Walking catfishfarming : ৯০০টাকা কেজি মাগুর চাষ করে ফেলা যায় বাড়িতেই, মোটা টাকা মুনাফা

।। প্রথম কলকাতা ।।

Walking catfishfarming: আজকাল দেশি মাগুর মাছ তেমন পাওয়া যায় না। বাজারে যেটুকু পাওয়া যায় তা অনেকেরই কেনার সাধ্যের বাইরে। অথচ ইচ্ছে করলেই বাড়িতেই দেশি মাগুর মাছের চাষ করা যায়। এই চাষে বিশেষ ঝামেলা নেই। আবার ঘরে চাষ করেই টাটকা মাগুর মাছের স্বাদ নেওয়া যায়। অনেকে আবার ঘরের চৌবাচ্চায় ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতেও মাগুর মাছের চাষ করতে পারেন। বাজারে  দেশি মাগুরের দাম ৯০০ টাকা কেজি। তাই অন্য কাজের ফাঁকে বাড়িতেই দেশি মাগুরের চাষ করে আলাদা উপার্জনের পথ খুঁজে নিতে পারেন অনেকেই।

প্রথমেই এজন্য একটি চৌবাচ্চা প্রয়োজন। ছ ফুট বাই ছ ফুট আকারের একটি চৌবাচ্চায় অন্তত ২০০ পিস মাগুর মাছ একসঙ্গে ছাড়া যায়। বাড়ির বাগানে জায়গা না থাকলে বাড়ির ছাদেও চৌবাচ্চা বানিয়ে নিতে পারেন। সেখানেও এই চাষ স্বচ্ছন্দে করা যায়। তবে চৌবাচ্চার কাছাকাছি জলের কল থাকা সুবিধাজনক। কারণ কিছুদিন অন্তর চৌবাচ্চার জল বদল করতে হবে। সেজন্য চৌবাচ্চা তৈরি সময় জল বের হওয়ার পথ রাখতে হবে। চৌবাচ্চাটি অন্তত তিন চার ফুট উচ্চতার হতে হবে। চৌবাচ্চার নিচের দিকে জল বের হওয়ার পথ তার জালি দিয়ে ঘিরে দিন। নচেৎ সেই জায়গা দিয়ে মাছ বেরিয়ে যাবার সম্ভাবনা থেকে যাবে। নালি পথের মুখ থার্মোকল, কাপড় বা ঢাকনা জাতীয় কিছু দিয়ে বন্ধ রাখতে হবে। যাতে প্রয়োজনের সময় জল না বেরিয়ে যায়।

প্রথমে চৌবাচ্চাটি ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। জীবাণুমুক্ত করতে চৌবাচ্চায় ১০০ গ্রাম চুন গুলিয়ে ছিটিয়ে দিতে হবে। চুন দেওয়ার পর তিন ভাগের একভাগ জল ভর্তি করুন। পরদিন এক দু কেজি গোবর, এক দু কেজি মুরগির বিষ্ঠা ছিটিয়ে দিতে হবে। দু’একদিন পর জল ভালোভাবে নেড়ে দেড়শো গ্রাম সরষে খোল, একশো গ্রাম চালের কুঁড়া, ৫০ গ্রাম শুঁটকি মাছ ও ২৫ গ্রাম করে ইউরিয়া দিতে হবে। দু’তিন দিনের মধ্যে জলের রঙ সবুজ হয়ে যাবে। এর পর মাছ ছাড়তে হবে।

যে কোনো সরকারি, বেসরকারি হ্যাচারি, পোনা বিক্রেতা ও সরকারি কৃষি খামারে পোনা পাওয়া যায়। ১ ইঞ্চি মাপের দুশোটি পোনা একটি চৌবাচ্চায় ছাড়া যেতে পারে।মাছের চারাপোনা জল ভর্তি পলিথিনের ব্যাগে নিয়ে আসতে হবে। প্রথমেই তা চৌবাচ্চায় ছেড়ে না দিয়ে মাছ ভর্তি পলিথিন চৌবাচ্চার জলে ভাসিয়ে রাখুন। এতে দুই জলের উষ্ণতা সমান হবে। এতে চৌবাচ্চার জল সহ্য করে নেওয়া চারাপোনার পক্ষে অনেক সহজ হবে। প্রতিদিন চৌবাচ্চার জল নাড়াচাড়া করা উচিত। এতে জলে অক্সিজেন সরবরাহ ভালো থাকে। প্রথমেই অনেকটা জল রাখা উচিত নয়। মাছের আকার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জল বাড়ানো প্রয়োজন।

পোনা ছাড়ার পর দিন থেকে সয়াবিন, তিল, সরষের খোল ৪০ শতাংশ, আতপ চালের কুঁড়ো ৪০ শতাংশ, শুটকি মাছের গুঁড়ো ২০ শতাংশ করে দিতে হবে। এই খাবারে মাগুর মাছ তাড়াতাড়ি বাড়ে। তবে বেশি খাবার দেবেন না।
তিন সপ্তাহ অন্তর চৌবাচ্চার জল পাল্টে দিতে হবে। এরপর ১৫ গ্রাম চুন গুলে জলে ছিটিয়ে দিতে হবে। মাঝেমধ্যে জলের অম্লতা পরীক্ষা করে নিন।

মাছের ওজন ২০০-২৫০ গ্রাম হলেই বিক্রি করে দেওয়া ভালো। কারণ এ রকম মাছের চাহিদা বেশি। তাতে অল্প সময়ে আবার মাছ ছাড়া যাবে। মনে রাখবেন মাছের সঠিক বৃদ্ধির জন্য পর্যাপ্ত আলো-বাতাস দরকার। আবার রোদের তাপে চৌবাচ্চার জল যাতে গরম না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তবে মাগুর মাছ সহজে মরে না। তাই চিন্তার বিশেষ কারণ নেই। পরবর্তী সময়ে বড় চৌবাচ্চায় চাষ করার মাধ্যমে ব্যবসা বাড়াতে পারেন।

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version