Bangladesh: বাংলাদেশের বুকে এক টুকরো সিঙ্গাপুর, পিছিয়ে পড়া পটুয়াখালী আজ রোল মডেল!

।। প্রথম কলকাতা ।।

Bangladesh: বাংলাদেশের বুকে এক টুকরো সিঙ্গাপুর। পটুয়াখালী ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে নান্দনিক শহরে। নৈসর্গিক সৌন্দর্যের সমৃদ্ধ পটুয়াখালী বাংলাদেশের গর্ব। যা বরিশাল বিভাগের সব থেকে বড় নান্দনিক শহর হয়ে উঠেছে। ভাবলে অবাক হবেন, মাত্র তিন বছরের মধ্যে পটুয়াখালী গড়ে উঠেছে সিঙ্গাপুরের আদলে। একসময় এই শহর ছিল অনুন্নত, পিছিয়ে পড়া অঞ্চল। এখন সমগ্র বাংলাদেশের রোল মডেল। পটুয়াখালীতে এমন কিছু স্থান রয়েছে যেখানে গেলে আপনার বাড়ি ফিরতে ইচ্ছা হবে না। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মোহ বড্ড কঠিন, যার জাল বিছানো পটুয়াখালিতে। যেখানে আটকে যান লক্ষ লক্ষ পর্যটকরা। পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ অব্যাহত থাকলে একদিন গোটা বিশ্ব চিনবে পটুয়াখালীকে।

বাংলাদেশ সরকার সিঙ্গাপুরের আদলে পটুয়াখালীকে ঢেলে সাজিয়েছে। এই পৌরনগরীতে ঢুকতেই পাবেন ফোর লেন। যেখানে ছিল পচা দিঘী তা খনন করে লাগানো হয়েছে সুন্দর গাছ। রাস্তার দু ধারে রয়েছে দৃষ্টি নন্দন আলোকসজ্জা। ধীরে ধীরে গড়ে উঠছে বড় বড় অবকাঠামো থেকে শুরু করে নানান শিল্প প্রতিষ্ঠান। বলাই যায়, এই শহর একদিন বাংলাদেশের গর্ব হবে। এখানে কর্মসংস্থান হবে প্রচুর। ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াবে অর্থনীতি। ইতিমধ্যেই এই জেলার অর্থনীতি আগের থেকে অনেক মজবুত হয়েছে। মসৃণ হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। সিসি ক্যামেরা দিয়ে নজরদারি চালানো হয় পুরো পৌরসভার উপর। সিঙ্গাপুরের আদলে শহর মনে হলেও ঢেকে রয়েছে সবুজের চাদরে। যেখানে কোন ঝামেলা নেই। পাবেন মুক্ত বাতাস। অবসর সময় কাটানোর জন্য পাবেন প্রচুর বিনোদন কেন্দ্র। যেখানে বাংলাদেশকে বারংবার দূষিত দেশের তকমা পেতে হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশের বুকে গড়ে উঠছে সিঙ্গাপুরের আদলে কম বায়ু দূষণের নগরী। এই রাস্তায় চলতে গেলে আপনাকে জ্যামে আটকাতে হবে না। চারিদিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিপাটি পরিবেশ। নেই কল কারখানার ধোঁয়া। নদীর জল এখনো বিষিয়ে যায়নি। এক কথায় বলতে গেলে, পটুয়াখালী হয়ে হয়ে উঠছে পরিবেশবান্ধব শহর, অথচ আধুনিক সমস্ত সুযোগ সুবিধা পাবেন। এসবের মাঝেও এখনো এই শহর নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা থেমে নেই। আপাতত এই শহরকে সিটি কর্পোরেশন করা যায় কিনা সেই বিষয়ে ভাবনা চিন্তা চলছে। আশা করা হচ্ছে, একসময় এই পটুয়াখালী বাংলাদেশের অন্যতম একটি অর্থনৈতিক জোন হয়ে উঠবে। বিদেশে গিয়ে মানুষ যে উন্নয়নের চিত্র দেখতো, সেই চিত্র দেখা যাবে বাংলাদেশের এই শহরে। বর্তমানে পটুয়াখালী পৌরসভায় এক লক্ষেরও বেশি মানুষের বসবাস।

বাংলাদেশ সরকারের নানামুখী উদ্যোগের ফল হিসেবে দেশটির দক্ষিণের জনপথ এই পটুয়াখালী শহর এবং সংলগ্ন এলাকাগুলো জুড়ে চলছে প্রচুর উন্নয়নের মহড়া। পরিকল্পনা অনুযায়ী, পটুয়াখালী জুড়ে গড়ে উঠবে একাধিক সড়ক, নান্দনিক লেক সহ ব্রিজ। বর্তমানে শহরটি এখন একটি ব্যস্তময় শহরে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশবাসী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন এই শহরের কাজ সম্পন্ন হওয়ার জন্য। মনে করা হচ্ছে,।যদি এই কাজের ধারাবাহিকতা বজায় থাকে তাহলে সুদিন আর বেশি দূরে নেই। থাইল্যান্ড কিংবা সিঙ্গাপুরের মতোই উন্নত শহরে পরিণত হবে পটুয়াখালী। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই জেলার ঐতিহ্যবাহী বহালগাছিয়া খালকে তার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে। তার জন্য উপজেলার পিছনের বাঁধটি সরিয়ে সেখানে তৈরি করা হবে ৮১ মিটারের একটি দৃষ্টিনন্দন ব্রিজ। তৈরি করা হবে অনেকটা হাতির ঝিলের ব্রিজের মতো। পটুয়াখালীর পৌর শহরকে মাদার বুনিয়া ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত করতে নির্মাণ করা হবে ৪৫ মিটারের একটি ব্রিজ। মোটামুটি বারোটি ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পটুয়াখালী জেলা জুড়ে চলবে উন্নয়নের মেলা। পটুয়াখালী পৌরসভার সঙ্গে যোগ সূত্র স্থাপন হবে একাধিক পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, শেখ হাসিনা সেনানিবাস, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, পায়রা সমুদ্র বন্দর, কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র এবং সাবমেরিন ক্যাবল স্টেশনের সঙ্গে।

বাংলাদেশের পটুয়াখালী সৌন্দর্যের লীলাভূমি, যাকে বলা হয় সাগর কন্যা। এই জেলার ঐতিহ্য বহনকারী বেলাভূমি হল বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে থাকা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। বলা হয় এই কুয়াকাটা থেকে বিভিন্ন ঋতুতে সাগরের নানা রূপ পর্যটকরা উপভোগ করতে পারেন। পটুয়াখালীর দর্শনীয় স্থান গুলির মধ্যে রয়েছে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পায়রা সমুদ্র বন্দর, রাখাইন পল্লী, সোনার চর, কানাই বলাই দিঘী, জলের জাদুঘর কালাইয়া প্রাচীন বন্দর, এশিয়ার বৃহত্তম বীজ বর্ধন খামার সহ অনেক কিছু। আসলেই তালিকাটা বড্ড লম্বা।

আপনি যদি অপার নৈসর্গিক সৌন্দর্যের ছোঁয়া পেতে চান তাহলে আপনাকে আসতে হবে এই পটুয়াখালীতে। এই সৌন্দর্য ঠিক কতটা মোহময় তা বলে বোঝানো যাবে না। একমাত্র চোখে দেখেই উপভোগ করা যায়। মূলত ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এখানকার সৈকত থেকে আপনি কেবলমাত্র অসাধারণ সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন। সূর্যোদয়ের সময় মনে হবে, এক বিশাল আলোক রাশির গোলা ধীরে ধীরে সাগরের জলরাশি ভেদ করে উপর দিকে উঠছে। আর সূর্যাস্তের সময় সেই আগুনের গোলা তার সমস্ত দম্ভ কমিয়ে ধীরে ধীরে বিলিয়ে যাচ্ছে সাগরের ঢেউয়ের মাঝে। বিশেষ করে পূর্ণিমার রাতে বিশ্বের সমস্ত সৌন্দর্যকে যেন হার মানিয়ে দেয় এই সৈকতের সৌন্দর্য। বাংলাদেশের পটুয়াখালী জেলা দর্শনীয় স্থানে সমৃদ্ধ। এটি বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। এখানে প্রচুর সমুদ্র সৈকত রয়েছে। পটুয়াখালী কুয়াকাটার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আরাকানদের ইতিহাস। এখানেই রয়েছে বাংলাদেশের প্রায় ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নৈসর্গিক সমুদ্র সৈকত। সারাদিনে তুমুল ব্যস্ততার মাঝে যদি মন হালকা করতে চান তাহলে এখানে যেতে পারেন। ঠকবেন না।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version