।। প্রথম কলকাতা ।।
Adeno and Pneumonia: কলকাতা (Kolkata) জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল অ্যাডিনো ভাইরাস (Adeno Virus)। তার সঙ্গে এবার জুড়ল নিউমোনিয়া (Pneumonia)। অ্যাডিনো ভাইরাসের মাঝে হঠাৎ করে নিউমোনিয়ার দাপটে রাজ্যে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। বহু অভিভাবক সংক্রমণের কারণে শিশুকে স্কুলে পর্যন্ত পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন। কলকাতার বেশিরভাগ হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে আইসিইউ বেড পাওয়া যাচ্ছে না। সংক্রমণ নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। তার মাঝে নতুন করে আশঙ্কা তৈরি করেছে নিউমোনিয়া। ক্ষুদের শরীরে নিউমোনিয়া আর অ্যাডিনো ভাইরাস একসঙ্গে থাবা বসালে জটিলতা মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে। গত তিন দিনে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১০ জন শিশুর। যার কারণে উদ্বেগ বাড়াটা স্বাভাবিক। পরিস্থিতির সামাল দিতে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর হাসপাতালগুলোতে বিশেষ নির্দেশিকা জারি করেছে। যেসব শিশুরা সংক্রমিত হচ্ছে তাদের অধিকাংশের বয়স আট মাস থেকে এক বছর। উপসর্গ জ্বর, সর্দি, কাশি আর শ্বাসকষ্ট। নিউমোনিয়া আর অ্যাডিনো থেকে শিশুকে বাঁচাতে এই সময় বাড়িতে শিশুর একটু বিশেষ যত্ন নিন।
শিশুকে কীভাবে সাবধানে রাখবেন ?
- বিশ্বে প্রতি ৩৫ সেকেন্ডে একজন শিশু নিউমোনিয়াতে মারা যায়। যদিও সঠিক পদক্ষেপে এটি সহজেই রুখে দেওয়া সম্ভব। মূলত নিউমোনিয়া ছড়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি, কাশি থেকে। যদি মনে হয় কোন ব্যক্তির ঠান্ডা লেগেছে তাহলে তার থেকে শিশুকে দূরে রাখুন।
- বাচ্চাদের নাকে যেসব জীবাণু থাকে সেগুলি ফুসফুসে গিয়ে প্রদাহ তৈরি করতে পারে। সেই বিষয়েও খেয়াল রাখতে হবে।
- শিশুর অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে টিকা দিতে পারেন।
- শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য যথাযথ পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে। প্রচুর শক্তি সমৃদ্ধ খাবার দেবেন এবং শিশুকে বুকের দুধ পান করাতে হবে।
- এই সময় অভিভাবকদেরও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা জরুরি। হাঁচি বা কাশির সময় অবশ্যই মুখে রুমাল দেবেন। শিশুর গায়ে হাত দেওয়ার আগে আগে হাত ভালোভাবে সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে ধোবেন।
- শিশু যে জিনিসগুলি বেশি ধরে যেমন খেলনা, টেবিল প্রভৃতি সাবান জল দিয়ে নিয়মিত মুছে জীবাণুমুক্ত রাখার চেষ্টা করুন। যদি দেখেন কেউ ধূমপান করছে তাহলে সেই জায়গায় শিশুকে রাখবেন না।
- নিউমোনিয়ায় এমন এক সংক্রামক ব্যাধি যা খুব সহজে ফুসফুসকে আক্রান্ত করে এটি বায়ুবাহিত বলে হাঁচি কাশির মাধ্যমে ছড়ায়। শিশুর হাঁচি, কাশি হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এই সময় ভিড় এলাকা একটু এড়িয়ে চলুন এবং বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন।
কোন উপসর্গ দেখে সাবধান হবেন ?
মূলত নিউমোনিয়ার তিনটি লক্ষণ। জ্বর, কাশি আর শ্বাসকষ্ট। তার সঙ্গে থাকতে পারে বুকে ব্যথা। এক্ষেত্রে জোরে শ্বাস টানলে বুকে ব্যথা অনুভব হয়। নিউমোনিয়ার শুরুতে শুকনো কাশি দেখা দিল পরের দিকে কাশির সঙ্গে সর্দি থাকে। এমনকি সর্দির সঙ্গে রক্তও থাকতে পারে। পাশাপাশি অন্যান্য উপসর্গ হিসেবে রয়েছে মাথার যন্ত্রণা, বমি বমি ভাব, খিদে কমে যাওয়া, দুর্বল হয়ে পড়া, কাঁপিয়ে জ্বর আসা, ডায়রিয়া প্রভৃতি। এই উপসর্গগুলি দেখলে দ্রুত সতর্ক হন। অ্যাডিনো ভাইরাসের ক্ষেত্রেও ঠিক একই উপসর্গ। তীব্র জ্বর, সর্দি, কাশি, হাঁচি, শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি প্রভৃতি।
রাজ্যের হাসপাতালগুলির জন্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকা
- করোনার মতোই সব হাসপাতালকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
- পরিকাঠামো হবে যথাযথ।
- বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জেলা চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেবেন।
- প্রয়োজন হলে তবেই জেলা হাসপাতাল থেকে রেফার করা হবে।
- শ্বাসকষ্টের সমস্যা হলে হাসপাতালকে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করতে হবে।
- অক্সিজেন থেকে ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা সব ঠিক আছে কিনা সেদিকে নজর রাখবে প্রতিষ্ঠান।
সংকটজনক অবস্থায় শিশুকে রেফার করা যাবে না।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম