।। প্রথম কলকাতা।।
Azolla Cultivation : ধান চাষিরা সবসময়ই চিন্তাভাবনা করে থাকেন কীভাবে ধান চাষ করার জন্য মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করা যায়। এই উর্বরতা বৃদ্ধি করার জন্য একাধিক রাসায়নিক সার রয়েছে বাজারে। কিন্তু প্রাকৃতিক উপায়ে কীভাবে এই কাজটি সম্ভব ? এমন একটি জলজ ফার্ন রয়েছে যা ধান জমিতে চাষ করলে তার উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। খুব তাড়াতাড়ি জলের উপর একটা সবুজ আস্তরণ তৈরি করে অ্যাজোলা ( Azolla) । এই অ্যাজোলা চাষ ধানের জন্য খুব উপকারী বলে প্রমাণিত হয়েছে । আর অ্যাজোলায় নাইট্রোজেনের পরিমাণ অনেক বেশি থাকায় এটি মাটির উর্বরতা বাড়াতে সক্ষম।
* অ্যাজোলা কী?
অ্যাজোলা হল এক ধরনের ফার্ন যা জলের ওপরে হয়। মূলত নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুতেই এই ধরনের ফার্ন গুলিকে দেখতে পাওয়া যায় । এই অ্যাজোলা গাছের নিচে নীল ও সবুজ শৈবাল বা সায়ানোব্যাকটেরিয়া থাকে। এগুলি যখন জলের উপর জন্মায় তখন দূর থেকে দেখে মনে হয় কোন সবুজ চাদর বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
* অ্যাজোলা চাষের সুবিধা
১. অ্যাজোলা মূলত চাষ করা হয় ধান জমিতে নাইট্রোজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি করে মাটির উর্বরতা আরও বাড়িয়ে তোলার জন্য।
২. অ্যাজোলা যেকোনো বাজারজাত রাসায়নিক সারের বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারে । আর এটি চাষে খরচও অনেক কম।
৩. শুধুমাত্র জম কে উর্বর করার জন্যই নয় অ্যাজোলা দুগ্ধজাত পশুদের জন্য দারুন উপকারী। এটি দুগ্ধজাত পশুর একটি ভালো খাদ্য।
৪. এটি মাছের খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। এমনকি মশা তাড়ানোর ক্রিম তৈরি করার জন্য অ্যাজোলা ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
অ্যাজোলা চাষ করতে যে বিষয়গুলি মাথায় রাখা প্রয়োজন
১. এক্ষেত্রে পি এইচ তাপমাত্রা হতে হবে ৫.৫ থেকে ৭ এর মধ্যে।
২. যে জায়গায় তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস মত সেখানে ভালো ফলন হয় এর।
৩. কোন ঠান্ডা এলাকায় অ্যাজোলা চাষ করতে হলে প্লাস্টিক শিট দিয়ে সেটি ঢেকে দিতে হবে। তবে পর্যাপ্ত সূর্যালোক নেই এমন জায়গায় অ্যাজোলা চাষ করলে খুব একটা উপকার পাওয়া যায় না।
অ্যাজোলা উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ। একটি জলজ ফার্ন। এতে থাকে অ্যামিনো অ্যাসিড , লোহা, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম , পটাশিয়াম , ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ, খনিজ পদার্থ এবং ভিটামিন এ ও ভিটামিন বি ১২ থাকে। সারা বছরই এই অ্যাজোলা চাষ করা যায়। খরচ খুবই সামান্য এবং পদ্ধতি খুবই সহজ। সাধারণ সবুজ ঘাসের থেকে এর বৃদ্ধির হার অনেকটাই বেশি। কাঁচা বা শুকিয়ে দুই ভাবেই এটি পশু খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায় । অ্যাজোলার মধ্যে কোনরকম ক্ষতিকারক বা বিষাক্ত পদার্থ নেই। আর এটি সহজপাচ্য । গবাদি পশুরা এই অ্যাজোলা খেলে তাদের দুগ্ধ উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম