।। প্রথম কলকাতা ।।
সাবধান, চীনা ঋণের ফাঁদে বাংলাদেশ! কিনবে চারটে পেল্লাই জাহাজ। ঋণ তো নিচ্ছে কিন্তু শোধ করতে পারবে তো? ভয় পাচ্ছে দেশটার অর্থনীতিবিদরা। একদিকে ডলার সংকট তার উপর আগুন বাজার দর, এরই মাঝে মোটা ঋণে জাহাজ কেনা কতটা যুক্তিসঙ্গত? আদতে চীন কি বাংলাদেশের বন্ধু? ঋণের টাকা ফেরত না পেলে হয়ে উঠবে চরম শত্রু। বাংলাদেশের হাল হতে পারে শ্রীলঙ্কা কিংবা পাকিস্তানের মতো।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, রেল এবং সড়ক সহ বাংলাদেশে বাস্তবায়ন হচ্ছে চীনা ঋণে নেওয়া ১৪টি প্রকল্প। মোট ঋণের পরিমাণ এক হাজার কোটি ডলারের বেশি। ফের চীনা ঋণে বাংলাদেশ কিনছে চারটে জাহাজ। চীন দিচ্ছে প্রায় সাড়ে ২৩ কোটি ডলারের সরবরাহকারি ঋণ। শোধ করতে হবে ১৫ বছরের মধ্যে, তাও ২.২% সুদের হারে। যেভাবে ডলার সংকটে দেশটা ধুঁকছে সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে জাহাজ কেনার সিদ্ধান্ত কি ঠিক? ভালো চোখে দেখছেন না দেশটার অর্থনীতিবিদরা। এই পরিকল্পনা থেকে সরে আসার পরামর্শ দিয়েছেন। মনে করছেন, জাহাজের ভাড়া আগের তুলনায় নেমে এসেছে প্রায় দশ ভাগের এক ভাগে। দেশটার বেসরকারি খাতে সমুদ্রগামী জাহাজের সংখ্যা ৯৩টা। এই মুহূর্তে নতুন জাহাজ না কিনলেও হত।
কিন্তু চীনা ঋণে অসুবিধাটা কোথায়? যা নিয়ে চিন্তিত অর্থনীতিবিদরা। আসলে পুরোটাই সরবরাহকারী ঋণ। ঠিকাদার ঠিক করে চিনা কর্তৃপক্ষ। ঋণ নিয়ে দর কষাকষির সময় ঠিকাদারি সংস্থা ঠিক করে দেয় দাম। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন থেকে যায় কাজের মান এবং দর নিয়ে। চীনা ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময়সীমাও অনেকটা কম।
চীন কি বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু? অতীতের দৃষ্টান্ত কিন্তু তা বলছে না। চীন সর্বদা পাশে থেকেছে মিয়ানমারের। আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো বারংবার চেষ্টা করেছে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা ফেরাতে, কিন্তু রাজি করাতে পারেনি। একসময় যে পাকিস্তান বাঙালির উপর প্রচণ্ড অত্যাচার করেছে সেই পাকিস্তানকে সমর্থন করেছে চীন। ১৯৭১ এ বিরোধিতা করেছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার । বাংলাদেশের খুব কম পণ্য রপ্তানি হয় চীনে। অধিকাংশ পণ্য যায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন আর যুক্তরাষ্ট্রে। প্রতিবছর বাংলাদেশী প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের বেশিরভাগটাই আসে মধ্যপ্রাচ্য থেকে। অথচ আজকে দাঁড়িয়ে সেই চীন মোটা টাকার ঋণ দিয়ে সাজাচ্ছে বাংলাদেশকে। তাহলে কি চীনা ঋণেই রয়েছে কূটনীতির ফাঁদ? গোটা বিশ্বজুড়ে চীন চালাতে চায় বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিসিয়েটিভ পরিকল্পনা। যা অর্থায়ন এবং অবকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে চীনকে যুক্ত করে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যাকে বারংবার বলে এসেছে ‘ঋণ ফাঁদ কূটনীতি’। গোটা বিশ্ব দেখছে, কিভাবে বিপর্যস্ত বিধ্বস্ত হয়ে পড়ছে শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, নেপাল, কেনিয়া, সুদান, জিম্বাবুয়ে, ইথিওপিয়া, সার্বিয়া, সহ বহু দেশের অর্থনীতি। চীনা ঋণ পরিশোধ করতে পারেনি বলে শ্রীলঙ্কাকে হারাতে হয়েছিল হাম্বানটোটা বন্দর। অর্থনৈতিক করিডোর ঋণের পাহাড় চাপিয়েছে পাকিস্তানের মাথায়। আসলে এত কথা আসতই না, যদি না বাংলাদেশে ডলার সংকট থাকত। ঋণ নিলে তা পরিশোধও করতে হবে। ব্যর্থ হলে বন্ধু থেকে শত্রু হয়ে উঠতে পারে চীন। আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম