৪৯ সেঞ্চুরি শচীন-কোহলির, তবু ফারাকটা থেকেই গেল! কোন কোন জায়গায় জেনে নিন

।। প্রথম কলকাতা ।।

তাহলে বিরাট কোহলি অবশেষে শচীনকে ছুঁয়েই ফেললেন তাই তো! সেই মুহূর্তটার কথা ভাবুন একবার। যখন সিঙ্গেলস নিয়ে সম্পূর্ণ করলেন বহু কাঙ্ক্ষিত সেই সেঞ্চুরিটা! আপনার মতো সেই মুহূর্তটা নিশ্চয়ই দেখছিলেন শচীনও! টিভিতে তাঁর খেলা দেখেই যে বড় হয়ে ওঠা বিরাটের। স্বপ্ন দেখেছেন শচীনের মতোই বাইশ গজে দুনিয়া কাঁপাবেন একদিন। সেই শচীন তেন্ডুলকরের রেকর্ড ছুঁলেন বিরাট কোহলি। বার বার হোঁচট খাওয়ার পর অবশেষে স্বপ্ন ছুঁলেন নিজের জন্মদিনে। বিরাটও বরাবরই আইডল ভেবেছেন শচীনকে। নিজেকে গড়েছেন শচীনের নিখুঁত ব্যাটিং দেখে। সেই নায়কের রেকর্ডে ভাগ বসালেন তিনি। এসেছে শচীনের প্রশংসা। তা অনেক বড় পাওয়া, আবেগতাড়িত হয়ে বলেছেন বিরাট। তবে কি সবদিক থেকেই শচীনের সঙ্গে একাসনে বসে পড়লেন বিরাট? নাকি এখনও অনেক ক্ষেত্রেই পার্থক্য থেকে গেল কোহলি ও মাস্টার ব্লাস্টার শচীনের মধ্যে? কোথায় কোথায় রইলো ফারাক?

ওয়ানডে ক্রিকেটে ৪৮তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি এসেছিল আগেই। তারপর শচীনকে ধরার জন্য অনেকদিন অপেক্ষায় ছিলেন কোহলি। বিশ্বকাপেই দুইবার সুযোগ পেয়েছিলেন শচীনকে ছোঁয়ার। এবার কি পারবেন? আপনার মতোই আশা নিরাশার দোলাচলে ছিল গোটা ইডেন। জন্মদিনে কি খালি হাতে ফেরাতে পারে ক্রিকেটের নন্দনকানন! ইডেন সব উজার করে দিল। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজের ৪৯তম সেঞ্চুরি পেলেন কোহলি। ভারতের ইনিংসের ৪৯তম ওভারে কাগিসো রাবাদার বলে সিঙ্গেল নিয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ করলেন এই ব্যাটিং সেনসেশন। ছুঁয়ে ফেললেন শচীনের গড়া রেকর্ডকে। বহু আগে থেকেই বিশেষজ্ঞরা ভবিষ্যৎবাণী করে রেখেছিলেন। তা রবিবার বাস্তব রূপ পেল। শচীন অভিনন্দন জানিয়েছেন কোহলিকে। শুভকামনা জানিয়েছেন পরবর্তী সেঞ্চুরির জন্য। সেই সঙ্গে শুরু হয়েছে বিশেষজ্ঞদের চুলচেরা বিশ্লেষণ। কোন জায়গায় এখনও পার্থক্য থেকে গেল দুজনের?

বিশ্বের প্রথম কোন ক্রিকেটার হিসাবে প্রথম ৪৯টি সেঞ্চুরি করতে সক্ষম হয়েছিলেন শচীন তেন্ডুলকর।বিরাট কোহলি এখন একাসনে বসে থাকলেও তিনি এই রেকর্ড গড়ার ক্ষেত্রে সব সময় দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসাবেই পরিগণিত হবেন। যতবারই এই রেকর্ড নিয়ে আলোচনা করা হোক না কেন বারবার শচীন তেন্ডুলকরের নাম মুখে আনতেই হবে সকলকে। শচীনকে নিজের কেরিয়ারে ৪৯ টি সেঞ্চুরি করার জন্য ৪৫২টি ওয়ান ডে ইনিংস খেলতে হয়েছিল। সেই জায়গায় একই রেকর্ড গড়তে বিরাট কোহলিকে খেলতে হলো মাত্র ২৭৭টি ইনিংস। অর্থাৎ অনেক কম ইনিংস খেলেও বিরাট কোহলি এত বড় একটি রেকর্ড গড়ে ফেললেন। তবে শচীন প্রেমীদের বক্তব্য, সেই সময়কার ক্রিকেটের সঙ্গে এখনকার ক্রিকেটের অনেক পার্থক্য চলে এসেছে। সেঞ্চুরির তালিকার দিকে নজর রাখলে দেখা যাবে শচীন টেন্ডুলকারের যেমন এক দিবসীয় ক্রিকেটে ৪৯টি সেঞ্চুরি রয়েছে ঠিক সেই রকমই আবার টেস্ট ক্রিকেটেও রয়েছে ৫১টি সেঞ্চুরি। সব মিলিয়ে তার মোট সেঞ্চুরি সংখ্যা হল ১০০। কিন্তু আবার এই দিকে নজর রাখলে দেখা যাবে, এক দিবসীয় ক্রিকেটে বিরাট কোহলি খুব তাড়াতাড়ি ৪৯টি সেঞ্চুরি গড়তে সক্ষম হলেও টেস্ট ক্রিকেটে সেই ভাবে এখনো এগোতে পারেননি। এখনো পর্যন্ত তার টেস্ট ক্রিকেটে সেঞ্চুরির সংখ্যা ২৯ টি এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে একটি।

মোট সেঞ্চুরির সংখ্যা হল ৭৯টি। বিরাট কোহলির ৪৯ টি সেঞ্চুরি গড়ার পর তার সামনে আর কেউ নেই। সুতরাং তার সেঞ্চুরির হাফ সেঞ্চুরি করার জন্য প্রয়োজন আর মাত্র একটি সেঞ্চুরি। তিনি যদি এই রেকর্ড গড়ে ফেলতে পারেন তাহলে তিনি বিশ্বের প্রথম কোন ব্যাটসম্যান হিসেবে এক দিবসীয় ক্রিকেটে সেঞ্চুরির হাফ সেঞ্চুরি করবেন।যে রেকর্ড টেস্ট ক্রিকেটে রয়েছে শচীন তেন্ডুলকরের। এক দিবসীয় ক্রিকেটে সেঞ্চুরির সংখ্যায় শচীন তেন্ডুলকরকে সহজেই বিরাট কোহলি ধরে ফেললেও বিরাট কোহলিকে ধরা এত সহজ নয়। কেননা বিরাট কোহলির পিছনে যারা রয়েছেন তারা অনেক পিছিয়ে রয়েছেন এবং অধিকাংশরাই অবসর গ্রহণ করেছেন। বিরাট কোহলির পিছনে রয়েছেন রোহিত শর্মা। যার রয়েছে ৩১টি সেঞ্চুরি। তারপর রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার রিকি পন্টিং।যার রয়েছে ৩০ টি সেঞ্চুরি। এরপর রয়েছেন অবসর প্রাপ্ত সনৎ জয়সূর্য এবং হাসিম আমলা। তাঁদের সেঞ্চুরির সংখ্যা যথাক্রমে আঠাশ এবং সাতাশ।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version