।। প্রথম কলকাতা ।।
শিকেয় উঠলো পেট্রল ডিজেল? জি২০-র মঞ্চে জৈব জ্বালানির বাজিমাত। গ্লোবাল বায়োফুয়েল অ্যালায়েন্সের রোডম্যাপ বানালো ভারত। মাথায় বসে যুক্তরাষ্ট্রও, জৈব জ্বালানি নিয়ে বৈশ্বিক জোটের সদস্য বাংলাদেশ? দূরত্ব কাটিয়ে জৈব জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে হাত মেলালেন হাসিনা-বাইডেন। ইথানলেই ভরসা, মোদীর পাশে দাঁড়ালেন কারা? পেট্রোল ডিজেলের দিন শেষ? জৈব জ্বালানিকে শক্তি উৎপাদনের প্রধান মাধ্যম বানাতেই বড় উদ্যোগ ভারতের।
প্রথম দিনেই জি২০ সামিটের সাক্সেস লিস্টে জুড়ে গেল গ্লোবাল বায়োফুয়েল অ্যালায়েন্স। টেকসই জৈব জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোই গ্লোবাল বায়োফুয়েল অ্যালায়েন্সের প্রধান টার্গেট। যা উদ্ভিদ, শস্য, শ্যাওলা, খাদ্য বর্জ্য থেকে তৈরি হয়। বিভিন্ন ধরনের মায়োমাস থেকে বের করা হয়, সেটাই জৈব জ্বালানি। বেনিফিট অনেক। যাতে জুড়ে আছে ওপার বাংলা ও। জৈব জ্বালানিতে কার্বনের পরিমাণ কম থাকে। জৈব জ্বালানির ব্যবহার বাড়লে পেট্রল-ডিজেলের উপর গোটা বিশ্বের নির্ভরতা কমবে, কমবে পরিবেশ দূষণ। পরিবহন, হিটিং, বিদ্যুৎ উৎপাদন-সহ বিভিন্ন কাজে জৈব জ্বালানির ব্যবহার সম্ভব। আর সেই লক্ষেই অবিচল ভারত। জি২০-র মঞ্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইথানল সহ নানা জৈব জ্বালানীর ব্যবহার বাড়ানোর বিষয়ে জোর দিয়েছেন। শস্য, গুড়, পুরনো নিউজ পেপার, তুষ, ভুট্টার গাছ, আখের ছোবরা, বাতিল সুতো-তুলো, ধানের খড়, গাছের ছাল, সবজির পরিত্যক্ত অংশ এবং কচুরিপানাকে ইথানলের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। এই জৈব জ্বালানির সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রজেক্টে গতি আনতে হাত মিলিয়েছেন বাইডেন, হাসিনাও।
মোদী জোর দিয়েছেন ‘গ্রিন ক্রেডিট’ উদ্যোগে। ভারতের নেতৃত্বে গ্লোবাল বায়োফুয়েল অ্যালায়েন্স তৈরি হলেও, এই জোটে রয়েছে ১৯ টা দেশ, ১২ টা আন্তর্জাতিক সংগঠন। শক্তিক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তারে জিবিএ ভারতের ভূমিকাকে তুলে ধরবে বলে আশা বিশেষজ্ঞ মহলের। জৈব জ্বালানি ব্যবহারের জন্য নিজেদের মধ্যে প্রযুক্তি সহ লগ্নির আদানপ্রদান করবে জিবিএ তালিকা ভুক্ত দেশগুলো। জৈব জ্বালানি সংক্রান্ত বিভিন্ন নীতি, প্রয়োগের কৌশল, মান নিয়ন্ত্রণের মতো বিষয়গুলো যাতে সুনির্দিষ্ট করা যায়, সে বিষয়েও উদ্যোগ নেবে জিবিএ। আমেরিকা তো বটেই আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, কানাডা, ইটালি, দক্ষিণ আফ্রিকার পাশাপাশি বাংলাদেশ, সিঙ্গাপুর, মরিশাস, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, আইসল্যান্ড, কেনিয়া, গুয়ানা, প্যারাগুয়ে, শ্রীলঙ্কা, উগান্ডা, ফিনল্যান্ডের মতো দেশও জিবিএ-র প্রাথমিক সদস্য হতে আগ্রহ দেখিয়েছে। পাশাপাশি বিশ্বব্যাঙ্ক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম, ওয়ার্ল্ড এলপিজি অর্গানাইজেশন, ইউএন এনার্জি, বায়োফিউচার প্ল্যাটফর্ম, ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি ফোরাম, ইন্টারন্যাশনাল রিনিউয়েবল এনার্জি এজেন্সি, ওয়ার্ল্ড বায়োগ্যাস অ্যাসোশিয়েশনও জিবিএ-র অংশ।
এখন এই জোটের সদস্য দেশগুলো তরল ও বায়বীয় জৈব জ্বালানির মিশ্রণের অনুপাত বাড়ানোর জন্য কাজ করবে। বিশ্বের ইথানল উৎপাদনের ৮৫ শতাংশই হয় যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল এবং ভারতে। এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ৫৫ শতাংশ, ব্রাজিল ২৭ শতাংশ ভারত ৩ শতাংশ উৎপাদন করে। বর্তমানে আমাদের দেশের সব পাম্প ১০ শতাংশ ইথানল মানে ই১০ মিশ্রিত পেট্রোল বিক্রি করে। আর ২০২৫-২৬ অর্থবছরে দেশব্যাপী ই-২০ পেট্রোল চালুর লক্ষ্য নিয়েছে ভারত। এই ভাবেই ভারতে আস্তে আস্তে দূষণ কমাতে প্রচলিত জ্বালানির জায়গা দখল করবে জৈব জ্বালানি। আর প্রতিবেশী বাংলাদেশেও জৈবজ্বা লানির ব্যবহার বয়ে আনবে সুফল, মত বিশেষজ্ঞদের।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম