।। প্রথম কলকাতা ।।
এবার মহাকাশে যেতে পারবেন আপনিও, হাঁটতে পারবেন চাঁদ কিংবা মঙ্গলে, পরতে হবে বিশেষ পোশাক। কত খরচ জানেন? এই পোশাক বা স্পেস স্যুট কি দিয়ে তৈরি হয়? প্লাস্টিক কাপড় নাকি অন্যকিছু? কিভাবে কাজ করে মহাশূন্যে? যার মধ্যে থাকলে আপনি একদম নিরাপদ। শরীরের সব কাজ হবে স্পেস স্যুটের মধ্যেই। কিন্তু কোন ম্যাজিকে? স্পেস স্যুটের এই সিক্রেট জানলে অবাক হবেন।
একটা স্পেস স্যুটের দাম ২০০০ কোটি টাকা। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। অঙ্কটা মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো হলেও সত্যি। এই স্পেস স্যুটের এত দাম কেন? হাজার হাজার কোটি টাকা দিয়ে কেনই বা বিজ্ঞানীরা স্পেস স্যুট বানাচ্ছেন? স্পেস স্যুট যদি মহাকাশচারীর শরীরের সঙ্গে ফিটিংস না হয় তাহলে মহা বিপদ। আসলে এটা কোন বিশেষ পোশাক নয়, একটা ছোট্ট রকেট। যার মাধ্যমে মানুষ চাঁদে বা ভিনগ্রহে অবতরণ করবেন। সেই ব্যক্তির শ্বাস ক্রিয়া, শরীরের তাপমাত্রা থেকে শুরু করে সবকিছু ভারসাম্য রাখবে ওই পোশাক। তাই তো একে বলা হয় এক্সট্রাভেইকুলার মবিলিটি ইউনিট।
ইএমইউ পরেই মহাকাশচারীর রকেট থেকে বাইরে বেরোন, চাঁদ কিংবা অন্যান্য গ্রহে নেবে আনুষাঙ্গিক কাজ করেন। ১৯৭৪ সালে নাসা স্পেস প্রোগ্রামের জন্য প্রায় ১৮ টা এমন পোশাক বানিয়েছিল। তখন খরচ হয় প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিলিয়ন ডলার, যা আজকের বাজার দর অনুযায়ী প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। বানানো হয় ১৫ বছরের জন্য, যা এখনো ব্যবহার করা হচ্ছে। পরীক্ষা নিরীক্ষাসহ অন্যান্য কারণে অনেকগুলি নষ্ট হয়ে গেছে।
স্পেস স্যুটের দৈর্ঘ্য প্রায় পাঁচ থেকে ছয় ফুট পর্যন্ত। এর পিছনের দিকে দেখুন, একটা বড় বক্স রয়েছে। এটা ভীষণ দামি জিনিস। এটাই প্রাইমারি লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম। অক্সিজেন, কার্বন-ডাই-অক্সাইড, শরীরের তাপমাত্রা, প্রেসার সবকিছু ঠিক রাখার কাজ করে এই বক্স। এইটুকুর মধ্যেই সব হয়ে যায়। কি, আশ্চর্য হচ্ছেন তো। এই এত ভারি পোশাক পরে মহাকাশচারীরা কিভাবে হাত নাড়াচাড়া করেন ? কিভাবে কোনো জিনিস ধরেন ? মহাকাশচারীদের হাতে থাকে বিশেষ গ্লাভস। সেটা পড়ে কাজ করা খুব কঠিন। তিন লেয়ারের একটা স্পেস স্যুট বহন করা মুখের কথা নয়। এটা বুলেট প্রুফের থেকেও বেশি শক্তিশালী অথচ ফ্লেক্সিবল। শক্তিশালী না হয়ে উপায়ও নেই। কারণ মহাকাশে শূন্যতা, বিভিন্ন রেডিয়েশন, আর অরবিটার ডাস্টের খুব চাপ থাকে। একটু এদিক ওদিক হলেই মৃত্যু নিশ্চিত।
আপাতত নাসার কাছে মাত্র চারটে স্পেস স্যুট রয়েছে। ২০২৫ সাল পর্যন্ত নাসার বাজেট অনুযায়ী, এর পিছনে খরচ করবে প্রায় ৩.৪ বিলিয়ন ইউএস ডলার বা ৪০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু চারটে দিয়েই তো কাজ চলে যেত, তাহলে আবার এত টাকা খরচ করার দরকার কেন? জড়িয়ে রয়েছে মানুষের শখ আর প্যাশন। বিশ্বের বহু ধনী ব্যক্তি এখন মহাকাশে যেতে চাইছেন। চাঁদে পা হাঁটতে চাইছেন। পাড়ি দিতে চাইছেন মঙ্গলে। আর তাই ২০২৩ সালে স্পেস স্যুট নিয়ে এত হৈচৈ। ২০২৩ সালের স্পেস ট্যুরিজম অর্থাৎ মহাকাশে ভ্রমণ করার বাজেট প্রায় চার বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। আপনিও কি মহাকাশে ঘুরতে চান? তাহলে এখন থেকেই টাকা জমান। পকেট ভারি না হলে যাওয়া অসম্ভব।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম