।। প্রথম কলকাতা ।।
Weather Update: লাল কমলা সতর্কতা। এবার বর্ষা দেখাবে অন্যরূপ। জলতাণ্ডবে অতিষ্ট হয়ে উঠবে জীবন। ফল ভুগবে ভারত বাংলাদেশ। আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় ঠিক কোন কোন মাসুল গুনতে হবে দুই দেশকে? ইতিমধ্যেই বন্যার আশঙ্কায় রয়েছে দুই দেশ। ভয়ঙ্কর হতে চলেছে এবারের বর্ষা। ঠিক কি বলছে আবহাওয়া দপ্তর?
যদি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কথা বলা হয়, তাহলে কিন্তু দক্ষিণবঙ্গে কিছুটা শান্তি। কিন্তু বড় ঝুঁকিতে রয়েছে উত্তরবঙ্গ। আগামী কয়েকদিন উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে সবথেকে বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বেশ কয়েকটি জেলায় জারি হয়েছে কমলা সতর্ক। আইএমডির সর্বশেষ আবহাওয়া বুলেটিন বলছে, একটি ঘূর্ণিঝড় উত্তর-পশ্চিম উত্তর প্রদেশ এবং তৎসংলগ্ন নিম্ন ও মধ্য স্তরে অবস্থান করছে। ইতিমধ্যেই বর্ষা তার তান্ডব দেখাতে শুরু করে দিয়েছে গুজরাতে। ডুবে গিয়েছে একাধিক এলাকা। জুনাগড়, জামনগর সহ প্রভৃতি এলাকায় অতিভারী বৃষ্টি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী আর স্থানীয় প্রশাসন একসঙ্গে উদ্ধার কাজ করছে। সব থেকে বেশি ভয়াবহ অবস্থা শহর এবং গ্রামাঞ্চলের নিচু এলাকাগুলোতে।
সব থেকে সমস্যার ব্যাপার হল, পূর্বাভাসের সঙ্গে আবহাওয়ার আচরণের মিল পাওয়া যাচ্ছে না। ভারতের মহারাষ্ট্র, দিল্লি, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ, উত্তর প্রদেশ, এবং গুজরাতে অতীতের থেকে এবারে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অনেক বেশি। বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে সিকিম এবং আসামে। এছাড়াও হিমাচল প্রদেশ বিহারসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে তীব্র বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।
অপরদিকে সেই ঈদের দিন থেকেই বাংলাদেশে দিনভর বৃষ্টির জ্বালায় নাজেহাল ঢাকাবাসী। বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এই ভারী টানা বৃষ্টি এখনো এক সপ্তাহ চলবে। দেশটার বেশিরভাগ এলাকাতেই রাজ করছে মৌসুমী বায়ু। যদি বৃষ্টির পরিমাণ বাড়ে তাহলে কিন্তু আগামী কয়েকটা দিন আরো খারাপ হতে চলেছে। সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনার বহু এলাকার নিম্নাঞ্চল ইতিমধ্যেই প্লাবিত। উত্তরাঞ্চলেও ঠিক একই অবস্থা। সাধারণত জুলাই আর আগস্ট মাস বৃষ্টি বহুল মাস হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এবারের বর্ষার প্রথম থেকেই ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে। একে তো যানজটের সমস্যা রয়েইছে, তার উপর জল জমায় মানুষের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। তিস্তা সহ বেশ কয়েকটা নদীতে জলের পরিমাণ প্রায় বিপদ সীমার কাছে। প্লাবিত হয়েছে নদী সংলগ্ন নিম্নাচল, দ্বীপ চর আর চরের কিছু এলাকা। আবহাওয়ার হঠাৎ এমন খামখেয়ালিপনা কেন? কেনই বা বর্ষার শুরুতেই এই তাণ্ডব দেখাতে শুরু করে দিয়েছে? আসলে মৌসুমী বায়ুর অক্ষ বিস্তৃত হয়েছে পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ আর বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত। তাই ভারত এবং বাংলাদেশের উপর মৌসুমী বায়ু এখন বেশ সক্রিয়। তবে অবাক হবেন না। বৃষ্টির এই অপ্রত্যাশিত আচরণ কিন্তু শুধুমাত্র ভারত কিংবা বাংলাদেশে নয়। গোটা দক্ষিণ এশিয়া জুড়েই দেখা দিয়েছে। তাপপ্রবাহের রেশ কাটতেই অতি বর্ষণ আর বন্যার আশঙ্কায় ভুগছে দক্ষিণ এশিয়ার বহু দেশ। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের নদ নদীতে জলে প্রবাহ অনেকটা বেড়েছে। আবার উজান থেকেও নামছে ঢল। যদি এখনই যথাযথ প্রস্তুতি না নেওয়া হয় তাহলে বন্যা হলে বড়সড়ক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।
পরিস্থিতি খারাপ হলেও বৃষ্টি থেকে আপাতত এখনই রেহাই মিলছে না। বৃষ্টি জারি থাকলে ভয়াবহ আকার ধারণ করবে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই। সবে তো বর্ষা শুরু। তাহলে গোটা বর্ষায় কি হতে পারে ভারত বাংলাদেশের? এই মুহূর্তে সপ্তাহখানেক না কাটলে কিছুই বলা যাচ্ছে না।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম