Ashalata Sen: অগ্নিযুগের এই নারী বিপ্লবী সাহিত্যানুরাগী ছিলেন, প্রয়াণ দিবসে স্মরণে আশালতা সেন

।। প্রথম কলকাতা ।।

Ashalata Sen: ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সক্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। অগ্নিযুগের একজন নারী বিপ্লবী। তবে পাশাপাশি ছোট থেকে সাহিত্যের প্রতি এক আলাদা ভালোবাসা ছিল তাঁর। ১৯০৪-এ মাত্র ১০ বছর বয়সে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে মাসিক পত্রিকা ‘অন্তঃপুর’-এ তাঁর জাতীয়তাবাদী কবিতা সুধীসমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। শেষ বয়সে তিনি একটি আত্মজীবনী রচনা করেছেন। তাঁর মাতামহীর উৎসাহ ও অনুপ্রেরণাতে রাজনীতির ময়দানে আসা এবং ১৯০৫-এ স্বদেশী প্রচারে উদ্যোগী হওয়া। ১৮৯৪-সালে নোয়াখালীতে এক উকিল পরিবারে জন্ম হয় আশালতা সেনের।

ভারতে নারীদের প্রাপ্য মর্যাদা ও অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে ধর্ম, সমাজ ও শাস্ত্রের নামে। সতীদাহ, পর্দাপ্রথা, পণপ্রথার কারণে বলি হয়েছে বহু নারী। কিন্তু তার মধ্যেও কেউ কেউ সকল কিছুকে ভেঙে দিয়ে সংগ্রামে সামিল হয়েছেন। যাঁদের মধ্যে একজন হলেন আশালতা সেন। ১৯২১-এ অসহযোগ আন্দোলনের সময় গান্ধীজির আদর্শে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। পরবর্তীতে ঢাকা গেণ্ডারিয়ায় শশুর মশায়ের সাহায্যে নিজের বাড়িতে মহিলাদের জন্য ‘শিক্ষাশ্রম’ স্থাপন করেন। ১৯২২-এ ঢাকা জেলার মহিলা প্রতিনিধিরূপে তিনি যোগ দেন গয়া কংগ্রেসে।

১৯০৫-এ বিক্রমপুর অঞ্চলে স্বদেশী প্রচারের জন্য নবশশী দেবী, সুশীলা সেন, কমলকামিনী গুপ্তা প্রমূখ ‘মহিলা সমিতি’ ও ‘স্বদেশী ভান্ডার’ গঠন করেন। মাত্র ১১ বছর বয়স থেকেই আশালতা দেবীর সংগ্রামী জীবন শুরু হয়। দেশ-বিদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের বিভিন্ন গ্রন্থ পড়ে স্বদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ক্রমাগত উদ্বুদ্ধ হতে থাকেন। ১৯১৬-তে স্বামী সত্যরঞ্জন সেনের চলে যাওয়ায় সন্তানকে নিয়ে অত্যন্ত বিপর্যস্তের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু পরবর্তীতে ১৯২৪-এ মহিলাদের মধ্যে দেশাত্মবোধ জাগ্রত করতে এবং গান্ধীজির বাণী প্রচারের লক্ষ্যে সরমা গুপ্তা ও সরযূবালার সহযোগিতায় গঠন করেন ‘গেণ্ডারিয়া মহিলা সমিতি’। ১৯২৫-এ তিনি ‘নিখিল ভারত কাটুনী সংঘের সদস্য হন এবং ব্যাপক খদ্দর প্রচারে মন দেন। ১৯৩০-এ মহাত্মা গান্ধীর ‘লবণ আইন’ অমান্য আন্দোলনের সময় আশালতা দেবীর সাহস ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যায়। তাঁর প্রধান লক্ষ্য ছিল মহিলাদের আত্মসচেতন ও সংগঠিত করে তোলা। তিনি বুঝেছিলেন নারীরা যদি পুরুষদের কাজে সহায়তা না করে, তাহলে কোনও আন্দোলন সফল হতে পারে না। তাই তিনি নারী সংগঠন তৈরি করেন। বিক্রমপুরের বিভিন্ন স্থানে মহিলা সংঘের বেশ কয়েকটি শাখাও স্থাপিত হয়। ১৯৮৬ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে পুত্রের বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন এই বিপ্লবী নারী।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version