে। আসলে প্রকৃতিকে এখনো মানুষ পুরোপুরি রপ্ত করতে পারেনি। তাই বড় ভূমিকম্প কখন হবে তার নির্দিষ্ট করে আগে থেকে বলা যায় না। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় বলা হয়েছিল, গঙ্গা আর ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা একটা হিডেন ফল্ট রয়েছে, যা বাংলাদেশে তৈরি করতে পারে রিখটার স্কেলের নয় মাত্রার ভূমিকম্প। এই হিডেন ফল্ট রয়েছে কিন্তু ওই দুই প্লেটের সংযোগস্থলে। সব থেকে খারাপ অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশের সিলেট থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত দুটো প্লেটের সংযোগ। বিশেষজ্ঞদের মতে গত ৮০০ থেকে ১০০০ বছরের মধ্যে এখানে জমে থাকা শক্তি বের হয়নি। সাধারণত এই ধরনের প্লেটের সংযোগস্থলের ভূমিকম্পের বেশিরভাগই মাত্রা হয় ৭.৫ এর উপরে। পরিনাম হয় ধ্বংসাত্মক।

হয়তো ভাবছেন, মাঝে মাঝে ছোট ছোট ভূমিকম্পে অভ্যন্তরীণ শক্তি বাইরে বেরিয়ে আসছে। তাহলে কেন বড় ধরনের ভূমিকম্প হতে যাবে? আসলে ব্যাপারটা এমন নয়। যে পরিমাণ শক্তি জমা থাকে, তা যদি হঠাৎ বেরিয়ে আসে তাহলে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হওয়া খুবই স্বাভাবিক। এত পরিমাণ শক্তি ছোট ছোট ভূমিকম্পের মাধ্যমে বের হয়ে আসা কখনো সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে কয়েক হাজার বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। যদিও শুধু বাংলাদেশ নয়, একই ঝুঁকিতে রয়েছে ভারত সহ বিশ্বের বহু দেশ। গ্লোবাল সিসমিক সংস্থার মানচিত্র বলছে, ভারত, বাংলাদেশের পাশাপাশি চীন, জাপান, নেপাল, তুরস্ক , ইরান, ইন্দোনেশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং চিলি ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে অবস্থান করছে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version