Ritwik Ghatak: বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তাঁর অবদান অপরিসীম, স্মরণে ঋত্বিক ঘটক

।। প্রথম কলকাতা ।।

Ritwik Ghatak: ভারতীয় চলচ্চিত্রের তালিকায় প্রথম সারিতে আজও স্থান পায় তাঁর নির্মাণ। ‘ভাবো ভাবো, ভাবা প্র্যাকটিস করো’। এক সময় এই কথা দিয়ে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, জীবনে সমস্তকিছু নিয়ে ভাববার দরকার রয়েছে। সেটাও একটা অনুশীলনের বিষয়। একজন প্রবাদপ্রতিম ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক ঋত্বিক ঘটক। তবে বিনোদন জগতে পরিচালক, সহ-পরিচালক ছাড়াও চিত্রনাট্যকার ও অভিনেতা রূপে কাজ করেছেন।

১৯২৫ -এর ৪ নভেম্বর অবিভক্ত বাংলার ঢাকাতে জন্ম তাঁর। ঋত্বিক ঘটকের বড় দাদা মণীশ ঘটক ছিলেন ইংরেজির অধ্যাপক। যাঁর কন্যা মহাশ্বেতা দেবী বাংলা সাহিত্যের রত্ন। আবার তাঁর আরেক দাদা আশিষচন্দ্র ঘটকের নাতি হলেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। বর্তমানে একজন জনপ্রিয় অভিনেতা, চিত্রপরিচালক ও চিত্রনাট্যকার। ‘চন্দ্রগুপ্ত’ নাটক দিয়ে অভিনয়ে যাত্রা শুরু। দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের এই নাটকে চাণক্যের ভূমিকায় দেখা গিয়েছে তাঁকে। ১৯৪২-এ ম্যাট্রিক পরীক্ষা পাশ করেন তিনি। বহরমপুরের কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে ১৯৪৮-এ বি এ পাশ করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের জন্য ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু লেখালেখির প্রতি এক অদ্ভুত নেশা তাঁর এমএ পড়া মাঝ রাস্তায় থামিয়ে দেয়।

১৯৪৭-এ ‘গল্পভারতী’তে তাঁর লেখা প্রথম গল্প ছাপা হয়। এরপর ধীরে ধীরে ‘দেশ’, ‘অগ্রণী’ পত্রিকায় তাঁর গল্প প্রকাশিত হতে থাকে। ১৯৪৭-এই নিজস্ব কাগজ ‘অভিধারা’ প্রকাশ করা শুরু করেন তিনি। তার লেখায় সামাজিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ নজরে এসেছে। দুই বাংলার বিভাজন, প্রেম তাঁর লেখায় প্রকাশ পেয়েছে। গল্প লিখতে লিখতে নাটকের জগতে তাঁর প্রবেশ। ‘বহুরূপী’, ‘নবান্ন’ নাটকের শো করেছেন। প্রথম নাটক লিখেছেন ‘কালো সায়র’। ‘নবান্ন’ নাটকে সাফল্য পেলে ১৯৪৯-এ গণনাট্যের নতুন নাটক ‘ঢেউ’তে বৃদ্ধ কৃষকের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। ১৯৫৫-তে তাঁর লেখা ও নির্দেশনাতে ‘সাঁকো’ খুব প্রশংসিত হয়েছে। আর এই নাটক করতে করতে কয়েক হাজার থেকে লক্ষ মানুষের কাছে পৌঁছানোর কথা ভাবেন। ১৯৫০-এ নিমাই ঘোষের ‘ছিন্নমূল’ দিয়ে ছবির দুনিয়ায় প্রবেশ করেন।

তাঁর ৮টি পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবি, যথাক্রমে- ‘নাগরিক’, ‘অযান্ত্রিক’, ‘মেঘে ঢাকা তারা’, ‘কোমল গান্ধার’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘সুবর্ণরেখা’, ‘বাড়ি থেকে পালিয়ে’, ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’। ছবিগুলির মধ্যে দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন সমাজের ভাবনা, আবেগ ও প্রতিবাদকে। ১৯৬৫ সালে কিছু সময়ের জন্য পুনেতে ছিলেন। ঠিক সেই সময় ভারতীয় চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ভাইস-প্রিন্সিপাল হন। তাঁর শেষ চলচ্চিত্র অনেকটা আত্মজীবনীমূলক। তিনি নিজের জীবদ্দশায় সেভাবে সাফল্যের মুখ দেখেননি। ১৯৫৭ সালে ‘মুসাফির’ তৃতীয় সেরা কাহিনী চিত্র হিসেবে জাতীয় পুরস্কার মঞ্চে সার্টিফিকেট অফ মেরিট অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছে। এমনকি ১৯৫৮-তে হিন্দি ছবি ‘মধুমতী’ ফিল্ম ফেয়ারের জন্য সেরা গল্পের মনোনয়ন পেয়েছে। প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধা এই প্রতিভাবান শিল্পীকে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version