।। প্রথম কলকাতা।।
National Science Day: ফেব্রুয়ারি যেমন প্রেমের মরসুম নিয়ে আসে, তেমনই এই মাসের শেষ দিনটি ‘জাতীয় বিজ্ঞান দিবস’ হিসেবে পালিত হয়। কিন্তু অনেকের মনে প্রশ্ন থাকতেই পারে, ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিনটিকে কেন জাতীয় বিজ্ঞান দিবসের (National Science Day) জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে? প্রতি বছর সারা দেশ জুড়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় বিজ্ঞান দিবস পালিত হয়ে থাকে। সাল ১৯৮৬, National Council for Science and Technology Communication অর্থাৎ NCSTC এই দিনটিকে জাতীয় বিজ্ঞান দিবস হিসেবে পালন করার জন্য ভারত সরকারের কাছে আবেদন জানায়। পরবর্তীতে ১৯৮৭ থেকে এই দিনটি জাতীয় বিজ্ঞান দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। সমস্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সহ প্রযুক্তিগত, বিজ্ঞানগত প্রতিষ্ঠানে এই অনুষ্ঠানটি পালিত হয়। তবে এটি পালনের জন্য শুধু শুধু ২৮ ফেব্রুয়ারিকে বেছে নেওয়া হয়নি। এর পেছনে রয়েছে ‘রামন এফেক্ট’। সেটা কী?
ভারতীয় পদার্থবিজ্ঞানী সি ভি রামনের (C. V. Raman) কথা সকলেই জানেন। অন্ততপক্ষে যাঁদের বিজ্ঞান সম্পর্কিত বিষয়ে আগ্রহ রয়েছে, তাঁরা এই নামটির সঙ্গে বেশি করে পরিচিত। তিনি ১৯২৮ সালে ‘রামন এফেক্ট’ (Raman Effect) আবিষ্কার করেন। যার জেরে ১৯৩০-এ পদার্থে নোবেল পুরস্কার জেতেন।
‘রামন এফেক্ট’ কী?
‘রামন এফেক্ট’ বা ‘রামন স্ক্যাট্যারিং’ আলোর বিচ্ছুরণ সংক্রান্ত একটি আবিষ্কার। আলো যখন স্বচ্ছ পদার্থের মধ্যে দিয়ে যায়, তখন আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য পরিবর্তিত হয়। সোজা ভাষায় বলতে গেলে, যখন আলো কোনও বস্তুর ওপর দিয়ে যায় তখন তা ভেঙে গিয়ে যে বিচ্ছুরিত হয় তার ব্যাখ্যা এই ‘রামন এফেক্ট’। কলকাতার ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স’-এ বসে এই যুগান্তকারী সৃষ্টি করেছিলেন সি ভি রামন। যদিও বিষয়টি প্রথম তিনি খেয়াল করেছিলেন ১৯২১-এ ইউরোপ যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে। যেখানে সাগরের জলে নীল আলোর বিচ্ছুরণ দেখে এই ভাবনা আসে। তার পর ল্যাবরেটরিতে বসে তিনি কাজ শুরু করেন মার্কারি ল্যাম্প ও বরফের টুকরো দিয়ে। এই সংক্রান্ত পেপার তিনি প্রকাশ করেছিলেন ১৯২৮-এ। তাঁর আগে রাশিয়ান পদার্থ বিজ্ঞানী গ্রিগরি ল্যান্ডসবার্গ ও লিওনিড ম্যান্ডেলস্টাম এই বিষয় নিয়ে কাজ করেছিলেন। কিন্তু তাঁরা পেপার প্রকাশ করতে দেরি করে ফেলেন, তাই কৃতিত্ব যায় সি ভি রামনের ঝুলিতে।
উল্লেখ্য, জাতীয় বিজ্ঞান দিবস পালনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জুড়ে রয়েছে এই ‘রামন এফেক্ট’। এই দিনেই তিনি এই আবিষ্কারের কথা জানান। দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের গুরুত্ব কতখানি তা বলা বাহুল্য। আর এই জাতির উন্নতিতে বিজ্ঞানের সাহায্য নিয়ে যে সকল কাজ করা হচ্ছে, যেগুলি করার চেষ্টা চলছে বা এতদিন পর্যন্ত যা যা হয়েছে তার সবকিছু স্মরণ করেই পালিত হয় ‘জাতীয় বিজ্ঞান দিবস’। প্রতিবছরই এই দিনের জন্য আলাদা আলাদা থিম বাছা হয়। ২০২৩-এ জাতীয় বিজ্ঞান দিবসের থিম হতে চলেছে ‘সার্বজনীন কল্যাণে বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞান’।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম