Shankha Ghosh: প্রতিবাদের ভাষা উঠে এসেছে তাঁর কলমে, শুভ জন্মদিন শঙ্খ ঘোষ

।। প্রথম কলকাতা ।।

Shankha Ghosh: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এক অনবদ্য প্রতিভার নাম শঙ্খ ঘোষ। তাঁর আসল নাম চিত্তপ্রিয় ঘোষ। বাংলা কবিতা ও সাহিত্যের আলোচনায় যেমন রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ দাশের নাম উঠে আসে, তেমনই সেই তালিকায় নাম উঠে আসে তাঁরও। তাঁকে ছাড়া এই আলোচনা অসম্পূর্ণ। তিনি নিজের লেখা দিয়ে পাঠককে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছেন। তাঁর কলমে উঠে এসেছে প্রতিবাদের ভাষা। তাঁর লেখায় রয়েছে এক আলাদাই আগুন। সমাজে ঘটতে থাকা সমস্ত বিষয়ে নজর ছিল তাঁর। ১৯৩২-এর আজকের দিনে জন্ম লেখকের।

বর্তমান বাংলাদেশের চাঁদপুরে জন্ম তাঁর। পাবনায় স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক হন। এর পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি করে গিয়েছেন নিজের লেখালেখির কাজ। বঙ্গবাসী কলেজ, জঙ্গিপুর কলেজ, সিটি কলেজ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। তাছাড়া দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, সিমলার ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ অ্যাডভান্সড স্টাডিজ ও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপকের দায়িত্ব পালন করেছেন। পরিচিতি পেয়েছেন শঙ্খ ঘোষ নামে, কিন্তু ছদ্মনাম হিসেবে ব্যবহার করেছেন ‘কুন্তক’ বা ‘শুভময়’ নামটিও। তাঁর লেখায় বাস্তবের রূঢ় সত্যি প্রকাশ পেয়েছে। এমনকি রাজনীতি নিয়েও কলম ধরেছেন তিনি। এক কথায় আধুনিক বাংলা কবিতার ইতিহাসের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র তিনি। ২০১১-তে পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। সেইসঙ্গে ২০১০-এ বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় ও ২০১৫-তে শিবপুরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে D.lit পেয়েছেন।

অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন বরাবর। কোচবিহারে খাদ্য আন্দোলনের মিছিলে পুলিশের গুলি চালানো নিয়ে শঙ্খ ঘোষ লিখেছেন, ‘যমুনা তার বাসর রচে বারুদ বুকে দিয়ে, বিষের টোপর নিয়ে’। নন্দীগ্রাম আন্দোলন নিয়েও সরব হয়েছেন তিনি। তাঁর ‘তুমি তো তেমন গৌরী নও’, ‘প্রহর জোড়া ত্রিতাল’, ‘বন্ধুরা মাতি তরজায়’, ‘মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে’, ‘ধুম লেগেছে হৃৎকমলে’, ‘লাইনেই ছিলাম বাবা’, ছন্দের ভিতর এত অন্ধকার’, ‘জলই পাষাণ হয়ে আছে’ কাব্যগ্রন্থগুলি জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

করোনা কেড়ে নিয়েছে বহু প্রতিভাবান শিল্পীর প্রাণ। যেই তালিকায় নাম রয়েছে এই নক্ষত্রেরও। তাঁর চলে যাওয়ায় বাংলার সাহিত্যের একটা যুগের যেন ইতি ঘটে গিয়েছে। তাঁর একের পর এক কালজয়ী লেখা পাঠকদের মনে আজও রয়ে গিয়েছে। সাধারণের আলো-অন্ধকারে ঘেরা জীবন তাঁর লেখায় বারবার ঝলকে উঠেছে। কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখেছেন তিনি। ‘বাবরের প্রার্থনা’ কাব্যগ্রন্থের জন্য পেয়েছেন সাহিত্য অ্যাকাডেমী পুরস্কার। ২০১৬-তে জ্ঞানপীঠ পুরস্কারও গিয়েছে তাঁর ঝুলিতে। বলতে গেলে, তিনি এমন এমন সৃষ্টি করেছেন যে, একের পর এক পুরস্কারের অধিকারী হয়েছেন তিনি। তাঁর চলে যাওয়া বাংলা সাহিত্যের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version