।।প্রথম কলকাতা।।
Floriculture business: বাগান সাজাতে গাঁদা ফুলের জুড়ি নেই। আবার ধর্মীয় এবং সামাজিক অনুষ্ঠানে গাঁদার মালা, ফুলের বহুল ব্যবহার অনেককেই ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতে এই ফুল চাষ অনেকেই উৎসাহিত করেছে। সহজেই চাষ করা যায়। আবার চাষের পর গাঁদা ফুল খুব কম সময়ের মধ্যে বাজারজাত করা যায়। ভাল আকার ও গুনমানের গাঁদা ফুলের চাহিদা রয়েছে সারা বছর। সব মিলিয়ে ধান আলুর বদলে বিকল্প চাষ হিসেবে লাভজনক এই ফুল চাষের কথা ভাবা যেতেই পারে। গাঁদা ফুলের বৃদ্ধি এবং ফুলের বিকাশের জন্য কিছুটা কম তাপমাত্রার প্রয়োজন।১৮-২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ফুলের জন্য আদর্শ।৩৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের ওপরে তাপমাত্রা গাছগুলির বৃদ্ধি কমিয়ে দেয়। ফুল আকারে ছোট হয়। ফুলের সংখ্যাও কমে যায়।
দোঁয়াশ মাটিতে গাঁদা চাষ ভালো হয়। এজন্য প্রথমেই জমিতে ভালোভাবে চাষ দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হবে। এরপরে প্রতি হেক্টরে ২০-২৫ টন পরিমাণে গোবর সার দিতে হবে। গাঁদা জন্মানোর দুটি সাধারণ পদ্ধতি হল বীজ এবং কাটিং।বীজ থেকে জন্মানো গাছগুলি লম্বা, জোরালো এবং ভারী হয়। জমির জন্য বীজ দিয়ে চাষ করাই ভালো।গাঁদা বীজ কালো রঙের।১-২ বছর পর্যন্ত তা ব্যবহার করা যায়।
৫-৭ দিনের মধ্যে বীজ অঙ্কুরিত হয়। বীজগুলি পাত্র, বীজ বাক্সে বা নার্সারি বেডে বপন করতে হবে। নার্সারি বেডগুলি খুঁড়ে ভাল পচা গোবর সার মিশিয়ে দিতে হবে।বীজ ছড়ানোর আগে পিঁপড়ে এড়ানোর জন্য মাটিতে কীটনাশক ছিটিয়ে দিতে হবে।বীজগুলি মাটির ওপরের স্তরে বপন করতে হবে। নার্সারি বেডগুলি পুরো সময়কালে ভিজে থাকতে হবে।বীজের পরিমাণ তার বিশুদ্ধতা এবং অঙ্কুরোদগমের হারের ওপর নির্ভর করে। সাধারণত গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে নার্সারিতে বৃদ্ধির জন্য একর প্রতি ২০০-৩০০ গ্রাম বীজ প্রয়োজন হয়। শীতে একর প্রতি ১৫০-২০০ গ্রাম বীজ প্রয়োজন হয়।বীজ ৫-৭ দিনের মধ্যে অঙ্কুরিত হয়।বীজ বপনের ৩-৪ সপ্তাহ পরে তা জমিতে রোপণের জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়।
গাঁদা চারা সহজেই রোপণ করা যায় এবং জমিতে স্থানান্তরের সময় এর মৃত্যুহার খুবই নগন্য। প্রতিস্থাপনের সময় এগুলিতে ৩-৫ টি পাতা থাকতে হবে। গাছ লাগানোর পর হালকা সেচ দেওয়া উচিত। গাঁদা ফুল চাষের জন্য প্রতি হেক্টর জমিতে ২৪ টন ভাল পচা গোবর চাষের আগে মিশিয়ে নিতে হবে। গাছ বসানোর পর এক সপ্তাহ পর এন পি কে সার দিতে হবে।অর্ধেক নাইট্রোজেন থাকতে হবে এবং পটাশ এবং ফসফরাস পরিপূর্ণ করে বেসাল ডোজ হিসাবে প্রয়োগ করা উচিত।নাইট্রোজেনের অবশিষ্ট পরিমাণ গাছ লাগানোর ৩০-৪০ দিন পর দিতে হবে।নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।
সপ্তাহে একবার বা প্রয়োজনমতো সেচ দিতে হবে। জমিতে যেন জল জমে না থাকে সেইদিকে খেয়াল রাখতে হবে। গ্রীষ্মে ৪-৫ দিনের ব্যবধানে ও শীতে ১০ দিনের ব্যবধানে সেচের প্রয়োজন হয়।বর্ষাকালে মাটির আর্দ্রতা অনুসারে সেচ দেওয়া উচিত।কুঁড়ি আসা থেকে ফুল সংগ্রহ পর্যন্ত নিয়মিত সেচ দিতে হবে। গাছ লাগানোর তিন সপ্তাহ পরে মাটি উল্টে পাল্টে দিতে হবে এবং তারপরে আবার এক সপ্তাহ পরে বা চারা গাগানোর এক মাস পরে তা করতে হবে। গাছের ডালপালা বাড়ানোর জন্য প্রুণিং করতে হবে। তাতে ফুলের উৎপাদন বাড়ে। চারা লাগানোর পর ফুল ফুটতে ৪০-৫০ দিন সময় লাগে। সকালে ফুল তোলা উচিত। ফুল তোলার আগে সেচ দিলে ফুলের মান ভালো থাকে।নিয়মিত ফুল তোলা হলে এবং শুকনো ফুল সরিয়ে দিলে ফলন ভালো পাওয়া যায়।একটি গাছ থেকে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০টি ফুল পাওয়া যায়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম