।। প্রথম কলকাতা ।।
প্রয়োজন পরে না কোনও পাসপোর্ট। বিনা পাসপোর্টেই যেতে পারেন বিভিন্ন দেশে। কোন তিন ব্যক্তি জানেন? কেন তাঁদের এই সুবিধা দেওয়া হয়? বিশ্বে পাসপোর্ট ব্যবস্থা চালু হওয়ার ১০২ বছর পূর্ণ হল। যেকোনো দেশে পা রাখতে গেলেই প্রয়োজম পাসপোর্ট। প্রত্যেকের জন্যই ধার্য করা হয়েছে এই নিয়ম। সাধারন মানুষ তো দূর, দেশের রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন পরে একটি ডিপ্লোমেটিক পাসপোর্টের।
ভারত সাধারণত তিন রঙের পাসপোর্ট জারি করে। দেশের সাধারণ নাগরিকদের জন্য থাকে নীল রঙের পাসপোর্ট। উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা এবং মন্ত্রীদের আধিকারিকদের জন্য থাকে বিশেষ পাসপোর্ট। আর প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতির জন্য ডিপ্লোমেটিক পাসপোর্ট মেরুন রঙের হয়। আজ আপনাদের এমন তিন জন ব্যক্তির কথা বলবো যারা গোটা বিশ্ব ঘুরলেও প্রয়োজন পরে না কোনো পাসপোর্টের। তাঁদের পাসপোর্ট প্রসঙ্গে কোনো প্রশ্ন করা তো দূর। তার বদলে কোথাও গেলে বাড়তি আতিথেয়তা দেওয়া হয়। আর প্রোটোকল মেনে পূর্ণ সম্মানও দেওয়া হয়। সেই বিশেষ মানুষগুলির তালিকায় কারা রয়েছেন জানেন?
সেই বিশেষ ব্যক্তিদের মধ্যে একজন হলেন ব্রিটেনের রাজা। চার্লস ব্রিটেনের রাজসিংহাসনে বসার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর সেক্রেটারি নিজেদের দেশের বিদেশ মন্ত্রকের মাধ্যমে সমস্ত দেশে এই সংক্রান্ত বার্তা পাঠিয়ে দেন। জানানো হয় চার্লস যেহেতু এখন ব্রিটেনের রাজা, তাই তাঁকে সম্মানের সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াতের অনুমতি দেওয়া হোক।এতে যেন কোনও প্রতিবন্ধকতা না থাকে। পাশাপাশি প্রোটোকলের দিকেও বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। ব্রিটেনের রাজসিংহাসনে যখন চার্লসের মা, রানি এলিজাবেথ আসীন ছিলেন, তখন তাঁরও পাসপোর্টের প্রয়োজন হত না। তবে তাঁর স্বামী প্রিন্স ফিলিপকে নিজের সঙ্গে অবশ্যই ডিপ্লোমেটিক পাসপোর্ট রাখতে হত।
রাজা চার্লসের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম। চার্লস এই সুবিধা বা অধিকার পেলেও তাঁর স্ত্রী কিন্তু তা পান না। অন্য দেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর কাছে ডিপ্লোমেটিক পাসপোর্ট থাকা আবশ্যক। একই ভাবে রাজপরিবারের প্রধান ব্যক্তিদের কাছেও ডিপ্লোমেটিক পাসপোর্ট থাকতে হবে। তাঁদের যে কোনও দেশের বিমানবন্দরে যাওয়া-আসার পথ অবশ্য আলাদা।
দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ব্যক্তি হলেন, জাপানের সম্রাট ও সম্রাজ্ঞী জাপানের সম্রাট ও সম্রাজ্ঞী দুজনেই এই সুবিধা পেয়ে থাকেন। বর্তমানে জাপানের সম্রাট নারুহিতো এবং তার স্ত্রী মাসাকো ওয়াদা জাপানের সম্রাজ্ঞী। সম্রাট নারুহিতোর বাবা আকিহিতো সম্রাট পদ ছেড়ে দেওয়ার পর তিনি এই পদ গ্রহণ করেন। যত দিন আকিহিতো জাপানের সম্রাট পদে ছিলেন, তত দিন তাঁর এবং তাঁর স্ত্রীর পাসপোর্টের কোনও প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু এখন বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের ডিপ্লোমেটিক পাসপোর্ট রাখতে হয়।
জাপানের কূটনৈতিক নথি ঘেঁটে জানা যায় যে, ১৯৭১ সাল থেকে দেশের সম্রাট এবং সম্রাজ্ঞীর জন্য এই বিশেষ ব্যবস্থা শুরু করে সে দেশের বিদেশ মন্ত্রক। কিন্তু, বিশ্বের বাকি সমস্ত প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতি যখন এক দেশ থেকে অন্য দেশে যান, তখন তাঁদের ডিপ্লোমেটিক পাসপোর্ট সঙ্গে রাখতে হয়। তবে তাঁরা নানা সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। ইমিগ্রেশন বিভাগের কর্মকর্তাদের সামনে তাঁদের সশরীরে উপস্থিত থাকতে হয় না। এমনকী নিরাপত্তা পরীক্ষা এবং অন্যান্য পদ্ধতি থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে তাঁদের। ভারতের প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতি এই মর্যাদা পেয়ে থাকেন। কিন্তু ওই তিনজন বিশেষ ব্যক্তির প্রয়োজন হয়না কোনও পাসপোর্টের।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম