Bangladesh: মাটিতে প্রচুর খনিজ সম্পদ, কিন্তু কপাল ফেরে বাংলাদেশ আমদানি নির্ভর! গলদটা কোথায়?

।। প্রথম কলকাতা ।।

Bangladesh: সোনায় সোহাগা বাংলাদেশ। কপাল ফেরে আজ আমদানি নির্ভর। মাটির নিচে জ্যাকপট থাকতেও ভারতের থেকে পিছিয়ে। উত্তোলন আর কাজে লাগাতে পারলেই কিন্তু কেল্লাফতে। ভবিষ্যতের চিন্তা থাকবে না। বাংলাদেশ চাইলেই তৈরি করতে পারে হাজার হাজার কোটি টাকার বাজার। ভাঁড়ারে জমতে পারে মোটা অঙ্কের রাজস্ব। কিন্তু কিসের এত বাধা? বাংলাদেশ নিজের সম্পদ থাকতেও কেন ব্যবহার করতে পারছে না? বাংলাদেশ ঠিক কতটা খনিজ সম্পদের মালিক জানেন? শুনলে রীতিমত হাঁ হয়ে যাবেন।

এই যে দেশটা জ্বালানি সংকট আর ডলার সংকটের জেরে এত জেরবার, এসব কিছুই হত না। বরং অন্য দেশ নির্ভর করত বাংলাদেশের উপর। চাইলেই নিজেকে গোটা পৃথিবীর কাছে একটা সম্ভাবনাময় দেশ হিসেবে তুলে ধরতে পারত। নিঃসন্দেহে আগের থেকে বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়েছে, কিন্তু আমদানি বেড়েছে তার থেকে অনেকটা বেশি। খনিজ সম্পদ থাকলেও উৎপাদন কম। চড়া দামে কিনতে হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে। সম্প্রতি বাংলাদেশের জিএসবি অর্থাৎ ভূতাত্বিক জরিপ অধিদপ্তর বাংলাদেশের মজুদ খনিজ সম্পদের বাজার মূল্য প্রকাশ করেছে। যা দেখলে হকচকিয়ে যাবেন। হিসেব বলছে, এই মুহূর্তে বাংলাদেশে প্রাকৃতিক ভাবে মজুদ খনিজ সম্পদের মূল্য প্রায় ২.২৬ ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি। বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২ কোটি ৪১ লক্ষ ৯৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। যদিও হিসেবের মধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাসকে ধরেনি। প্রাকৃতিক গ্যাস ধরলে এই অঙ্কটা আরো কয়েকগুণ বেড়ে যেত।

নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ঘেরা দেশটায় নুড়ি পাথরের দামও অনেক। ৬ জেলায় মজুদ আছে প্রায় ২২০ টন নুড়ি পাথর। মাধবপুর, বিজয়পুর, মধুপুর সহ দেশটার বহু জায়গায় জমা রয়েছে মূল্যবান সাদামাটি। শুধুমাত্র নওগাঁওতে রয়েছে আড়াই হাজার কোটি টনের বেশি চুনাপাথর। কয়লা রয়েছে প্রায় ৭২৫ কোটি টন। পিট কয়লা রয়েছে প্রায় ৬০ কোটি টন। নদী ঘেরা এই দেশের বেশিরভাগ বড় নদীতেই রয়েছে খনিজ বালি।

তাহলে গলদটা কোথায়? মাঝেমধ্যেই দেখবেন, শিরোনামে চলে আসে বাংলাদেশ প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন করছে। আসলে দেশটা মজুদ খনিজ সম্পদের মধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাসকে একটু বেশি গুরুত্ব দেয়। কিন্তু দেশটাতে আরো অনেক ধরনের গ্যাস রয়েছে যা উত্তোলন করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে যথাযথ উদ্যোগ আর বিনিয়োগের প্রয়োজন। চট্টগ্রামে গ্যাস আর জ্বালানি তেল মজুদের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে, অথচ জ্বালানি বিভাগ প্রায় প্রচুর কূপ খননের পরিকল্পনা নিলেও চট্টগ্রামকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। মাটির অত্যন্ত গভীর থেকে কয়লা উত্তোলনের সহজলভ্য প্রযুক্তি এখনো বাংলাদেশের কাছে নেই। যদি দেশটা খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান আর উত্তোলনে উদ্যোগী হয় তাহলে বৈদেশিক মুদ্রার একটা বড় উৎস হতে পারে। একটু খেয়াল করে দেখবেন, বর্তমানে বাংলাদেশে একটু বেশি ডলার সংকটে ভুগছে। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩৬ শতাংশ বেশি। ভারত আর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সূচক, যেমন মাথাপিছু আয়, আনুপাতিক জিডিপি কিংবা আমদানি রপ্তানি কিছুটা কাছাকাছি। কিন্তু ভারত যেভাবে আর্থিক পরিস্থিতি সামলাচ্ছে বাংলাদেশে সেভাবে পারচ্ছে না। অথচ বাংলাদেশের অবস্থা পাকিস্তান কিংবা শ্রীলঙ্কার থেকে অনেক অনেক ভালো।

বাংলাদেশ কিন্তু চাইলেই প্রাকৃতিক সম্পদের উপর নির্ভর করে যথাযথ বিনিয়োগ করতে পারে। যদি করে, এই আমদানি নির্ভর দুর্দশা থেকে বেরিয়ে আসতে বেশি সময় লাগবে না। তখন বাংলাদেশ হবে এশিয়ার অন্যতম অর্থনীতি ভিত্তিক একটা দেশ। রপ্তানিই হবে দেশটার অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version