।। প্রথম কলকাতা ।।
Mahatma Gandhi: ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তিনি। তাঁর জন্মদিনকে জাতীয় উৎসব (Gandhi Jayanti) হিসেবে পালন করা হয়। তাঁর অহিংস নীতি ও অসাধারণ নেতৃত্বের ক্ষমতা মানুষকে স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে জুড়েছিল। সকল ধর্মকে সমানভাবে দেখার, সকল ভাষাকে সম্মান করার, নারীর-পুরুষকে সমান মর্যাদা দেওয়ার উপর জোর দিয়েছিলেন। তাঁকে সর্বপ্রথম ‘জাতির পিতা’ বলে সম্বোধন করেছিলেন সুভাষ চন্দ্র বসু (Subhash Chandra Bose)। ১৯৪৪-এর ৪ জুন সিঙ্গাপুর রেডিও থেকে একটি বার্তা সম্প্রচারের সময় মহাত্মা গান্ধীকে (Mahatma Gandhi) ‘জাতির পিতা’ বলা হয়। ১৯৪৮-এর ৩০ জানুয়ারি তাঁকে গুলি করে হত্যা করেছিল নাথুরাম গডসে।
কিন্তু কেন এইরকম কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন গডসে? আর কেনই বা তাঁকে আটকানো সম্ভব হয়নি? ১৯৪৮-এর ওই ভয়াবহ দিন। ঘড়ির কাটায় তখন পাঁচটা বেজে পাঁচ মিনিট, পর পর তিনটি গুলি মহাত্মা গান্ধীর এফোঁড় ওফোঁড় চলে গেল। মুহূর্তের মধ্যেই যেন সবকিছু শেষ হয়ে গেল। মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন ‘জাতির জনক’। ভারতের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল। কিন্তু তিনি গান্ধী, তাই তাঁর অধ্যায় শেষ হয়েও হয়নি। মৃত্যুর এত বছর পরেও বাঙালির মনে রয়েছে তাঁর আদর্শ। বিদেশেও চর্চার বিষয়বস্তু তিনি। জানা যায়, দীর্ঘ পরিকল্পনা করে নাথুরাম গডসে সহ আরও পাঁচ জন তাঁর হত্যা করতে সক্ষম হয়েছেন।
সেদিন নতুন দিল্লির (New Delhi) বিড়লা হাউজের পেছনে একটি উঁচু লনে প্রার্থনার জন্য যাচ্ছিলেন গান্ধীজি, সঙ্গে ছিলেন তাঁর অনুরাগীরা। আর সেই সময় তাঁকে লক্ষ্য করে চালানো হয় গুলি। গডসেকে প্রথম ধরেছিলেন হার্বাট রেইনার জুনিয়ার, যিনি ছিলেন সেই সময় দিল্লিতে অবস্থিত আমেরিকান দূতাবাসের ভাইস কনসাল। ঘটনার পর তড়িঘড়ি গান্ধীজিকে বিড়লা হাউজে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আর সেখানেই কিছু সময় পরে তাঁর মৃত্যু হয়। তবে সেটা ষড়যন্ত্রকারীদের প্রথম হামলা ছিল না। তার আগে নাথুরাম গডসের দল একটি জনসভায় গান্ধীজিকে হত্যার চেষ্টায়, পরপর দু’টি গ্রেনেড ছুড়েছিল। কিন্তু তাতে সফল হয়নি। তাঁকে গুলি করা হয়েছিল একটি বেরেটা এম ১৯৩৪ পিস্তল দিয়ে।
১৮৬৯-এর ২ অক্টোবর গুজরাটের পোরবন্দরে জন্ম হয় তাঁর। ইংরেজিতে ভালো ছাত্র ছিলেন তিনি। গণিতে তেমন মাথা না থাকলেও, তাঁর হাতের লেখা ছিল বেশ সুন্দর। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁকে ‘মহাত্মা’ উপাধি দিয়েছিলেন। বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন তাঁর দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত ছিলেন। তিনি ছবি তোলা মোটেই ভালবাসতেন না। পাঁচবার নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন এই মানুষটি। কিন্তু পুরস্কার পাওয়ার আগেই হত্যা করা হয়ে তাঁকে। মৃত্যুর আগের মুহূর্তে তাঁর মুখে শোনা গিয়েছে, ‘রাম’। তাঁর শেষ যাত্রায় ১০ লক্ষের কাছাকাছি মানুষ হেঁটেছেন। ১৯৩০-এ আমেরিকার টাইম ম্যাগাজিন দ্বারা ‘ম্যান অব দ্য ইয়ার’ উপাধিতে ভূষিত হন তিনি। ১৯৪৭-এ ভারত যখন স্বাধীনতা পায়, তখন তা উদযাপনে তিনি হাজির ছিলেন না। সেই সময় রাজধানী থেকে হাজার হাজার দূরে বাংলার নোয়াখালীতে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যেকার সাম্প্রদায়িক হিংসা বন্ধ করতে অনশন করছিলেন। তিনি তাঁর জীবনে বারোটি দেশের নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তবে পরনে ধুতি আর গায়ে শাল জড়ানো এই মানুষটি ফুটবলের বিশাল ভক্ত ছিলেন। প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধা গান্ধীজিকে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম