।। প্রথম কলকাতা ।।
Menstrual leaves: গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা স্পেনের। চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন দেখালেই মহিলা কর্মীরা পাবেন পিরিয়ড লিভ। গত বৃহস্পতিবার ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে স্পেনের পার্লামেন্টে একটি আইন পাস করানো হয়েছে। এই আইন অনুযায়ী পিরিয়ড লিভ বা ঋতুকালীন ছুটি পাওয়া যাবে। ১৮৫টি ভোটের মধ্যে ১৫৪ ভোটে জয়ী হয়ে পাস হয়েছে এই ঐতিহাসিক আইন। যদিও শুধু স্পেন নয়, বিশ্বের বহু দেশে এই নিয়ম চালু রয়েছে। ভারতেও নানান বেসরকারি সংস্থা মহিলা কর্মীদের এই ছুটি দিয়ে থাকে।
কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য মাসিক ছুটি কার্যকর করার জন্য বিশ্বজুড়ে দীর্ঘকাল ধরেই বিতর্ক চলছে। পিরিয়ড লিভ বলতে বোঝায় এমন এক ধরনের ছুটি যেখানে মহিলাদের মাসিকের সময় তাদের কর্মক্ষেত্র থেকে বেতন বা অবৈতনিক ছুটি নেওয়ার বিকল্প থাকতে পারে। পিরিয়ড মানেই গুরুতর অস্বস্তি ভাব, ব্যথা, মানসিক সমস্যাসহ অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয়। এমত পরিস্থিতিতে বিভিন্ন কর্মসংস্থান নারীদের অফিসে কাজ না করে বাড়িতে আরামদায়কভাবে থাকার অধিকার দেয়। তৃতীয় বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে এই মাসিকের ছুটির বিষয়টি নিয়ে প্রচুর বিতর্ক রয়েছে। অপরদিকেই ইন্দোনেশিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং তাইওয়ানসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কিছু দেশে মহিলাদের মাসিকের সময় ছুটি দেওয়া হয়।
ইন্দোনেশিয়া মাসিকের সময় মহিলা কর্মীদের দুই দিনের ছুটির অধিকার দিলেও তা অতিরিক্ত ছুটি নয়। জাপানে এই আইন কার্যকর হয়েছে প্রায় ৭০ বছর আগে। ১৯৪৭ সালের শ্রম স্ট্যান্ডার্ড আইনের ৬৮নং ধারা অনুযায়ী যদি কোন মহিলা মাসিকের সময় বিশেষভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন তাহলে তিনি ছুটির অনুরোধ করতে পারেন। দক্ষিণ কোরিয়ায় কোন মহিলা কর্মচারী মাসিকের সময় ছুটি না নিলে অতিরিক্ত বেতন পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তাইওয়ান কর্মসংস্থানে লিঙ্গ সমতা আইনের অধীনে মহিলাদের প্রতি বছর তিন দিনের পিরিয়ড ছুটি দিয়ে থাকে। জাম্বিয়াতে কোন মহিলা কর্মী মাসিক ছুটির নীতির অধীনে প্রতি মাসে একটি করে ছুটি নিতে পারেন, যা ‘মা দিবস’ হিসেবে পরিচিত। যদি কোন সংস্থা এই ছুটি প্রত্যাখ্যান করে তাহলে নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার অধিকার রয়েছে। ২০১৬ সালে ইতালিও এই মাসিক ছুটির ধারণা নিয়ে চিন্তাভাবনা করেছিল। আইন প্রণেতারা সেই বিষয়ে একটি বিলের প্রস্তাব করেন, যেখানে কর্মীদের চিকিৎসা শংসাপত্র বিচার করে সম্পূর্ণ বেতনের তিন দিনের ছুটির অনুমতি দেওয়ার কথা বলা হয়। যদিও পরবর্তীকালে আইনটি পাস হয়নি।
ভারতে পিরিয়ড লিভ
ভারতের মহিলাদের মাসিকের সময় ছুটি নেওয়ার কোন আইনি অবকাঠামো না থাকলেও বেশ কিছু বেসরকারি কোম্পানি মহিলা কর্মীদের এই সুবিধা প্রদান করে থাকে। ভারতের যে সমস্ত বেসরকারি সংস্থা মহিলাদের মাসিকের সময় ছুটি দিয়ে থাকে সেগুলি হল-
১. সুইগি (Swiggy)
২. কালচার মেশিন (Culture Machine)
৩. মাথ্রুভূমি (Mathrubhumi)
৪. ম্যাগজেটর (Magzter)
৫. ওয়েট অ্যান্ড ড্রাই (Wet and Dry)
৬. ইন্ডাস্ট্রি এআরসি (IndustryARC)
৭. জম্যাটো (Zomato)
৮. আইবিপণন (IVIPANAN)
৯. গোজুপ (Gozoop Online Pvt Ltd)
১০. হর্সেস স্টেবেল নিউজ (Horses Stable News)
১১. ফ্লাইমাইবিজ (FlyMyBiz)
১২. বাইজুস (Byju’s)
প্রায় ১০০ বছর মানুষের মধ্যে পিরিয়ড নিয়ে সাংঘাতিক ট্যাবু ছিল, তখন কেরালা এমন এক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যা সত্যি প্রশংসনীয়। সেই ১৯১২ সাল থেকে এরনাকুলামের ত্রিপুনিতুরার সরকারি একটি স্কুলে পিরিয়ডের সময় ছাত্রীদের ছুটি নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। এমনকি ছাত্রীরা বার্ষিক পরীক্ষার সময়ও পিরিয়ডের ছুটি নিতে পারে। মাঝে কেটে গিয়েছে প্রায় শত বছরের বেশি। সম্প্রতি ২০২৩ এর শুরুতেই কেরালা সরকারের উচ্চশিক্ষা দফরের অন্তর্গত সমস্ত প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের পিরিয়ডের ছুটি ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। পাশাপাশি উচ্চ শিক্ষার সঙ্গে জড়িত ছাত্রীরা মাতৃত্বকালীন ছুটির সুবিধাও পাবেন। কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য পিরিয়ডের ছুটির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছে বিশ্বের বহু করেছে। পিরিয়ডের সময় মহিলাদের প্রচন্ড যন্ত্রণা এবং অস্বস্তি ভাব কাজ করে। এমনকি বারংবার মুড সুইং হতে থাকে। এমত পরিস্থিতিতে শান্ত মনে অফিসের চেয়ারে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে কাজ করা সম্ভব নয়। শারীরিক অবস্থা বুঝে এই ছুটির দরকার রয়েছে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম