বিশ্বে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য করছে বাংলাদেশে, লাভ গুনছে প্রচুর! পাশে অস্ট্রেলিয়া

।। প্রথম কলকাতা ।।

বিশ্বে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য করছে বাংলাদেশে। লাভ গুনছে প্রচুর। স্বল্পোন্নত দেশ বলেই কি এত সুবিধা? উন্নয়নশীলের তকমা পেলেই হারাবে সুযোগ। কিন্তু পাশে আছে অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশের শুল্ক ও কোটা মুক্ত বাণিজ্যে কোন আঁচ লাগতে দেবে না। বাংলাদেশকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার এত ইন্টারেস্ট কেন? লুকিয়ে কোন স্বার্থ? অস্ট্রেলিয়ার জ্যাকপটের ঠিকানা বাংলাদেশের কাছে!

অস্ট্রেলিয়া আর বাংলাদেশের বন্ধুত্বের গভীরতা বহুদূর। সেই ২০০৩ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশকে কোটা ফ্রি বাণিজ্যের সুবিধা দিয়ে আসছে। ২০২১ সালের দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় টিফা চুক্তি। বিনিয়োগ আর বাণিজ্য এক ধাক্কায় বেড়ে যায় অনেকটা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়ায় রপ্তানি করেছে প্রায় ৮০৪.৬৩ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। অস্ট্রেলিয়া থেকে আমদানি করেছে ৫৯৬.৭০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। সময়ের সাথে সাথে পরিমাণটাও বেড়েছে। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান শিক্ষা,কারিগরি প্রশিক্ষণ আর জ্বালানি চাহিদা পূরণে অস্ট্রেলিয়া পেয়েছে দুর্দান্ত সুযোগ।

অস্ট্রেলিয়ায় বাণিজ্য করতে গেলে বাংলাদেশকে শুল্কের ঝামেলা পোহাতে হবে না। শুল্কমুক্ত ও কোটা মুক্ত সুবিধা পেতে চলেছে ভারতের এই প্রতিবেশী দেশ। বাংলাদেশ শুল্ক এবং কোটা মুক্ত বাণিজ্য সুবিধা পাওয়ায় লাভটাও হয় অনেকটা। দেশটা কিন্তু স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীলের পথে যাত্রা করেছে। তারপরেও অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশকে দিচ্ছে বিশেষ ছাড়। বাংলাদেশ পোশাক শিল্প, কৃষি, রেমিট্যান্স, ক্ষুদ্র অর্থনীতি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা সহ আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে গত ১০ বছরে কোন কোন উন্নয়ন করেছে সেই বিষয়টি তুলে ধরে অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্য বিষয়ক সহকারী মন্ত্রীর কাছে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশকে এত ছাড় দিচ্ছে কেন?

মূল কারণ, বাংলাদেশের বিশাল বাজার। বাংলাদেশের আশেপাশেই দক্ষিণ এশিয়ার স্থলঅঞ্চলে প্রায় ৩০০ মিলিয়নেরও বেশি জনগণের বাজার আছে। যেখানে প্রবেশের জন্য প্রয়োজন বাংলাদেশকে। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির যে উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে, তা বুঝেছিল দুই দেশই। অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের সিরামিক পণ্য, পোশাক, ওষুধ সহ চামড়াজাত পণ্যের প্রচুর চাহিদা। অপরদিকে অস্ট্রেলিয়ার কাছে বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য লাভজনক। বাংলাদেশের বিনিয়োগ পলিসি খুবই ভালো। বিনিয়োগ যেমন নিরাপদ, তেমনই প্রয়োজনে বিনিয়োগ করা অর্থ লাভ সহ যে কোনো সময় ফিরিয়ে নেওয়া যায়। বাংলাদেশ সরকার রীতিমত আইন করে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করেছে। শুধু অস্ট্রেলিয়া নয়, বিভিন্ন দেশের বহু বিনিয়োগকারী এখন একটু বেশি ঝুঁকছে বাংলাদেশের বাজারের দিকে।

সবকিছু ঠিক থাকলে, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় পৌঁছে যাবে। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় রয়েছে বলেই বৈদেশিক বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে শুল্ক ছাড় পায়। বিশেষ করে ইউরোপীয় মার্কেট কিংবা যুক্তরাজ্যে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে কোন শুল্ক দিতে হয় না। এছাড়াও ঠিক কতটা পরিমাণে রপ্তানি করবে সেক্ষেত্রেও বাঁধাধরা নিয়ম নেই। এই সুবিধা বাংলাদেশ পাচ্ছে প্রায় কুড়ি বছরের বেশি সময় ধরে। যখনই দেশটা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ ঘটবে, তখনই চীন ভারত কানাডা প্রভৃতি দেশ থেকে বাংলাদেশের শুল্কমুক্ত সুবিধা উঠে যেতে পারে। সেই দিনটা আসার আগেই বাংলাদেশের উচিত, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করে রাখা, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version