।। প্রথম কলকাতা ।।
Vegetables Seed: শীতকাল আসলেই হরেক রকম সবুজ সবজির আগমন দেখা যায় বাজারে। এমন অনেক সবজি আছে যেগুলি শীতকালেই পাওয়া যায় এবং সেগুলি খাওয়ার মজাও শীতকালেই আসে। কৃষকরা তো ব্যবসার কারণে বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজি চাষ করেই থাকেন। কিন্তু অনেকে নিজের বাড়ির ছাদ বাগানে শীতকালীন সবজি চাষ করতে বেশ ভালোবাসেন। তাদেরকে দেখে হয়তো অন্য অনেকেরই নিজের ছাদ বাগানে সবজি চাষের ইচ্ছে জাগতে পারে। কিন্তু কীভাবে বীজ থেকে চারা তৈরি করা হবে, সেই চারা কীভাবে রোপণ করা হবে, কীভাবে তার পরিচর্যা করা হবে এই এত প্রশ্নের উত্তর না পেয়ে মনের ইচ্ছে মনেই চাপা পড়ে যায়।
তবে আজকের প্রতিবেদনে শীতকালীন কিছু সবজির চারা করার সহজ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। তাই যারা নিজেদের বাড়িতে একদম তরতাজা শীতের সবজি চাষ করতে ইচ্ছুক তাঁরা অবশ্যই প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য পেতে পারেন এখান থেকে। যেমন ধরুন মিষ্টি কুমড়ো, শিম, বরবটি, লাউ, শশা ,তরমুজ, করলা, ঝিঙে, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রোকলি, টমেটো, ক্যাপসিকাম আরও কত ধরনের সবজি রয়েছে যা শীতকালে আপনি চাষ করতে পারেন। কিন্তু এদের সবার বীজ থেকে চারা তৈরি করার পদ্ধতি একরকম নয়। তাই ছোট ছোট পার্থক্য গুলো বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে।
১. লাউ, বরবটি, শিম, মিষ্টি কুমড়ো, তরমুজ, করলা, ঝিঙ্গে, চিচিঙ্গা জাতীয় বীজ থেকে চারা তৈরি
- সর্বপ্রথম আপনাকে এই সবজিগুলির বীজ জোগাড় করতে হবে। বীজগুলি অবশ্যই সুপ্ত অবস্থায় থাকবে। তাই এদের সুপ্তাবস্থা ভাঙার জন্য ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট কড়া রোদে রাখতে হবে।
- এরপর কোন পাত্রে জল নিয়ে বীজগুলিকে ওই পাত্রের মধ্যে ভিজিয়ে রাখুন প্রায় ৮ থেকে ১২ ঘন্টা।
- এবার ওই বীজ গুলিকে ট্রাইকোডার্মা পাউডার গোলানো জলে আরও ৩০ মিনিটের জন্য ভিজিয়ে রাখুন।
- এবার বীজগুলিকে বাইরে বের করে নিন। ছেঁকে নিয়ে ভেজা কাপড়ের মধ্যে অথবা টিসু পেপারে মুড়ে হালকা স্প্রে করে নিন জল। এমন কিছুর মধ্যে ধরে রাখুন যেখানে বাতাস না ঢুকতে পারে। এইভাবে দুই থেকে চার দিন রেখে দিন। কিছু কিছু বীজের ক্ষেত্রে হয়তো সময় আরও খানিকটা বেশি লাগতে পারে।
- কয়েকদিন পর দেখতে পাবেন বীজ অঙ্কুরিত হয়েছে। সেই সময় দেরি না করে প্লাস্টিকের ট্রে অথবা আইসক্রিমের কাপ কিংবা টবে বীজগুলিকে হালকা হাতে লাগিয়ে দিন। খেয়াল রাখবেন কোনোভাবেই যেন অঙ্কুর ভেঙে না যায়। আর ওই বীজের উপর হালকা ঝুরঝুরে মাটি অথবা কোকো ডাস্ট ছড়িয়ে দিন। জল দিন বুঝে।
- ২০ থেকে ২৫ দিন মতো সময় লাগবে। ততদিন ওই বীজ থেকে একটা চারা গাছ বেরিয়ে আসবে। আর তারপর নিজের পছন্দমত সেই চারা গাছ আপনি মাটিতেও লাগিয়ে দিতে পারেন অথবা বড় টবেও লাগিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু নিয়মিত পরিচর্যা করলে তবেই ভালো ফলন পাবেন।
২. টমেটো, লঙ্কা, ক্যাপসিকাম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন জাতীয় বীজ থেকে চারা তৈরি
- বীজ সংগ্রহ করার পর তার সুপ্ত অবস্থা ভাঙার জন্য সেগুলিকে ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট কড়া রোদের মধ্যে রাখুন।
- এরপর জলে ভিজিয়ে রাখুন চার থেকে পাঁচ ঘন্টা । একটি পাত্রে ট্রাইকোডার্মা পাউডার নিয়ে জল ঢালুন । আর তারপর বীজগুলিকে ৩০ মিনিট মতো সেখানে ভিজিয়ে রাখুন।
- জল থেকে বীজগুলিকে তুলে নিয়ে এবার কোন একটি পাত্রে লাগানোর পালা। অবশ্যই ঝুরঝুরে মাটি প্রয়োজন। সেই মাটির সাথে জৈব সার ,ভার্মি কম্পোস্ট, হাড়ের গুঁড়ো অথবা কোকোপিট মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন । এতে মাটি কোনভাবেই জমাট বাঁধবে না, ঝুরঝুরে থাকবে।
- ৭ থেকে ১০ দিন সময় লাগবে বীজ অঙ্কুরিত হতে। তবে অবশ্যই সেই বীজগুলিকে অন্ধকার জায়গায় রাখবেন। আর কাপড় দিয়ে পাত্রটিকে ঢেকে দেবেন । তাহলে সেখানে ভাপ উৎপন্ন হবে এবং দ্রুত বীজ অঙ্কুরিত হবে।
- এক্ষেত্রেও সময় লাগবে খুব বেশি ২০ থেকে ২৫ দিন। আর তাতেই বীজ থেকে বেরিয়ে আসবে সম্পূর্ণ চারা গাছ। এই ভাবেই প্রতিবছর বীজ সংগ্রহ করে রাখলে নিজের বাড়িতে ছোটখাটো বাগান তৈরি করে নেওয়া যাবে। তাতে একদম পুষ্টিকর টাটকা সবজি খেতে পারবেন শীতজুড়ে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম