।। প্রথম কলকাতা ।।
Round up 2022: প্রতি বছরই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আমাদের দেশে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটে। বিপর্যয় মোকাবিলায় হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। মূলত ঘূর্ণিঝড় ও বন্যায় ক্ষতি হয় সবচেয়ে বেশি। ২০২২ সাল তা থেকে বাদ গেল না। ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে গুজরাতে। বন্যার কবলে পড়েছিল বেশ কয়েকটি রাজ্য।
মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে ঘূর্ণিঝড় তওতে (Tauktae) আছড়ে পড়েছিল গুজরাত উপকূলে। ঝড়ের ধাক্কায় প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। প্রাণহানি হয়েছিল অনেকের। ভারতে আরও তিনটি ঘূর্ণিঝড় তাণ্ডব চালিয়েছে এ বছর। মে মাসের শেষের দিকে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলে তাণ্ডব চালিয়েছিল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস (Yaas)। গত সেপ্টেম্বরে ঘূর্ণিঝড় গুলাব অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়েছিল। এরপর ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ ডিসেম্বরের প্রথম দিকে ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টি ডেকে এনেছিল।
দেশে বন্যা ও ভূমিধসে কয়কশো মানুষের মৃত্যু হয়েছে এ বছর। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে মহারাষ্ট্র ও কর্নাটকে। সবচেয়ে বিপর্যস্ত হয়েছিল মহারাষ্ট্রের রত্নগিরি, রায়গড় ও সাতারা জেলা। ঐ এলাকাগুলোতে ভূমিধসের ঘটনাও ঘটেছে। ব্যাপক বন্যার কবলে পড়েছিল পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওড়িশা। একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিল আরেক রাজ্য মধ্য প্রদেশেও। বন্যা কবলিত হয়েছিলেন কয়েক লাখ মানুষ। ব্যাপক বন্যার কবলে পড়েছিল আসাম ও মেঘালয়ও। আসাম ও মেঘালয়ের ২৫ জেলার অন্তত ১১ লাখ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আসামে ১ হাজার ৫১টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল।
মুষলধারে বৃষ্টির জেরে ভারতের উত্তরাঞ্চলে দেখা দিয়েছিল ভয়াবহ বন্যা। এর মধ্যে আসাম ও মেঘালয় রাজ্যে বড় বড় নদ–নদীর জলে প্লাবিত হয়েছিল জনপদ। এ দুই রাজ্যে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের ফলে ভূমিধসের ঘটনাও ঘটেছে। বন্যা ও ভূমিধসে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে।ব্রহ্মপুত্র নদ ও গৌরাঙ্গ নদীর জলে প্লাবিত হয় অনেক জেলা। ভারী বৃষ্টিতে মেঘালয় ও অরুণাচল প্রদেশেও জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়েছিল ব্যাপকভাবে।
পাশাপাশি ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল, সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় ভারী বৃষ্টি হয়েছিল। এ ছাড়া দিল্লি, গুজরাট, উত্তরাখন্ড, ঝাড়খন্ড, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, উত্তর প্রদেশে, ছত্তিশগড়, ওডিশা ও গোয়ায় ভারী বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়।
জুলাই মাসে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছিলেন অমরনাথ যাত্রীরা। মেঘভাঙা বৃষ্টি ও হড়পা বানের জেরে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আটকে পড়েছিলেন পুণ্যার্থীরা।হড়পা বানের জেরে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আটকে পড়েছিলেন বাংলার পুণ্যার্থীরাও। অমরনাথ যাত্রায় গিয়ে হড়পা বানে মৃত্যু হয়েছিল এ রাজ্যের এক ছাত্রীর।
২০২২ সালে ভারতে তাপপ্রবাহ ও বজ্রপাতে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। শুধু তাই নয় এই ঘটনা গুলি উত্তরোত্তর বাড়ছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। ২০২২ সালে শুধুমাত্র বজ্রপাতে এ দেশে ৯০০৭ জন মৃত্যু হয়েছে বলে ভূবিজ্ঞান মন্ত্রণালয় জানা গিয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ার জন্য বিজ্ঞানীরা জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন। গত বছরের তুলনায় চলতি বছর ভারতে তাপপ্রবাহ আট গুণ বেশি ছিল। সব মিলিয়ে বছরে ২৭ বার তাপপ্রবাহ এবং ১১১ বার বজ্রপাতের ঘটনা ঘটেছে। একই সময় বজ্রঝড় পাঁচ গুণের বেশি বেড়েছে এবং এই সংখ্যা ছিল ২৪০।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম