।। সুচিত্রা রায় চৌধুরী ।।
চিনের নাকের ডগা মঙ্গোলিয়া। সেখানে তেল নিয়ে হুলুস্থুলু বাধিয়ে দিল ভারত। ভারতের ‘হিরের নেকলেস’ রণকৌশলের ফাঁস বেজিংয়ের গলায়। বেজিংয়ের প্রতিবেশী দেশে নয়া দিল্লি যা বানালো সেটা অনেক অঙ্ক বদলে দেবে। সৌদি আরবকে এই একটা ক্ষেত্রেই ভারত ছাপিয়ে গেল।
কীভাবে এমন দুঃসাহসীক ঘটনা ঘটল জানুন
শুধু কি চিনই আগ্রাসন নীতি নিয়ে চলে নাকি না বলেই ভারতও এমন কিছু করছে যা শুনলে হতবাক হতে হয়৷ চিন থেকে মাত্র ১০০০ কিলোমিটারের মধ্যে ভারত রাশিয়ার তেল বেচবে। চিন তেলের বাজার ধসে পড়বে এবার নয়া দিল্লির নয়া স্ট্র্যাটেজিতে। সৌদি আরবকে টপকে দিয়ে ভারত এবার সবথেকে বড় বিশুদ্ধ তেলের সাপ্লাইয়ার হয়ে গিয়েছে। তাতে বাংলাদেশের লাভ কতটা এই প্রশ্নও উঠতে পারে। কিন্তু আজকের আলোচনা অন্য বিষয়ে, শুনে নিন এটা একমাত্র সম্ভব হয়েছে ইউরোপের দোকলাবাজির কারণে।
ভারতীয় শিল্পপতি আনন্দ মেহেরা তো বলেই দিলেন ইউরোপের এ চূড়ান্ত হিপোক্রেসি৷ (এসএস) রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা লাগিয়ে সেই তেলই এখন ভারতের কাছ থেকে ভালো দাম দিয়েই কেনা। কিন্তু ভারত এবার তৈল শোধনাগার বা ওয়েল রিফাইনারি খুলে ফেলল মঙ্গোলিয়ায়। চিন থেকে মাত্র ১২২৩ কিমি দূরে অবস্থিত ড্রাগনের দেশের প্রতিবেশী মঙ্গোলিয়া৷ ভারতের নজর এই দেশটা আজ থেকে নয়। কারণ ভারতের নিরাপত্তা হিরের নেকলেস স্ট্র্যাটেজির মেজর পার্ট হল মঙ্গোলিয়া।
কি এই হিরের নেকলেস জানাব তার আগে একটা তথ্য
২০১৫ সালে প্রথম ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গোলিয়া সফর করেছিলেন। ভারতের বিখ্যাত ইনফ্রা সংস্থা মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচারস লিমিটেড (MEIL) মঙ্গোলিয়ায় তেল শোধনাগার তৈরি করতে চলেছে। শোধনাগারটি প্রতিদিন ৩০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত তেল শোধন করার লক্ষ্যমাত্রার সেট করেছে। রাশিয়ার তেলের ওপর নির্ভর করে থাকা মঙ্গোলিয়া এবার ৭০ শতাংশ তেল এখান থেকেই পাবে।
ভারতের ওপর চরম নির্ভরতা তার মানে৷ চিনের ‘স্ট্রিং অফ পার্লস’ নীতি সমুদ্রের রাস্তায় ভারতকে ঘেরার কাজ। নয়া দিল্লির পাল্টা হিরের নেকলেস বা নেকলেস অব ডায়মন্ড নিয়ে বিশেষজ্ঞদের দাবি চিনের চালেই বাজিমাৎ করতে ভারত মহাসাগরে একের পর এক নৌসেনা ঘাঁটিতে পা জমাতে শুরু করে দিয়েছে নৌসেনা। ইরানের চাবাহার থেকে শুরু করে ওমানের ডুকুম হয়ে ভিয়েতনামের নৌসেনা ঘাঁটি। সর্বত্রই রণতরী পাঠিয়ে রেখেছে নয়াদিল্লি। এখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ পার্ট হল মঙ্গোলিয়া।২০২২ এর একটা রিপোর্ট বলছে মঙ্গোলিয়াতেও সেনা ঘাঁটি তৈরির বিষয়ে কথাবার্তা চলছে প্রতিরক্ষামন্ত্রকের। তাহলে এবার কি চিনের ঘুম ওড়াতে বন্ধু দেশে ছুঁচ হয়ে ঢুকে ভারতের ফাল হয়ে বের হওয়ার চেষ্টা?
এমনিতেই রাশিয়া এবং চিনের মধ্যবর্তী ‘বাফার দেশ’ মঙ্গোলিয়াকে বেজিং তারই অংশ বলে মনে করে তা নিয়ে একটা জবরদস্ত বিবাদ রয়েছে। কূটনীতি দিয়ে এবার কিভাবে ভারত নিজেদের বিস্তার বাড়ায় চিনের প্রতিবেশী দেশে সেটাই এখন দেখার৷
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম