Suchitra Sen: ৩৬ বছর ধরে ছিলেন অন্তরালে, বাংলা সিনেমা অসম্পূর্ণ সুচিত্রা সেনকে ছাড়া

।। প্রথম কলকাতা।।

Suchitra Sen: বাংলা চলচ্চিত্র জগতের কিংবদন্তি অভিনেত্রী তিনি। তাঁর রূপের আগুনে ঘায়েল হয়েছেন বহুজন। বাংলা চলচ্চিত্র দুনিয়ায় এক অভাবনীয় প্রতিভার নাম সুচিত্রা সেন (Suchitra Sen)। যাঁর কোনও রিপ্লেসমেন্ট হয় না। একটা সময় গিয়েছে, যখন বাংলা ছবি মানেই উত্তম-সুচিত্রা (Uttam-Suchitra)। মহানায়কের বিপরীতে অভিনয় করে আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন সুচিত্রা সেন। তাঁর প্রতিভা, অভিনয় দক্ষতা, নিষ্ঠা তাঁকে জনপ্রিয়তার শিখরে তুলে ধরে। আজ ১৭ জানুয়ারি, না ফেরার দেশে পাড়ি দেন তিনি।

অভিনেত্রীর শৈশব কেটেছে পাবনা শহরের হেমসাগর লেনের পৈত্রিক বাড়িতে। ১৯৫২-তে ‘শেষ কোথায়’ সিনেমায় অভিনয় দিয়ে চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন তিনি। বাংলা-হিন্দি মিলিয়ে ৬০টির কাছাকাছি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি। ১৯৬৩-তে মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবে ‘সাত পাকে বাঁধা’ ছবির জন্য স্বীকৃতি পেয়েছেন মহানায়িকা (Mahanayika)। আন্তর্জাতিক পুরস্কার বিজয়ী প্রথম বাঙালি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেন। তবে দর্শকদের একের পর এক হিট ছবি দিলেও সত্যজিৎ রায়ের (Satyajit Ray) ‘চৌধুরানী’ ছবিতে কাজ করতে চাননি তিনি। শ্যুটিং ডেট ছিল না তাঁর কাছে। আর তাই সত্যজিৎ রায়ও ছবিটি বানাননি।

তাঁর হাসিতে আজও মজে সকলে। পাঁচের দশকের শুরু থেকে রাজ করেছেন টলিউডে। যদিও শুধু টলিউড নয় তাঁর প্রতিভা পৌঁছেছে বহুদূর পর্যন্ত। তিনি সবার থেকে আলাদা। যার আঁচ পাওয়া গিয়েছে মহানায়কের প্রয়াণের সময়। সুচিত্রা মানে উত্তম থাকবেই। ১৯৮০-র ২৪ জুলাই মহানায়কের প্রয়াণে যখন শোকাহত গোটা বাংলা, তখন উত্তমের বাড়িতে আগমন ঘটে রমার। শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সেদিন ভোররাতে উত্তম কুমারের বাড়িতে গিয়েছিলেন মহানায়িকা। যেই কাহিনী অনেকের কাছেই অজানা। ‘এই সময়’ সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে, অভিনেতা তরুণ কুমারের স্ত্রী এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘দাদা যখন চলে যান, তখন আমি ফোন করেছিলাম ওঁকে (মহানায়িকা)। বাড়ি তখন নিস্তব্ধ। বললাম, দিদিভাই তুমি এসো না গো। সবাই এলো তুমি এলে না। বললেন, আচ্ছা দেখছি’। এর পর? ৪০ মিনিটের মধ্যেই হাতে এক গোছা রজনীগন্ধা আর একটা বড়মালা নিয়ে হাজির হন উনি। মালা হাতে একটাই কথা বলেছিলেন, ‘আমি হেরে গেলাম উত্তম’।

বিমল রায় তাঁকে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রস্তাব দেন। পরে মহানায়িকা শ্বশুর ও স্বামী রাজি হলে ছবির দুনিয়ায় পা রাখেন। তাঁর প্রথম হিন্দি ছবি ‘দেবদাস’। দীলিপ কুমারের বিপরীতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। ওই ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। শোনা যায়, তাঁর নাম, যশ, খ্যাতির জন্য স্বামীর সঙ্গে অশান্তি হত প্রায় প্রতিদিন। অত্যন্ত সন্দেহপ্রবণ ছিলেন দিবানাথ। মারামারিও নাকি হয়েছে তাঁদের মধ্যে। দিবানাথের মৃত্যুর পর প্রায় ৯ বছর শ্যুটিং ফ্লোরে দেখা গিয়েছে তাঁকে। ১৯৭৮-এ মুক্তি পায় তাঁর শেষ সিনেমা ‘প্রণয় পাশা’। এর পর লোকচক্ষুর আড়ালে চলে গিয়েছিলেন তিনি। প্রায় ৩৬ বছর নিজেকে সবকিছুর থেকে দূরে রেখেছিলেন সুচিত্রা সেন। ২০১৪-র ১৭ জানুয়ারি না ফেরার দেশে পাড়ি দেন অভিনেত্রী।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version