।। প্রথম কলকাতা ।।
Boka Rice: বিশ্বের সকল চাল উৎপাদনকারী দেশগুলির মধ্যে সবথেকে বৃহত্তম হল ভারতবর্ষ। এই দেশে প্রচুর প্রজাতির এবং প্রচুর পরিমাণে ধান চাষ করা হয়ে থাকে। ভারতে চাষ করা ধান (Paddy) সারা বিশ্ব জুড়ে খ্যাতি অর্জন করেছে। বর্তমানে বাসমতি চাল রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে ভারতের নাম সবার শীর্ষে আসে। এছাড়াও ভারতে চাষ করা হয় অন্যতম একটি বিশেষ জাতের ধান কালানামাক চাল (Kalanamak Rice)। এছাড়াও এক ধরনের ম্যাজিক ধান চাষ করা হয়ে থাকে এই ভারতে (India)। যেই ধানের চাল রান্না করার জন্য গরম জলের কোন প্রয়োজনই হয় না। বরং ঠান্ডা জলে খুব ভালোভাবে রান্না করা যায় ভাত।
শুনে নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছেন ? চাল ফুটন্ত জল ছাড়া ভাতে কীভাবে পরিণত হতে পারে ? অবাক হওয়াই স্বাভাবিক কিন্তু আমাদের দেশে এই ধরনেরই চাল জন্মায়। যা রান্না করার জন্য আপনাকে গরম জলের জোগাড় করতে হবে না। এই চালটি মূলত ভারতের আসামে (Assam) জন্মায়। এটি বোকা চাল (Boka Rice) বা ম্যাজিক রাইস নামেও পরিচিত। এই চাল সুন্দর গন্ধযুক্ত এবং স্বাদে অনন্য। মূলত বোকা ধান চাষ হয় আসামের কোকরাঝাড়, নলবাড়ি, বক্সা, ধুবড়ি, কামরূপ, বারপেটা এলাকা গুলিতে। এই ধান বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ বিহার ও উত্তর প্রদেশেও অল্পবিস্তর চাষ করা হচ্ছে। কিন্তু বোকা চাল রান্না করা খুব সহজ হলেও তা চাষ করা বেশ কঠিন । এই কারণে আধা একর জমিতে মাত্র পাঁচ বস্তা মত ধান উৎপাদন করা যায়।
এই ধান আসামে মূলত জুন মাসে বপন করা হয়। আর তারপর অক্টোবর মাসে এর ফসল পাওয়া যায়। বোকা ধান চাষ করে থাকেন আসামের পাহাড়ি এলাকায় বসবাসকারী আদিবাসীরা। এই চালের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এটি ওজন কমাতেও খুব সাহায্য করে। এছাড়াও ভরপুর ফাইবার এবং প্রোটিন রয়েছে বোকা চালে। এই চাল থেকে ভাত তৈরি করার জন্য আপনাকে ৫০ থেকে ৬০ মিনিট মত ঠান্ডা জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে। আর তারপর এই ভাত তৈরি হয়ে যাবে। আসামে এই ধরনের চাল দিয়ে নানান ঐতিহ্যবাহী খাবার তৈরি করা হয়। এছাড়াও বোকা চালের ভাত খাওয়া হয় গুড়, চিনি, দুধ এবং দই দিয়ে।
এই চালের সঙ্গে ইতিহাসের কিছু গল্প ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে। সময়টা তখন মুঘল আমলের। সেই সময় মুঘল সেনাদের হাত থেকে ভারতকে রক্ষা করার জন্য সৈন্যরা যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যস্ত। ভারতীয় সৈনিকদের জন্য এই চাল রেশন হিসেবে যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়ে যাওয়া হতো। বোকা চাল থেকে ভাত রান্না করতে যেহেতু কোনরকম সমস্যা হতো না তাই খুব সহজেই তাঁরা ভাত রান্না করতে পারতেন। যা তাদের শরীরের শক্তি জোগাতে সাহায্য করেছিল। কাজেই বলা যায় , ভারতের সোনালি ইতিহাসের সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে আসামের বোকা চালের।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম