।। প্রথম কলকাতা।।
Alipore Museum: ২১ ফুটের লাল রংয়ের দীর্ঘ পাঁচিল। এক সময়ের আলিপুর সেন্ট্রাল জেল এখন ‘আলিপুর জেল মিউজিয়াম’। কত দীর্ঘশ্বাস, কত শোকের সাক্ষী ওই দেওয়ালগুলি। ফাঁসির মঞ্চে কান পাতলে সেই আর্তনাদ শোনা যাবে। এই সংশোধনাগারের মধ্যেই একসময় আটক ছিলেন নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু, চিত্তরঞ্জন দাস, জওহরলাল নেহরু বিধান চন্দ্র রায়ের মত আরো কতজন!কেমন ছিল তাঁদের কুঠুরি? কীভাবে থাকতেন তাঁরা? যার প্রতিটা দেওয়ালে ইতিহাস যেন কাঁদে।আলিপুর জেল মিউজিয়াম নিয়ে আজকের এই ভিডিও। প্রতিবেদনের সঙ্গে দেওয়া লিংকে ক্লিক করে দেখে নিন।
১৯০৬ সালে আদি গঙ্গার পাড়ে তৈরি হয়েছিল এই জেল। ব্রিটিশ রাজের শাসন ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে যে যখন গর্জে উঠেছেন, বার বার এই আলিপুর জেলের কালকুঠুরিতেই ঠাঁই হয়েছিল তাঁদের। এখানে ফাঁসিতে মৃত্যুবরণ করেছিলেন বিপ্লবী দীনেশ মজুমদার, দীনেশ গুপ্তেরা ফাঁসির মঞ্চটি কেও নতুন করে সাজানো হয়েছে। এই মিউজিয়াম এর ঢোকা থেকে বেরোনো পর্যন্ত নানা বোর্ড নজর কাড়বে। বিভিন্ন জায়গায় এই সংশোধনাগারের স্বাধীনতার আগে ও পরে কি অবদান। তার বিভিন্ন ইতিহাস লেখা রয়েছে। ভেতরে যে ওয়াচ টাওয়ার ছিল সেটিকেও মেরামত করা হয়েছে। লাগানো হয়েছে বাহারি আলো।
যে সব ঘরে বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামীরা বন্দি ছিলেন সেইসব ঘরগুলিকে হেরিটেজ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। আলিপুর জেলের মূল আকর্ষণ হল সেই সেল যেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের রাখা হয়েছিল। অনেকটা আন্দামান ও নিকোর দ্বীপপুঞ্জের সেলুলার জেলের মতন অনুভূতি পাবেন। হেরিটেজ ঘোষণা হওয়ার পর ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে এখানে আর কোনও আবাসিককে রাখা হয় না। ২০২২ সালে সরকারি উদ্যোগে এই জেল রূপান্তরিত হয় মিউজিয়ামে।
ব্রিটিশবিরোধী নেতাদের বন্দি রাখা ও ফাঁসি দেওয়ার জন্য কলকাতার আলিপুরে তৈরি করা হয় এই কারাগার। এর আগে ছিল লালবাজার ও হরিণবাড়ি জেল। ১৮৮১ সালে জেল দুটিকে একসাথে করে তৈরি করা হয় বড় একটি কারাগার। যার নাম দেওয়া হয় ময়দানের জেল। এর আগে ১৮৬৪ সালে তৈরি হয় আদি আলিপুর জেল। এ সময় প্রেসিডেন্সি জেল হিসেবে ব্যবহৃত হতো ময়দানের জেল। পরবর্তীতে ১৯০৬ সালে আদি গঙ্গার পাড়ে নতুন করে তৈরি করা হয় বর্তমান আলিপুর জেল।
এখানে অন্যতম আকর্ষণ ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো’। ডিজিটাল এই লাইট অ্যান্ড সাউন্ড সিস্টেম বা আলো এবং শব্দের দিয়ে নিপুণভাবে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে স্বাধীনতা সংগ্রামের নানা ঘটনা, ব্রিটিশদের অত্যাচার। স্বাধীনতা আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। শো চলাকালীন সময় তৈরি করা হয় গা ছমছম করা এক পরিবেশ। যা দেখলে ও শুনলে কিছুক্ষণের জন্য হারিয়ে যেতে হয় সেই ব্রিটিশ-ভারত যুগে।
https://www.facebook.com/100082942485331/posts/418194690955277/?mibextid=NTRm0r7WZyOdZZsz
প্রায় ৪০ মিনিটের এই লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো। এই লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শোয়ে প্রবেশ মূল্য ১০০ টাকা পাশাপাশি আলিপুর মিউজিয়ামে ঢোকার জন্য প্রবেশ মূল্য ৩০ টাকা। তবে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিনামূল্য প্রবেশ করার সুযোগ এই মিউজিয়ামের ভেতরে। আপনি চাইলেই সারাদিন এই মিউজিয়ামের ভেতরেই কাটাতে পারবেন। ভেতরেই আছে খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা। কফি হাউস থেকে শুরু করে ফুড জোন রয়েছে। সবমিলিয়ে ইতিহাসের স্বাদ নিতে ঘুরে আসতেই পারেন আলিপুর মিউজিয়ামে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম