।। প্রথম কলকাতা ।।
Expiry Date of Medicines: ওষুধের (Medicines) গায়ে লেখা থাকে এক্সপায়রি ডেট (Expiry Date)। এই কথাটা নিয়ে মানুষের মনের নানান প্রশ্ন। অনেকে মনে করেন, এক্সপায়রি ডেট পেরিয়ে যাওয়ার পর যদি সেই ওষুধ খাওয়া হয়, তাহলে তা বিষের সমান। ধরুন যে ওষুধের এক্সপায়রি ডেট (Expiry Date) ২০২৩ এর জানুয়ারি মাস, সেই ওষুধ জানুয়ারির ৩১ তারিখ থেকে ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ যেতে না যেতে একদিনের মধ্যে কীভাবে বিষাক্ত হয়ে ওঠে? নাকি আদৌ এমন কিছু নয়? অনেকে মনে করেন, এক্সপায়রি ডেট পেরিয়ে যাওয়া মানে সেই ওষুধের (Medicines) আর কোন গুণ নেই। সেই ওষুধ খেলে কোন কাজে আসবে না। এই ধরনের ধারণা একটু ভুল।
‘এক্সপায়রি ডেট’ কথার অর্থ
যে কোন ওষুধের গায়ে দেখবেন দুটো তারিখ থাকে। একটি হল উৎপাদনের তারিখ, আরেকটি ওষুধের মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ অর্থাৎ এক্সপায়রি ডেট। ওই তারিখের পর সেই ওষুধের গ্যারান্টি কিন্তু প্রস্তুতকারিক কোম্পানির উপর আর থাকবে না। আসলে ওষুধ মাত্রই নানান ধরনের উপাদান কিংবা রাসায়নিকের ব্যবহার করা হয়। সেই সমস্ত রাসায়নিক পদার্থের বিশেষত্ব যত দিন যায় ততই পরিবর্তন হয়। সাধারণত বাতাস, আদ্রতা, তাপের কারণে ওষুধের কার্যকারিতার পরিবর্তন ঘটতেই পারে। শুধু তাই নয়, পাশাপাশি দেখা দিতে পারেন নানান পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। যদি সেই ওষুধ খেয়ে মারাত্মক বিপদ ঘটে তাহলে ওষুধ কোম্পানির উপর দোষ পড়বে। আইনের ঝামেলা থেকে বাঁচতে ওষুধ কোম্পানি এক স্ট্র্যাটেজি ফলো করে। এক্সপায়রি ডেট পেরিয়ে যাওয়ার পর সেই ওষুধ খেয়ে যদি কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েন তার দায় কিন্তু ওষুধ কোম্পানি নেবে না।
‘এক্সপায়ারি ডেট’ এই শব্দ দু’টির মানে এক্সপায়ারি ডেট অব লাইসেন্স ফর মার্কেটিং দ্য পার্টিকুলার প্রোডাক্ট। অর্থাৎ মানে ওই নির্দিষ্ট দিনটিতে ওই সংস্থার ওই ব্যাচটির মার্কেটিং লাইসেন্স শেষ হয়ে যাচ্ছে। এর সঙ্গে ওষুধের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যাবার কোনও সম্পর্ক নেই। মার্কিন চিকিৎসা সংস্থা AMA ২০০১ সালে প্রায় ২২টি ওষুধের তিন হাজারটি ব্যাচ সংগ্রহ করে। তারপর সেগুলো পরীক্ষা করার পর প্রায় ৮৮ শতাংশ ওষুধের মেয়াদ প্রায় ৬৬ মাস বাড়িয়ে দেয় অর্থাৎ ওই ওষুধের কার্যকরী ক্ষমতা তখনও ভালো ছিল। অপরদিকে ১৮% ওষুধের মেয়াদ শেষ হওয়ায় সেগুলি বাতিলের খাতায় পড়ে।
কিন্তু কখনোই এই ভেবে মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া ওষুধ ব্যবহার করবেন না। কারণ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের দ্বারা প্রস্তাবিত এমন কিছু ওষুধ রয়েছে যার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে আর বিন্দুমাত্র ব্যবহার করা উচিত নয়। সেই তালিকায় রয়েছে ডায়াবেটিস রোগীদের ওষুধ। পাশাপশি এমন বহু ওষুধ আছে যেগুলি মেয়াদ শেষ হওয়ার সাথে সাথে নষ্ট হতে শুরু করে। একই ভাবে রক্ত, ভ্যাকসিন কিংবা হৃদরোগীদের ক্ষেত্রেও মেয়াদ পেরোনো ওষুধ ব্যবহার করা উচিত নয়। এছাড়াও ইনজেকশন, চোখের ড্রপ, সিরাপ এগুলিও মেয়াদ শেষ করার পর ব্যবহার করলে বিপদ হতে পারে। এক্সপায়রি ডেট পেরানোর পর সেই ওষুধ ভালো আছে কিনা তা ল্যাব টেস্ট করে বোঝা যায়। তাই এই ঝুট ঝামেলায় না গিয়ে মেয়াদ শেষ হলে সেই ওষুধ বাতিলের খাতায় রেখে দিন। মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর ওষুধ ব্যবহার করা উচিত নয়। আর যদি একান্তই করবেন বলে মনে করেন তাহলে অবশ্যই একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই ব্যবহার করবেন।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম