Chanchal Chowdhury: ‘বাবা জীবন্ত মানুষ থেকে ডেথ সার্টিফিকেট হয়ে গেল’, স্মৃতিচারণায় চঞ্চল চৌধুরী

 

।। প্রথম কলকাতা।।

Chanchal Chowdhury: অসুস্থ হওয়ার পর থেকে বারবার প্রার্থনা করে গিয়েছেন, যেন বাবা সুস্থ হয়ে যায়। বিনিময়ে সবকিছু করতেই রাজি ছিলেন। কারণ হাসপাতালের বিছানায় যে মানুষটি শুয়েছিলেন, সে ছিলেন তাঁর বাবা। তাই তাঁকে সুস্থ দেখার বিনিময়ে সমস্ত কিছু করতে রাজি থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অপরদিকে মনে হয়েছে মানুষটি কষ্ট পাচ্ছে, তাই তাঁর চলে যাওয়াই একমাত্র তাঁকে এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে পারে। কিন্তু ভাবা আর বিশ্বাসের মধ্যে মানা যায়নি যে বাবা নেই। যবে থেকে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বাবা, তবে থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের সমস্ত অনুভূতি শেয়ার করে এসেছেন চঞ্চল চৌধুরী (Chanchal Chowdhury)। সকলের কাছে বাবা-মার জায়গা আলাদাই থাকে। যা কেউ পূরণ করতে পারে না। গত মঙ্গলবার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন অভিনেতার বাবা তথা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রাধা গোবিন্দ চৌধুরী। এবার তাঁকে মনে করে ফেসবুকে কিছু কথা লিখেছেন চঞ্চল বাবু।

অভিনেতা নেটমাধ্যমে (Social Media) লিখেছেন, ‘হাসপাতালের ৯০২ নম্বর কেবিন। বাবাকে নিয়ে হাসপাতালের এই কেবিনেই ভর্তি করেছিলাম। যদিও বাবার আর কেবিনে থাকা হয়নি। শুরু থেকেই বাবাকে আইসিইউ’তে রাখা হয়েছিল। ভর্তির দিনই ডাক্তার বলে দিয়েছেন, এখান থেকে বাবার ফিরে আসার আর কোনও সম্ভাবনা নেই। যদি না সৃষ্টিকর্তা অবাক কিছু ঘটান। তার পর থেকে শুধু অপেক্ষা আর চেষ্টা করে গিয়েছি। প্রায় ১৫ দিন বাবা মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধে হেরে গেলেন। ডাক্তারদের হিসেব মতো যে কোনও সময়ে চলে যাওয়ার কথা বললেও, ১৫ দিন বাবা লাইফ সাপোর্টে বেঁচে ছিলেন’।

পাশাপাশি চঞ্চল বাবু আরও লেখেন, ‘একটা সময় প্রার্থনা করেছি বাবার জ্ঞান ফিরে আসুক,সুস্থ্য হয়ে যাক, বিনিময়ে আমরা সব কিছু করতে প্রস্তুত। ঠিক সেই আমরাই শেষের দিকে এসে, বাবার কষ্ট সহ্য করতে না পেরে প্রার্থনা করেছি, বিশ্বাস করেছি, একমাত্র মৃত্যুই বাবাকে এই অসহ্য যন্ত্রনা থেকে মুক্তি দিতে পারে। ভাবনা আর বিশ্বাসের এই বৈপরীত্য আমি এখনও মানতে পারিনি। আমরা সহ বাবার ভালোবাসার মানুষগুলো প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ৯০২ নং কেবিনে বসে থাকতাম বাবার জন্য। এত ভীড় যে বসার জায়গা হতো না। তারপরেও কেউ সেখান থেকে আসতে চাইতো না। বাবার কারনেই কেবিনটা মিলন মেলায় পরিণত হয়েছিল’।

বাবার চলে যাওয়ার দিনের কথা মনে করে তিনি লিখেছেন, ২৭ ডিসেম্বর সকাল থেকেই আমরা বুঝতে পারছিলাম বাবাকে আর ধরে রাখতে পারব না। ঠিক রাত ৮টার দিকে ডিউটি ডক্টর কেবিনে ফোন করে জানালেন, বাবার হার্ট বিট একদম নেমে যাচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে আমরা দৌড়ে গেলাম আইসিইউ’তে। সত্যিই, বাবার শরীরটা স্তব্ধ হয়ে গেছে। না ফেরার দেশে চলে গেল আমাদের বাবা’। এদিন ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেন চঞ্চল চৌধুরী। সেইসঙ্গে ফেসবুকের প্রোফাইল পিকচারও বদলে ফেলেন তিনি। বাবার ছবি দিয়ে এই সকল কথা তুলে ধরেন সকলের কাছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া থেকে তাঁর চলে যাওয়া পর্যন্ত কী কী ঘটেছে তাঁর জীবনে, তাই নিয়ে পোস্টটি করেছেন চঞ্চল বাবু। সেইসঙ্গে লেখেন, ‘আমার বাবা জীবন্ত মানুষ থেকে ডেথ সার্টিফিকেট হয়ে গেল। ভাবতেই তো পারিনি বাবা চলে যাবে। তাই বাবার সাথে আমার কোন শেষ কথা হয়নি’।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version