।। প্রথম কলকাতা ।।
ভিডিও-র এই মহিলাকে তো সকলেই চেনেন একসময় মিডিয়ার হট টপিক ছিলেন রানু মন্ডল। এখন কেমন আছেন? বা সেই পাড়ায় পাড়ায় কাঁচা বাদাম গান গাওয়া ভুবন বাদ্যকর যিনি এখন ইউটিউবার দেখলেই দূর দূর করে তাড়িয়ে দেন। সোশ্যাল মিডিয়া একদিন এদের বিখ্যাত করেছিল। সেই নেটদুনিয়াকেই সবচেয়ে বেশি এরা ভয় পান। সোশ্যাল মিডিয়া তাঁদের বড় শিক্ষা দিয়েছে। ভাইরাল হওয়া যে কী অভিশাপ হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন দুজনেই। নদিয়ার রানাঘাট রেল স্টেশনে লতা মঙ্গেশকরের গান গেয়ে রাতারাতি সোশ্যাল দুনিয়ায় সেলিব্রিটি হয়ে গিয়েছিলেন রাণু। বম্বেতে গিয়ে সংগীত পরিচালক হিমেশ রেশমিয়ার সুরে গানও গান।
কেমন আছেন রানু মণ্ডল
ভাঙা চোড়া একতলা বাড়িতে একাই থাকেন। অগোছালো বারান্দায় এককোণায় একটা গ্যাস ওভেন। পরিচালক হিমেশ রেশমিয়ার পরিচালনায় একটি গানের প্লেব্যাকের জন্য অফার পেয়েছিলেন। রাতারাতি বদলে যায় রানাঘাটের ভাইরাল শিল্পী রানু মন্ডলের জীবন। সেই রানু এখন নেটিজেনদের কাছে হাসির খোরাকও হয়ে গিয়েছেন। কোনও দিন খাবার জোটে আবার কখনও তাও জোটে না। রানু মমঅডলের বাড়িতে ইউটিউবার থেকে কনটেন্ট ক্রিয়েটারদের ভি়ড়। তবে গান শোনার জন্য নয়। আসলে উদ্দেশ্য রানু মণ্ডলকে নিয়ে মজার ভিডিও বানানো। গলির একেবারে শেষপ্রান্তে বাঁশবনে ঘেরা তার পুরোনো একটি বাড়ি। অন্ধকার একটি ঘর, যেই ঘরের দেয়ালের রং অনেকটাই চটা। টিমটিম করে জ্বলছে একটি বাল্ব। মরচে ধরা ফ্যান বিকট শব্দ করে ঘুরে চলেছে অনবরত। খাট এবং মেঝেতে অগোছালো হয়ে পড়ে রয়েছে তাঁর জামাকাপড়। দরজায় তালা সবসময়। খাবার এনেছি লোভ দেখালেই তালা খুলতে রাজি হন। ওই খাবারের বিনিময়ে ইউটিউবাররা নানা ধরনের আবদার করেন। লাল বেনারসি, গয়না, চন্দন দিয়ে নতুন বউ সাজেন রানু। আবার কখনও নীল রঙের ফ্রক পরে এক যুবকের বাইকের পিছনে বসে আছেন রানু। মাঝে মাঝে এই জ্বালাতনে অতিষ্ঠ হয়ে যান। তখন ঝাঁটা দিয়ে মারতেও চলে আসেন। রানুর এই সব ভিডিও ভাইরাল হয় সোশও্যাল মিডিয়ায়। রানুর এই পরিণতি দেখে হেসে লুটোপুটি খান নেটিজেনরা।
রানুর মত একই অবস্থা কাঁচা বাদাম খ্যাত ভুবন বাদ্যকরের বীরভূমের প্রত্যন্ত গ্রামের বাদাম বিক্রেতা রাতারাতি হয়ে উঠেছিলেন স্টার। কিন্তু কে জানত সেই সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য। একদিন বাদামকাকুকে পালিয়ে পালিয়ে বেড়াতে হবে। ভাগ্যের ফেরে আজ ফের সর্বস্ব হারিয়েছেন। থাকতে হয়েছে ভাড়া বাড়িতেও। যদিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই ভুবন বাদ্যকরের হাবভাব বদলে গিয়েছিল বলে দাবি করেছেন অনেকেই। কখনও দাদাগিরির মঞ্চ, আবার কখনও বিলাসবহুল রেস্তোরাঁতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।নতুন বাড়িও করছিলেন ভুবন। কিন্তু, খ্যাতির শিখরে পৌঁছেও ফের একবার তাঁকে সবকিছু হারাতে হয়েছে।কয়েক মাস যেতে না যেতেই অন্ধকার নেমে এসেছে তাঁর জীবনে। একের পর এক ঝড়ে বিপর্যস্ত ভুবন বাদ্যকরের জীবন। তঁর এই অবস্থার পিছনে সোশ্যাল মিডিয়াকেই দায়ী করেন। কোনও ইউটিউবারকে দেখলেই এখন দূর দূর করে তাড়িয়ে দেন ভুবন। অনেক কষ্টে নিজের বাড়িতে ফিরেছেন। আর কাঁচা বাদাম গানটি গাইতে চান না। ওই গানই যে অভিশাপ হয়ে নেমে এসেছে বাদাম কাকুর জীবন।
জীবন সম্পূর্ণ পাল্টে দিয়েছিল এক লহমায় ভাইরাল হয়ে যাওয়ায়।হঠাৎই আসে এক বড় পরিবর্তন। যে সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য স্বপ্নের সিঁড়িতে উঠেছিলেন সেই আবার বাস্তবের মাটিতে আচমকাই আছড়ে ফেলল।সুখের সময় এসেছিল সকলেই ধীরে ধীরে সময় ফুরোতে তারাও যে যার পথ ধরেছে। জীবনই তাদের দিয়ে গিয়েছে বড় শিক্ষা।