।। প্রথম কলকাতা ।।
Arijit Singh: মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে জন্মেছেন অরিজিৎ সিং। চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে আজ তিনি সাফল্যের শিখরে। কিন্তু আজও তিনি ভোলেননি ভাগীরথীর পাড় জিয়াগঞ্জকে। নিজের জমানো টাকায় গরিব দুঃস্থ বাচ্চাদের জন্য স্কুল গড়েছেন।
আর অরিজিতের স্কুলে মিউজিকের ক্লাস হবে না তা কী হয়! সেখানে ছেলেমেয়েদের তালিম দেবেন কলকাতার রোহিত রায়। বছর ২৪-র এই শিল্পীকে ঠিক কোন কারণে এতো পছন্দ অরিজিতের ? ঘরে কাজ হচ্ছে তাই বসতে কষ্ট হতে পারে। এক অচেনা মানুষের কাছে নিজে ক্ষমা চেয়ে নেন অরিজিৎ। কোনও কিছু না ভেবেই তাঁর সম্পর্কে যত জানা যায় ততই মুগ্ধ হতে হয়। বহরমপুরে একটা শো যেন জীবন পাল্টে দিল রোহিতের। অরিজিতের সাথে কাটানো সব মুহুর্ত স্বপ্নের মতন। রোহিত সেই অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন প্রথম কলকাতার সঙ্গে
অরিজিৎ সিং শুধু গানের জন্য বিখ্যাত নয়! তাঁর দরাজ হূদয় দিয়েও জিতে নিয়েছেন বহু মানুষের মন। আপনারাই বলুন না! বড় মন না থাকলে! দুঃস্থ বাচ্চাদের কথা ভেবে স্কুল তৈরির জন্য কেউ নিজের পারিশ্রমিক জমিয়ে রাখে। তাও আবার এখনকার দিনে! যে সময় মানুষ নিজের স্বার্থ ছাড়া কিচ্ছু বোঝে না। স্টেজে পারফর্ম করতে যে টাকা নেন কিন্তু সেই সবটাই যায় স্কুলের কাজে। গরিবদের সাহায্যে। অরিজিতের স্কুলে পড়াশোনার পাশাপাশি গরিব ছেলেমেয়েদের মিউজিক ক্লাস করানোর ব্যবস্থা করছেন গায়ক নিজেই। আর এটাই স্বাভাবিক। লাইমলাইট থেকে দূরে থাকতেই ভালোবাসেন অরিজিৎ। যার গানের নেশায় গোটা দুনিয়া মাতাল হয়ে যায় তার বানানো স্কুলে ছোট ছোট পড়ুয়ারা সুর চিনবে না তা কী হয়!
জিয়াগঞ্জের ছেলেমেয়েদের যাতে নানা বাদ্যযন্ত্র শিখতে বাইরে না যেতে হয় সেই জন্য এই ভাবনা অরিজিতের। আপাতত তাই গান নয়, শুধু বাদ্যযন্ত্র দিয়ে তালিম শুরু। নিজের পছন্দ করা অসম্ভব গুণী এক শিল্পীকে মিউজিক টিচার হিসেবে বেছে নিয়েছেন অরিজিৎ। আর সেই শিক্ষক হচ্ছেন টালিগঞ্জ রানি কুঠির বাসিন্দা রোহিত রায়। কলকাতা থেকে অরিজিতের ডাকে রোহিত সুর, তাল চেনাতে যাবেন জিয়াগঞ্জে। ২৪ বছরের এই ছেলেকে ভীষণ পছন্দ অরিজিতের। মোট ১১ টি বাদ্যযন্ত্র বাজাতে জানেন রোহিত। তবলা, গিটার ম্যান্ডোলিন, ব্যঞ্জো আরও কত কী! ছোট থেকেই বাড়িতে সঙ্গীতের আবহে বেড়ে উঠা নানা সময়ে বিখ্যাত সব গুরুর কাছে তালিম নিয়েছেন পড়াশোনার থেকে সুরের জগতে ডুবে থাকতেন রোহিত। সেই কঠোর পরিশ্রমের ফল হাতেনাতে
অরিজিৎ সিংয়ের স্কুলে ক্লাস নেবেন এ স্বপ্ন না সত্যি বিশ্বাই হচ্ছে না রোহিতের।
বহরমপুরে একটা শো করেতে গিয়েই অরিজিৎ সিংয়ের বাড়িতে যাওয়া। সেখান থেকেই সবটা শুরু। সেদিনটা যেন চোখের সামনে ভাসছে রোহিতের। প্রথম কলকাতাকে বললেন সেই অভিজ্ঞতা। প্রায় মাঝ রাতে অরিজিৎ সিং এর বাড়িতে গিয়ে পৌঁছন রোহিত। ওত রাতেও তখন সুরের যাদুকর রেকর্ডিংয়ে ব্যস্ত। স্ত্রী কোয়েল একটু বসতে বলেন। একটু বাদেই ঘরে আসেন অরিজিৎ কিছু বোঝার আগেই নিজেই রোহিতের কাছে ক্ষমা চান বসিয়ে রাখার জন্য। ঘরে কাজ হচ্ছে বলে একটু কষ্ট হতে পারে বলে মাফ চেয়ে নেন। অরিজিৎকে নিয়ে অনেক কিছুই শুনেছিলেন সেদিন চোখের সামনে যেন সবটা একে একে সত্যি হল। রোহিতের কথা শুনে, প্রতিভা জেনে জিয়াগঞ্জের নতুন স্কুলে রোহিতকে নানা বাদ্যযন্ত্র শেখানোর আবদেন জানান অরিজিৎ নিজেই।
মুম্বইয়ের কোটি কোটি টাকার ফ্ল্যাট ছেড়ে জিয়াগঞ্জেই থেকে গিয়েছেন। লোকগান শিল্পী পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছিলেন সন্তানদের কোনও নামী দামি স্কুলে নয়, বরং শান্তিনিকেতনে পড়াতে চান। নিজের বানানো স্কুলের ছোট ছোট বাচ্চাগুলোকেও সবদিক দিয়ে দক্ষ করতে চান অরিজিৎ। আসলে শিল্পী শিল্পের কদর জানে। আর সেখানে অরিজিৎ তো গানের জগতে সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র। ইতিমধ্যে রোহিতের ডাক পড়েছে মুম্বাইকেও। মুম্বাইয়ের বিখ্যাত কয়েকজন শিল্পী তারা চান রহিতের সাথে কাজ করতে। প্রায় ৩ মাসের মধ্যেই স্কুলে ক্লাস শুরু হয়ে যাবে। আপাতত দুটো করে মাসে ক্লাস নেবেন।অরিজিতের সঙ্গে এই বিশাল কর্মযজ্ঞে যুক্ত হয়ে গেলেন কলকাতার রোহিতও।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম