।। প্রথম কলকাতা ।।
Sabyasachi Chowdhury: ভেন্টিলেশন থেকে বেরিয়ে আসার অদম্য লড়াই লড়ছেন ঐন্দ্রিলা। পাশে ছায়ার মতো রয়েছেন সব্যসাচী। ক্লিনিক্যালি অভিনেত্রীকে সুস্থ করে তোলার যথাসাধ্য চেষ্টা চলছে। “রাখে বড়মা, তো মারে কোন…” সেইসঙ্গে রয়েছে হাজার হাজার মানুষের ভালোবাসা আশীর্বাদ আর প্রার্থনা। যার ফলে শূন্য থেকে এক ধাক্কায় ছিটকে ফিরে এসেছে মেয়েটা। ফেসবুকে ঐন্দ্রিলার স্বাস্থ্যের খবর দেওয়ার পাশাপাশি অনেকের অনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন সব্যসাচী।
১৫ দিনের বেশি হাসপাতালে রয়েছেন ঐন্দ্রিলা। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন অভিনেত্রী। আর বিগত এতদিনে তাঁর সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করেছেন অগণিত মানুষ। মন্দির, মসজিদ, গির্জা কোনও কিছুই বাদ যায়নি। এমনকি এই ক’দিনে অভিনেত্রীর জন্য অজস্র আশীর্বাদী পৌঁছেছে হাসপাতালে। তাঁদেরকে আর আলাদা করে ধন্যবাদ জানিয়ে ছোট করতে চাননি সব্যসাচী। সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিনেতা লিখেছেন, “চিকিৎসাশাস্ত্রে যে বিজ্ঞানই শেষ কথা, আমি সে কথা জানি। তবে পর পর তিনজন নিউরোসার্জন যদি বলেন ‘ঈশ্বরকে ডাকুন’, তাহলে আর না ডেকে উপায় কি? ওনাদের তুলনায় আমি নিতান্তই অশিক্ষিত। তবে কেবল আমি একা নই, মুর্শিদাবাদের প্রতিটা মন্দির, প্রতিটা মসজিদে মানুষ ওঁর জন্য প্রার্থনা করেছে। বিভিন্ন ধর্মের বিভিন্ন প্রসাদ এবং অজস্র আশীর্বাদী হাসপাতালে এসেছে নিয়মিত। তোমাদের সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমি ছোট করতে পারব না”।
পাশাপাশি তিনি লেখেন, “অনেকে অবশ্য হেসেছে বা অপমান করেছে, তাতে আমি বিন্দুমাত্র কিছু মনে করিনি। এই ক্ষুদ্র জীবনে বহুবার কাদায় পড়েছি তো, তাই গায়ের চামড়া বেশ মোটা হয়ে গেছে। তবে হ্যাঁ, কিছু কথা বলা প্রয়োজন”। সব্যসাচীর মতে, “ঐন্দ্রিলার প্রথম থেকে যা যা হয়েছে তা যথেষ্টই অপ্রাকৃত। কিন্তু সেটা নিয়ে এত মাতামাতি করলে তা বাকি পেশেন্টদের একপ্রকার অপমান করা হয়”।
বিগত কয়েকদিনে অনেকের মনেই ঐন্দ্রিলার চিকিৎসার খরচ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এমনকি প্রসঙ্গে বেশকিছু সংবাদমাধ্যমে লেখালিখিও হয়েছে। আর এবার তা বন্ধ করা উচিত বলে জানিয়েছেন অভিনেত্রীর ছায়াসঙ্গী। নেটমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, “পরিবারের সামর্থ্য অনুযায়ীই চিকিৎসা হবে। এখনও পর্যন্ত কারোর কাছে এক পয়সাও অর্থ সাহায্য চাওয়া হয়নি অথবা কারোর থেকে এক পয়সাও গ্রহণ করা হয়নি। তাই এটা নিয়ে লেখা মানে ঐন্দ্রিলাকে অপমান করা এবং তাঁর পরিবারকে ছোট করা। নিজের অপমান গায়ে মাখি না ঠিকই, কিন্তু ওঁর অপমানে আমার গায়ে ফোস্কা পড়ে”। সম্প্রতি ঐন্দ্রিলার জন্য প্রার্থনার থেকে অর্থ সাহায্য জরুরী বলে মনে করেন অভিনেতা অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি জানা যায়, অর্থ সাহায্য দিতে চেয়েছেন অরিজিৎ সিং। তবে অভিনেতার পোস্ট বলছে, সেটা অর্থ সাহায্য নয় মানসিকভাবে তাঁদের পাশে রয়েছেন গায়ক।
সেইসঙ্গে আরও একটি বিষয় নিয়ে আপত্তি তুলেছেন সব্যসাচী। ঐন্দ্রিলা অসুস্থ হওয়ার পর থেকে তাঁর এবং সব্যসাচীর পুরনো ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কেউ কেউ তাঁদের পুরনো ছবি দিয়ে ভিডিও বানিয়ে পোস্ট করেছেন নেটে। আর তাতে একদমই সায় নেই অভিনেতার। তাঁর কথায়, ‘বিপদের দিনে কাছের মানুষের পাশে থাকাটা অত্যন্ত স্বাভাবিক একটা বিষয়। আমার মা অসুস্থ হলে, বাবা যেমন দৌড়াদৌড়ি করেন, গত দুই বছর ধরে আমিও সেটাই করেছি। তাই কিছু পুরোনো ছবি আর ভিডিও সাজিয়ে, গান বাজিয়ে সেটাকে গ্লোরিফাই করা বন্ধ করা উচিত। এমনকি একটা লকডাউনের সময়কার তারাপীঠের ভিডিও পর্যন্ত ঐন্দ্রিলার নাম করে ঘুরপাক খাচ্ছে দেখলাম। আমি ঠিক জানি না, এগুলও করে বোধহয় তোমাদের চ্যানেল বা পেজ পয়সা পায়। কিন্তু বিষয়টা আমার চোখে খুবই দৃষ্টিকটু লাগে’।
একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, “মানুষের গায়ে আজকাল বড়ই শকুন শকুন গন্ধ পাই। গত দুই’দিন ধরে হাসপাতালের নীচে বেশ ভিড় জমেছিলো। ওঁর অবস্থার উন্নতি ঘটাতে একেবারে খাঁ খাঁ করছে”। অভিনেতার বক্তব্য, এসএসকেএম-এর বাইরে অনেক জোরাই ফুটপাতে রাত কাটায়, ভালোবাসে বলেই তাঁরা থাকে। শুধু পরিচিত মুখ ভুলে আমরা চর্চিত হই, আর তাঁরা নয়। ফের ঐন্দ্রিলা প্রমাণ করেছেন, মিরাকেল সম্ভব। অভিনেত্রী আছেন, থাকবেন।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম