।। প্রথম কলকাতা ।।
GPS Girl: এই বিদেশিনীকে অপরিচিত মনে হলেও এনার কণ্ঠস্বর মোটেও আমাদের কাছে অপরিচিত নয়। প্রতি দিনই শোনেন এই মহিলার কণ্ঠস্বর। রাস্তার অলিগলিতে হারিয়ে গিয়েছেন? গাড়ি বা স্মার্ট ফোনের জিপিএসে এলাকার নাম লিখলেই এক মহিলার কণ্ঠ আপনাকে পথ চিনিয়ে নিয়ে যাবে। বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের আজ তাঁকে ছাড়া চলে না। পথ চলতে চলতে কখনও মনে হয়েছে এই মেয়েটি আসলে কে? কী তার পরিচয়? অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের ম্যাকে বেড়ে ওঠা এই মেয়ের বিখ্যাত হওয়ার গল্পের শুরুটা হয়েছিল আমেরিকার আসার পর। ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল ব্রিটিশ অস্ট্রেলিয়ান গায়িকা অলিভিয়া নিউটন-জনের মতো হবেন। সেই মেয়েটার গলা আজ বিশ্বের কোণায় কোণায় সব জায়গায় রয়েছে।
জিপিএসে যে নারীকণ্ঠ শুনতে পাওয়া যায় বা অ্যাপলের ডিভাইসে যে সিরির গলা শওনা যায় তা ক্যারেন এলিজাবেথ জ্যাকবসেনের। তিনি পরিচিত দ্য জিপিএস গার্ল নামেও। সাত বছর বয়স থেকেই তিনি গান লিখতেন এবং গাইতেন। খুব ছোট থেকে গায়িকা হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন ক্যারেন। গায়িকা হিসাবে এক বার সুযোগ পাওয়ার আশায় আমেরিকায় বিভিন্ন প্রযোজনা সংস্থায় দরজায় দরজায় ঘুরেছেন ক্যারেন। এভাবেই কাটিয়েছেন দুটো বছর। কিন্তু কাজ জোটেনি। ২০০২ সাল! ক্যারেনের জীবনে ম্যাজিক আসে। একটি চাকরির বিজ্ঞপ্তি দেখে আবেদন করেন। তারপরেই রাতারাতি বদলে যায় জীবন। কাজটা ছিল ভয়েসওভার আর্টিস্টের। কণ্ঠশিল্পী হিসাবে অডিশন দেন ক্যারেন। ইন্টারভিউতে প্রায় ৫০ ঘণ্টা ধরে একটি স্টুডিওতে ক্যারেনের কণ্ঠস্বরের রেকর্ডিং করা হয়। ক্যারেনকে জানানো হয় তাঁর কণ্ঠ জিপিএসে ব্যবহার করা হবে।
ক্যারেনের কণ্ঠ পথহারানো পথিকদের গন্তব্যে পৌঁছে দেয়। তাঁর শান্ত কণ্ঠ চিনিয়ে দেয় পথ। জিপিএসে কণ্ঠ দেওয়ার পর আর ফিরে তাকাতে হয়নি ক্যারেনকে। শুধু তবে জিপিএসেই থেমে থাকেননি। একে একে অনেক কাজের প্রস্তাব পেতে শুরু করেন তিনি। নোরা জোনস, সিন্ডি লপার, ডেবরা কক্সের মতো বিখ্যাত শিল্পীদের সঙ্গে কাজ শুরু করে দেন তিনি।অ্যাপলের ডিভাইসে সিরির কণ্ঠটাও তাঁরই দেওয়া। কেবলমাত্র জিপিএসের নেপথ্য কণ্ঠস্বর হয়েই শিরোনামে উঠে আসেননি ক্যারেন। অস্ট্রেলিয়ার একটি অখ্যাত শহর থেকে আমেরিকার গিয়ে হয়ে উঠেছেন বিখ্যাত গায়িকা, ভয়েসওভার আর্টিস্ট। নিজের বক্তৃতার মাধ্যমে প্রেরণা জুগিয়েছেন বহু জনকে। কী ভাবে সাফল্যের পথে হাঁটা যায়, তা-ও লিখেছেন তাঁর দুটি বইয়ের পাতায়। এক সময় অস্ট্রেলিয়ার টেলিভিশনে শোয়ে নিয়মিত মুখ ছিলেন ক্যারেন। গুড মর্নি অস্ট্রেলিয়া বা আই ডু আই ডু-র মতো শোয়ে পারফর্ম করার সময় কয়েকশো বিজ্ঞাপন বা রেডিয়োর অনুষ্ঠান করে ফেলেছেন। সত্যি স্বপ্ন দেখলে কীভাবে তা পূরণ করতে হয় তা ক্যারেনকে দেখেই শেখা উচিত।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম